Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

ইবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা ক্যাম্পাস

ইবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

 ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বিষণ্ণতা ও অসুস্থতার কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।

শুক্রবার রাতে সাদ্দাম হোসেন হলের ২২৯ নাম্বার কক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। তাঁর বাড়ী সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার  বারাত গ্রামে তাঁর বাবার নাম আব্দুল মালেক গাজী ও মায়ের নাম রোকেয়া বেগম।

নাজমুলের বন্ধুদের সূত্রে জানা যায়,দুর্গা পূজার ছুটিতে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় নাজমুলের রুমমেটরা সবাই বাড়িতে চলে যায়। এর মধ্যে নাজমুল গত কয়েকদিন ধরে একা রুমে থাকতো।সে বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ্যতার মধ্যে ছিল। প্রতিদিন সে ১২টি করে ট্যাবলেট সেবন করতো এবং সবসময় বিষণ্ণতা ও হতাশার মধ্যে থাকতো। প্রেশার, হাপাঁনি ও চোখের নানা রোগে আক্রান্ত ছিল  বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ শুক্রবার সন্ধ্যায় নাজমুল  ফোন করে তার বন্ধু নাদিমকে রুমে আসতে বলে। নাদিম নাজমুলের রুমে গিয়ে রুম ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পায়। কয়েকবার ডাকার পরেও কোন সাড়া না পেয়ে সে রুমের দরজা ধাক্কা দেয়ার একপর্যায়ে পাশের রুমের কয়েকজন শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে রুমের দরজা ভাঙার চেষ্টা করে পরবর্তীতে দরজা ভেঙে রুমে ঢুকে তারা সিলিংয়ে ঝুলন্ত নাজমুলের গলায় ফাঁস দেওয়া নিথর দেহ দেখতে পায়। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার পরে  মেডিকেল সেন্টারে দায়িত্বরত  ডাক্তার বদিউজ্জামান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাজমুল গলায় ফাঁস দেওয়ার দুই ঘণ্টা আগে তার ফেসবুক আইডিতে একটা স্ট্যাটাস দেন  তা হলো
" একটা রিক্সা চাই শৈশব ও কৈশোর ফিরে যাওয়ার জন্য"

নাজমুলের বন্ধুদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সেই খুবই নম্র ও ভদ্র প্রকৃতির ছিলো, নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে সব সময় ভাবতো, অনেক পড়াশুনাও করতো, কিন্তু কেন যে এমনটা করলো ভাবতে পাচ্ছি না। এদিকে ক্যাম্পাসের সর্বত্র বিরাজ করছে শোকের ছায়া কেউ কেউ আবার সামাজিক মাধ্যমে জানাচ্ছেন মিশ্র  প্রতিক্রিয়া, 

 অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে  সাইকোলজিস্ট ও সাইকিয়াট্রিস্ট নিয়োগের জোর দাবী জানান। এবিষয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। সপ্তাহে একদিন প্রত্যেক শিক্ষককে  ৩ ঘন্টা কাউন্সিলিং  এর উদ্যোগ নেবার দাবি জানান কেউ কেউ।  কেউ বা আবার ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন অনেকে আবার শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর  রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,  বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা  অাত্মহত্যার  মত ঘটনা সত্যি বেদনাদায়ক, অামরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার শোকাহত। নাজমুলের  অবিভাবককে  সংবাদ দেয়া হয়েছে তার পরিবারের সদস্যদেরা আসলে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, এ নিয়ে গত ৬ মাসে ইবিতে ৪জন শিক্ষার্থী আত্নহননের পথ বেছে নিলো।