Opu Hasnat

আজ ২৬ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

মুমুর্ষ রোগীকে রক্ত দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিলেন পাইকগাছার ওসি আমিনুল খুলনা

মুমুর্ষ রোগীকে রক্ত দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিলেন পাইকগাছার ওসি আমিনুল

এবার মুমুর্ষ বৃদ্ধ রোগীকে রক্ত দিয়ে আবারও মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন পাইকগাছা থানার মানবিক ওসি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এ ধরণের মানবিক কাজের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন ওসি আমিনুল। এরআগে তিনি পূর্ণিমা ঋষি নামে ভিন্ন ধর্মের হতভাগিনী এক নারীর প্রভাবশালীর নিকট থেকে সম্পত্তি উদ্ধার, বিক্রি করা নব জাতককে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া ও আলোচিত বৃক্ষ মানবের যাতায়াতের পথের সুব্যবস্থা সহ অসংখ্য পরিবারকে অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত করে মানবিকতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এ ধরণের কাজের জন্য মানবিক ওসি হিসাবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। মানবিক কাজের পাশাপাশি আইন শৃংখলা রক্ষায়ও ওসি আমিনুলের যথেষ্ট দক্ষতা ও সুনাম রয়েছে। এর পাশাপাশি তিনি ভাল একজন কবি হিসাবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছেন। 

সর্বশেষ উপজেলার গড়ইখালী ইউনিয়নের পাতড়াবুনিয়া গ্রামের মৃত আহম্মদ মিয়ার হতদরিদ্র ছেলে বৃদ্ধ আব্দুল খালেক শেখ (৭৫) পোষ্টেট গ্লান এন্ড হার্ণিয়া রোগের চিকিৎসার জন্য গত শুক্রবার পৌর সদরের ফারিন হসপিটালে ভর্তি হন। সোমবার রাত ৮টার দিকে তাকে অপারেশন করলে রাত ১টার দিকে জরুরী রক্তের প্রয়োজন দেখা দেয়। এ সময় তার স্বজনরা এবি পজেটিভ রক্তের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন এলাকায়। এ গ্রুপের রক্তের কোন সন্ধ্যান না পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনরা। পরে একটি সূত্র থেকে জানতে পারেন থানার এক কনেস্টবলের রক্তের গ্রুপ এবি পজেটিভ। এ খবর শুনে পেরে রোগীর স্বজনরা জানতে পারেন জিরোপয়েন্ট নামক স্থানে ওই পুলিশ রয়েছে। রাত দেড়টার দিকে সংশ্লিষ্ট স্থানে গিয়ে শোনেন সেই কনেস্টবল প্রশিক্ষণের জন্য অনত্র রয়েছেন। এ সময় প্রতিদিনের ন্যায় পেশাগত কাজে জিরোপয়েন্টে অবস্থান করছিলেন, থানার ওসি আমিনুল ইসলাম। তিনি মুমুর্ষ রোগীর মর্মান্তিক অবস্থা ও তার সাথে মিলিয়ে যাওয়া রক্তের গ্রুপ জানতে পেরে সাথে সাথে ছুটে যান ফারিন হসপিটালে। এখানে নিজের শরীর থেকে বৃদ্ধকে রক্ত দিয়ে মানবিকতায় আবারও অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন ওসি আমিনুল। 

এ ব্যাপারে হসপিটালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট যুগোল সরকার জানান, এ ধরণের অপারেশনে প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয়। রোগীর স্বজনদেরকে রক্তের কথা বললে তারা কোথাও না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। পরে থানার ওসি রক্ত দিতে আসেন। বৃদ্ধের স্ত্রী ফাতেমা বেগম জানান, জরুরী মুহূর্তে রক্তের সন্ধ্যান না পেয়ে আমরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি। পরে আল্লাহর অশেষ রহমত থাকায় ওসি সাহেব রক্ত দিতে আসেন। একজন থানার ওসি এতটাই মানবিক হতে পারে এরআগে আমরা কখনো দেখিনি। এমন ওসি যদি দেশের প্রতিটি থানায় থাকতো তাহলে কোন রোগীকে রক্তের জন্য অসহায়বোধ করতে হতো না। 

ওসি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব জানান, ওসি হলেও আমি একজন মানুষ, আর মানুষ হিসাবে বিপদাপন্ন মানুষের পাশে এসে দাড়ানো আমার নৈতিক দায়িত্ব। আমি এর আগেও অসংখ্য মানুষকে রক্ত দিয়ে সহযোগিতা করেছি। তবে এখানে আসার পর এবারই প্রথম কাউকে রক্ত দিয়েছি। তিনি এ ধরণের মানবিক কাজের জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছেন।