Opu Hasnat

আজ ২৬ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

নির্বাচনের আগে কোনো অসাংবিধানিক দাবি মানুষ মানবে না চুয়াডাঙ্গা

নির্বাচনের আগে কোনো অসাংবিধানিক দাবি মানুষ মানবে না

চুয়াডাঙ্গার ঐতিহাসিক টাউন ফুটবল মাঠে চুয়াডাঙ্গা ১৪ দলের আয়োজনে রোববার বেলা সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত হয় ১৪ দল আয়োজিত বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও ১৪ দলের সমন্বয়ক কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জননেতা মোহাম্মদ নাসিম এমপি।

বেলা চারটার দিকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি  সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুদের সভাপতিত্বে এ সমাবেশ শুরু হয়। বেলা ২টা থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন এবং গ্রাম থেকে জোটের নেতাকর্মীরা ¯েøাগান নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন। কর্মিসভার প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসে, তখন অশুভ একটি মহল ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের মতো ওই অশুভ শক্তি আবারও নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।’

‘নির্বাচনের আগে কোনো অবান্তব, অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক দাবি দেশের মানুষ মানবে না। কারণ তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে নির্বাচনে কারচæপির কোনো সুযোগ নেই’, যোগ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

নির্বাচনের আগে সংলাপের দাবি নাকচ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ১৪ দল অর্থহীন সংলাপের পক্ষে নেই। সংলাপের অর্থ হলো নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া এবং অসাংবিধানিক সরকারকে ক্ষমতায় আনা।’

গণফোরামের সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেনকে নীতিহীন মানুষ বলে অভিহীত করেন। তিনি বলেন ড. কামাল হোসেনকে বাংলার জনগণ কখনই ক্ষমা করবে না

তিনি বলেন ‘বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করাই বিএনপির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের করা মন্তব্যের জবাবে নাসিম বলেন, ‘দেশের জনগণের রায়ের মাধ্যমেই কেবল সরকার পরিবর্তন হতে পারে। কোনো দল বা মহল সরকার পরিবর্তন করতে পারবে না’, বলেন মন্ত্রী।

এ বিষয়ে নাসিম আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশকে যেভাবে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে, তাতে দেশের মানুষ আবারও আওয়ামী লীগকেই ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। সরকার বদলের বিএনপির স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।’ ১৪ দলের কর্মীদের, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কর্মীদের ঘরে বসে থাকার সময় এখন আর নাই। ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, এটা ২০১৪ সাল নয়, ১৮ সাল। তোমাদের মরণকাল এ বছরই হবে। বিএনপি-জামায়াত লোক ভাড়া করছে। পরিত্যক্ত, পলায়নকারীদের ভাড়া করছো। যাদের নীতি নাই, ঠিকানা নাই। পলায়ন করতে অভ্যস্ত, ওই নেতাদের ভাড়া করছে। খেলার মাঠে খেলোয়াড় ভাড়া করা যায়। রাজনীতি মাঠে নেতা ভাড়া করা হয় এটা প্রথম দেখলাম। ভাড়াটিয়া দিয়ে জয় করতে পারবে না। ভাড়াটিয়া দিয়ে কাজ হয় না। একজন বিদেশে বসে আর দুইজন দেশে বসে চক্রান্ত করছে।

জোটের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সাবধান থাকবেন। শেখ হাসিনা ও আমরা যখন ডাক দিব তখন কেউ ঘরে বসে থাকবেন না, ঘর থেকে বেরিয়ে আসবেন। ১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জ্বালাও-পোড়াও করেছে এবার হবে না। আমাদের ঐক্য দরকার। 

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় যেতে হলে নির্বাচনের বিকল্প নেই। নির্বাচনে জনগণের রায় মেনে নেবো। নির্বাচনের সময় প্রশাসনসহ সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। স্বাধীনভাবে কাজ করবে নির্বাচন কমিশন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত বিশ্বকাপে মেসি- নেইমার গোল করতে পারেন নি কিন্তু আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনা গোল করবেনই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসেন। খালি মাঠ চাই না, খেলে জিততে চাই। ফাউল করলে নির্বাচনে লাল কার্ড দেখাবে দেশের জনগণ। নির্বাচনে না এলে যত দফাই দিন, কোনও লাভ হবে না। এবার আমরা খালি মাঠে গোল দিতে চাই না। খেলে গোল দিতে চাই। দফা একটাই, নির্বাচন হবে। একদফা একদাবি, জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ।

জনসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারী এমপি, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক শিল্প মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিছুর রহমান মল্লিক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের কার্যকরী সভাপতি রবিউল আলম, গণ আজাদী লীগের সভাপতি এসএ সিকদার, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সাদাত হোসেন, সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের আহবায়ক রেজাউল রশিদ খাঁন, ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কার্য্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন।

সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা ১৪ দলের সমন্বয়ক, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি।