Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

নির্বাচনে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থানে থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী চট্টগ্রাম

নির্বাচনে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থানে থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান বলেছেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনের আগে ও পরে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও অসামাজিক কার্যকলাপসহ দেশে যাতে কোন ধরনের  অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সে জন্য চলতি মাস থেকে আগামী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে  সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থানে থাকতে হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সড়ক, নৌপথ ও সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে মাদকের সাথে অস্ত্রের চালান আসতে পারে। বিভিন্ন ধরনের অপরাধের ঘটনাও বৃদ্ধি পেতে পারে। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ করার জন্য ও নজরদারি বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখতে  হবে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনে  মানুষ যাতে আনন্দের সঙ্গে ভোট দিতে পারে সে পরিবেশ তৈরি করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। অস্ত্র, চোরাচালান ও মাদক প্রতিরোধে পর্যাপ্ত চেকপোস্ট কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি মোবাইল কোর্টের অভিযান বৃদ্ধি করতে হবে। 

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের সভা, বিভাগীয় আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা, জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় সভা ও বিভাগীয় রাজস্ব সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের অফিস এই সভাগুলোর আয়োজন করেন।

তিনি আরো বলেন, সরকার ভর্তুকি দিয়ে বিদেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করছে। পেট্রোল পাম্প থেকে ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেল যাতে পাচার না হয়  সে বিষয়ে সীমান্তবর্তী জেলা প্রশাসকগণকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সীমান্তবর্তী এলাকার প্রশাসনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা সঠিক দায়িত্ব পালন করলে তেল পাচার বন্ধ হবে। 

অনুষ্ঠিত পৃথক সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত বিভাগীয়  কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন  সাহা, বিভাগীয় পরিচালক (স্থানীয় সরকার) দীপক চক্রবর্তী, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবুর রহমান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. নুরুল আলম নিজামী, চট্টগ্রাম  চেম্বারে সভাপতি মাহবুবুল আলম, বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আদিল চৌধুরী, ডিজিএফআই’র অধিনায়ক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল বশির আহমদ, কোস্টগার্ডের অধিনায়ক এস এম মঈন উদ্দিন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-মহাপরিচালক মো. সামছুল আলম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) চট্টগ্রাম  অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার, চোরাচালানরোধ, জঙ্গি-সন্ত্রাসী এবং চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশাকরি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অপরাধীরা আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। এ জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বয়ভাবে কাজ করতে হবে। 

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পরবর্তী সময়ে নগরীতে  যাতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি না হয় সে লক্ষ্যে পুলিশ সর্বোচ্চ নজরদারিতে থাকবে। ভোটাররা  নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে  তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। ভোটারদের ভয়ভীতি, ভোট কেন্দ্র দখল, জঙ্গী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চলবে না। মাদক, অস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ অভিযান অব্যাহত রযেছে। 

বিগত সভার সিদ্ধান্ত ও অগ্রগতি তুলে ধরেন বিভাগীয় কমিশনারের একান্ত সচিব ও সহকারী কমিশনার হাসান বিন মুহাম্মাদ আলী এবং সহকারী কমিশনার মো. জাকারিয়া। সভায় চট্টগ্রাম  বিভাগের  বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।