শাল্লায় শিশু যৌন নির্যাতনের অভিযোগে দপ্তরীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু সুনামগঞ্জ / 
সুনামগঞ্জের শাল্লায় শিশু শিক্ষার্থীর উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবশেষে তদন্ত শুরু করেছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা দ্বীন মোহাম্মদ।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় আনন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন তদন্তকারী কর্মকর্তাগণ। সেখানে যৌন নির্যাতনের শিকার ৪র্থ শ্রেণির ওই শিশু শিক্ষার্থী ও তার পিতা/মাতাকে উপস্থিত থাকার জন্য নোটিস দেয়া হয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নোটিস পেয়ে শিশু শিক্ষার্থীসহ তার পিতা/মাতা স্কুলে উপস্থিত হন।
নির্যাতিতা শিশুসহ তার পিতা/মাতাকে মৌকিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগও নেয়া হয়। আরো লিখিত নেয়া হয় প্রধান শিক্ষক অখিল চন্দ্র দাসের ও এসএমসির সভাপতি পান্ডব চন্দ্র দাসসহ অন্যান্যদেরও। আনন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা নিয়েও আলোচনা হয়। সরেজমিনে তদন্ত কর্মকর্তাবৃন্দ ঘুরে দেখেন। ওই স্কুলের দু’টি ভবন রয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ জায়গার উপরে। বাকি ২৪ শতাংশ জায়গাই দপ্তরীসহ তার আত্মীয় স্বজন স্থায়ী ঘরবাড়ি নির্মাণ করে রেখেছে। তবে জায়গা দখল ও শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগের ঘটনাটি প্রধান শিক্ষক অখিল চন্দ্র দাস জানলেও, না জানার ভান করছে এসএমসির সভাপতি পান্ডব দাসসহ অন্যরা। দপ্তরীর অসামাজিক কার্যকলাপ ও স্কুলের জায়গায় স্থায়ী বসতঘর নির্মাণকে তারা বৈধতা দিতে মরিয়া হয়ে উঠছে।
এ বিষয়ে শাল্লা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস বলেন সরকারি জায়গায় স্থায়ী ঘরবাড়ি বাধার কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরো বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের পরামর্শে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্কুলের বেশ কিছু কোমলমতি শিক্ষার্থী জানায় দপ্তরী গোপাল রায় তাদের ক্লাসও করায়। আবার ছিংলা দিয়ে বেত্রাঘাতও করে তাদের। নির্যাতিত শিশু শিক্ষার্থী তদন্ত কর্মকর্তাদের বলেন স্কুলে এলেই দপ্তরী তাকে তার ঘরে টেনে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে দপ্তরী ওই শিশুটির বাড়ি ফাঁকা পেয়ে শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড়ে রক্তাক্ত করে।
শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের বিষয়ে সহকারী কর্মকর্তা দ্বীন মোহাম্মদ বলেন তদন্তের পর দপ্তরীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে হবিবপুর ইউপির ২নং ওয়ার্ড সদস্য সুব্রত সরকার বলেন শিশু নির্যাতনের অভিযোগে আজ উপজেলা থেকে তদন্তের একটি টিম এসেছে। আমিও সেখানে উপস্থিত ছিলাম। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাগণ তদন্তে শিশু নির্যাতনের সত্যতা পেয়েছেন। তারা আশ্বাস দিয়ে গেছেন দপ্তরীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। তিনি আরো বলেন দপ্তরী যেখানে স্থায়ী বসতঘর নির্মাণ করেছে সেই জায়গা স্কুলের। কাজেই এই সরকারি জায়গা উদ্ধার করতে হবে। শিশুরা সেখানে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনসহ খেলাধুলার জায়গা পাবে। আমি উক্ত স্কুলের বাকি জায়গা উদ্ধার করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী রথীন্দ্র চন্দ্র দাস বলেন আমি দপ্তরী গোপাল রায়ের উপযুক্ত শাস্তি চাই। অন্যতায় আমি আদালতের স্মরণাপন্ন হবো।