Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

ঝিনাইদহে পানিফল চাষে আশার আলো দেখছেন রফিকুল কৃষি সংবাদঝিনাইদহ

ঝিনাইদহে পানিফল চাষে আশার আলো দেখছেন রফিকুল

ঘরের টিনের চাল তৈরিতে যা আয় হচ্ছিল তা দিয়েই কোন রকমে চলছিল সংসার। কয়েক বছর আগেও কাজের অভাব ছিলো না। আয়ও ভালো ছিল। বর্তমানে কাজ কমে গেছে। ফলে দিন দিন আয়ও কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে ব্যয় বেড়েই চলেছে। সবমিলিয়ে এক প্রকার হতাশায় ভুগছিলেন রফিকুল (৪০)। ভাবছিলেন, এ কাজের পাশাপাশি অন্য কিছু একটা করে আয় বাড়াতে হবে। কিন্তু ব্যাবসা-বানিজ্য, প্রচলিত চাষাবাদ করতে কাড়ি কাড়ি টাকা লাগে। তাই স্বল্প সময়ে অল্প পুজি বিনিয়োগ করে আয়ের চিন্তা থেকেই শুরু করলেন পানি ফলের চাষ। ফল বিক্রি শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার ফল বিক্রি করেছেন। আরো দুই মাস ফল বিক্রি করা যাবে। তাতে কমপক্ষে আরো ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার ফল বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন। 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল জানায় তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার জাফরপুর গ্রামে। নিশ্চিন্তপুর গ্রামে স্ত্রী ও ৩ ছেলে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি। ১৩ ও ১১বছর বয়সী বড় দুই ছেলে পড়াশুনা করতে চাইতো না তাই তাদের পোল্ট্রি ও মিষ্টির দোকানে কাজে দিয়েছেন। ছোট ছেলেটির বয়স (৭) ওয়ানে পড়ে। 

তিনি বলেন, ‘সাতক্ষীরার নিম্নাঞ্চলে পানি ফলের চাষ হয় এটা আমার জানা ছিল। নতুন কোন কাজ করার চিন্তা থেকেই এ বছরের শুরুতে কালীগঞ্জে পানিফল চাষের চিন্তা মাথায় আসে। জুলাই মাসে কালীগঞ্জ শহরের মাহতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের পাশে ১৮ শতাংশ ডোবা জমিতে পানিফলের চাষ করি।’ 

রফিকুল জানান, তিনি সাতক্ষীরা থেকে ৩ টাকা দরে ২১’শ চারা গাছ কিনে ওই ১৮ শতাংশ জমিতে  রোপন করেন। লাগানোর ৩ মাস পরেই গাছে ফল আসে। গত মাসের শেষ সপ্তাহ ও এমাসের প্রথম সপ্তাহে প্রায় ৮ মণ পানিফল সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে ৮ হাজার টাকা আয় করেছেন বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান। ১৮ শতাংশ জমি থেকে আরো কমপক্ষে ২০ হাজার টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। স্থানীয় বাজারেই এ ফলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ফল বিক্রি কতে ঝামেলা হচ্ছেনা। প্রতি কেজি ২৫ টাকা দরে স্থানীয় ব্যাপারীদের কাছে ফল বিক্রি করছেন। 

তিনি আরো জানান স্থানীয় বাজার ছাড়াও বাইরে এ ফলের যথেষ্ঠ চাহিদা আছে। লাভজনক চাষ হওয়ায় আগামীতে ৪ থেকে ৫ বিঘা জমিতে পানি ফল চাষ করার ইচ্ছা আছে বলে তিনি জানান।