Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

দামুড়হুদায় তিনটি ঝুকিপূণ সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করছে ভারি যানবাহন চুয়াডাঙ্গা

দামুড়হুদায় তিনটি ঝুকিপূণ সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করছে ভারি যানবাহন


চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় আটটি সেতু রয়েছে। এরমধ্যে  দামুড়হুদা উপজেলা সদরের ও ,রঘুনাথপুর,সেতুমাথাভাঙ্গা নদীর উপর কার্পাসডাঙ্গা ভৈরব নদীর উপর, বিষ্ণপুর,মেমনগর,গলায়দড়ি মাথাভাঙ্গা নদীর উপর, হেমায়েতপুর ও চারুলিয়া ভৈররব নীর উপর মোট আটটি সেতু। এর মধ্যে দামুড়হুদা উপজেলা সদরের মাথাভাঙ্গা নদীর উপর সেতু, গলাইদড়ি ষ্টিলের সেতু ও হেমায়েতপুর বরিক খালি খালের উপরের সেতু তিনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিনিয়ে প্রতিদিন শতশত ভারীযানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকিপূর্ণ এসকল সেতুর উপর দিয়ে। যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। দামুড়হুদা উপজেলা সদরের মাথাভাঙ্গা নদীর উপর নির্মিত সেতুর দুই পাশ্বের রেলিং কয়েক জায়গায় ভেঙ্গে রড বেরিয়ে যাওয়ার পর মেরামত করাহলেও ঝুকিপূর্ন চিহিৃত করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগর টগর একই স্থানে ডবল লেনের সেতুসহ ফুটপথ নির্মানের প্রতিশ্রæতির আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও শুরু হচ্ছেনা সেতু নির্মানের কার্যক্রম।

দামুড়হুদা–-মুজিবনগর সড়কের দামুড়হুদা সদরের মাথাভাঙ্গা নদীর উপর ১৯৮৭-৮৯ সালে ত্রান ও পূনর্বাসন অধিদপ্তরের অর্থায়নে দামুড়হুদা উপজেলা এলজিইডিইর সহযোগিতায় দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের তত্বাবধানে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থানপন করেন তৎকালীন সরকারের ত্রান ও পূনর্বাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।৭৯ লক্ষ ৩৫হাজার টকা ব্যায়ে নির্মিত সেতুটির নির্মান কাজ শেষ হয়  ১৯৯০সালে। ঐ বছরই ২৫০ফুট দৈর্ঘ্য ১২ ফুট প্রস্ত সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। দামুড়হুদার চিৎলায় রয়েছে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্যকম-প্লেক্স, ইব্রাহিমপুর মেহেরুন শিশুপার্ক,শীবনগর ডিসি ইকোপার্ক, আটকবর নামক স্থানে রয়েছে আট শহীদের স্মৃতি স্ত¢ম্ভ কম্প-প্লেক্স ভবন এছাড়াও ঐতিহাসিক মুজিবনগর যে স্থান থেকে দেশ স্বাধীনতার ঘোষনা দেওয়া হয়েছিল ও অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়েছিল।এই এলাকার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক। দামুড়হুদা-ভায়া কার্পাসডাঙ্গা, আটকবর, মুজিবনগর যাতায়াতের একমাত্র সড়কের দামুড়হুদা সদরের মাথাভাঙ্গা নদীর উপর নির্মিত সেতুটি উপর দিয়ে প্রতিদিন এসকল দর্শনীয় স্থান দেখার জন্য শত শত দর্শনার্থী ভারি যান বাহন বাস, ট্রাক, ট্র্যাক্টরসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ঝুকিপূর্ন সেতু উপর দিয়ে যাতাযাত করে থাকে। সেতুটির দুই ধারের রেলিং এর ঢালাই খসে পড়ে সম্পন্ন রডের উপর দুর্বল রেলিং দাড়িয়ে থাকায় সম্পতি সেগুলো সংস্কার করা হয়। দুই পাশের নাম ফলকের স্থানে  ভেঙ্গে পড়েছে। চওড়া কম হওয়ায সেতুর উপর একটির বেসি বাস ট্র্যাক যাতায়াত করতে পারেনা। সেতুটি প্রশস্থ্য না হওয়ায় প্রায়ই এখানে ছোট খাটো দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। একটি ট্র্যাক বা বাস উপর উঠলে দুই প¦াশে যান বাহনের লম্বা লাইন দিয়ে দাড়িয়ে থাকতে হয়। ফলে উক্ত স্থানে যেমন যান চলাচলের বিঘœ ঘটে তেমনি প্রারাই ছোট খাটো দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। 
     দামুড়হুদা উপ-সহকারী প্রকৌশলী খালিদ হাসান জানান, দামুড়হুদা মাথাভাঙ্গা নদীর উপর নির্মিত সেতুটির স্থলে ফুটপথসহ ডবল লেনের সেতু নির্মানের সমস্ত কার্য্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে শুধুমাত্র উদ্বোধনের অপেক্ষায় পালা। 
অপরদিকে দর্শনা-মুজিবনগর সড়কে মাথাভাঙ্গা নদীর উপর নির্মিত গলাইদড়ি স্টীলের সেতুটি মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে। বছর দেড়েক আগে পাটাতন ও নীচের গার্ডারের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়ায় কয়েকবার মেরামত করেও অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। বর্তমানে ঝুঁকি নিয়ে পারপার হচ্ছে শত শত ছোটবড় যানবাহনসহ হাজার হাজার মানুষ। ১৯৯৫ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ উপজেলার দর্শনা-মুজিবনগর সড়কে মাথাভাঙ্গা নদীর উপর গলইদড়ি ঘাটে স্টীলের বেইলি সেতু নির্মান করে। নির্মানের বছরই তৎকালীন সরকারের মাননীয় যোগাযোগ মন্ত্রী জনাব অলি আহম্মদ, বীর বিক্রম এ সেতুটির উদ্বোধন করেন। তখন থেকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। প্রশস্ততা কমহওয়ায় একটি বাস, ট্রাক বা অন্য কোন গাড়ী উঠলে অপরদিক থেকে আসা যানবাহনকে সামনের রাস্তার ধারে  দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বর্তমানে এটির উপর দিয়ে প্রতিদিন ৫-৬টি পরিবহন সংস্থার প্রায় অর্ধ শতাধিক ঢাকাগামী কোচ, আঞ্চলিক রুটের বাস, পণ্যাবহী ট্রাকসহ শত শত যানবাহন ও পথচারীরা চলাচল করে থাকে। যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ জেলার মানুষ বিভিন্ন যানবাহনযোগে এ সড়ক দিয়েই ঐতিহাসিক মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে যাতায়াত করে থাকে। বিশেষ করে ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক পরিক্ষা শেষ হলে মুজিবনগরে পিকনিক অথবা শিক্ষাসফর করার জন্য প্রতিদিন কয়েক শত বিভিন্ন ধরনের যানবাহনযোগে হাজার হাজার শিক্ষার্থী যাতায়াত করে থাকে। দর্শনা কেরু চিনিকলের মাড়াই মৌসুমে আখবোঝায় শত শত পাওয়ারট্রলি, ট্রাক্টর ইত্যাদি যাতায়াত করে। এছাড়াও এলাকার হাট-বাজার থেকে কৃষিপন্যসহ নানারকম মালামালভর্তি ট্রাক সেতুটির উপর দিয়েই ঢাকা, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। কয়েক বছর আগে ব্রীজটির পাটাতনের নিচের গার্ডারের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরার ফলে কয়েক স্থানে পাটাতন দেবে যায়। অভিযোগ পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগ বছর দেড়েক আগে সেসব স্থান মেরামত করে। সেইসাথে সেতুর দুই পাশে “ধীরে চলুন, সামনে ক্ষতিগ্রস্থ সেতু, ৫ টনের বেশি মালামাল বহন করা নিষেধ” লেখা সম্বলিত লাল রঙের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন এ সেতুটি দিয়ে মুজিবনগর, কেদারগঞ্জ, আটকবর, কার্পাসডাঙ্গা বাজার থেকে ১০ থেকে ২৫-৩০ টন পর্যন্ত ধান, ভূট্টা, কাঠ, পাটসহ বিভিন্ন মালামাল লোড করে ঝুঁকিপুর্ণ অবস্থায় ছোট-বড় ট্রাক ব্রীজটির উপর দিয়ে চলাচল করছে। যেকোন সময় অতিরিক্ত লোডের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ এ সেতুটি ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দীর্ঘদিনের পুরানো হোগলডাঙ্গা-আটকবর ভায়া মেহেরপুর যাতায়াতের  হোগলডাঙ্গা-ভগিরতপুর সড়কের হেমায়েতপুর বারিক খালি নামক স্থানের সেতুটি ও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে সেতুটির ডান পাশের রেলিং এর ঢালাই ভেঙ্গে পড়ে রডের উপর দাড়িয়ে আছে রেলিং  উভয় মুখে ভেঙ্গে পড়েছে তাছাড়াও উপরের অংশে নানা খানাখন্দে ভরে গেছে। ঝুকিপূর্ণ এর উপর দিয়ে প্রতিদিন শতশত ভারী যানবাহনসহ সাধারন মানুষ চলাচল করে থাকে এটিও যেকোন সময় ভেঙ্গেপড়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু গুলো দ্রæত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।