Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

সুব্রত’র ব্যতিক্রমী ধর্মীয় পাঠশালা কিশোরগঞ্জ

সুব্রত’র ব্যতিক্রমী ধর্মীয় পাঠশালা


কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার ৫নং দামিহা ইউনিয়নের নগরকূল গ্রামের শ্রীশ্রী রাধামদন গোপাল জিউর মন্দিরে সুব্রত নিজের একক প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছেন গীতা সাধনা সংঘ নামে একটি ব্যতিক্রমী পাঠশালা। এই পাঠশালায় প্রতি শুক্রবার দুই শিফটে পাঠদান দেয়া হয়। সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চার থেকে বারো বছর এবং ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তের থেকে বাইশ বছরের ছেলে-মেয়েদেরকে ধর্মীয় ও সামাজিকতা শিক্ষা দেয়া হয়। 

গত ০৭ অক্টোম্বর শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের নগরকূল গ্রামের শ্রী সুভাষ চক্রবর্তীর ছেলে বিবিএ অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র সুব্রত চক্রবর্তী। এলাকার সনাতন ধর্মের শিশু ও বয়স্কদের ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন বিগত তিন বছর যাবত। লেখাপড়ার পাশাপাশি পুরহিত্য করা সুব্রত চক্রবর্তী আগামীর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এগিয়ে যাচ্ছেন। 
এককভাবে নিজ উদ্যোগে ধর্মীয় চিন্তা-চেতনা এবং নৈতিকতা শিক্ষার ব্যাপক প্রচার-প্রসার করে কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সুব্রত চক্রবর্তীর সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, উপজেলার নগরকূল গ্রামে শ্রীশ্রী রাধামদন গোপাল জিউর মন্দিরে এলাকার আগত ভক্তবৃন্দের নিকট সুব্রত তার পাঠশালার ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করলে সকলেই সহযোগীতার আশ্বাস দেন। বাড়ি-বাড়ি ঘুরে সংগ্রহ করেন সনাতন ধর্মের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। প্রথমে ১০ জন নিয়ে শুরু হয় পথ চলা। সপ্তাহের একদিন অর্থাৎ প্রতি শুক্রবার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে ধর্মীয় ও সামাজিকতার উপর আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশ সংস্কৃত এবং পালি শিক্ষাবোর্ড ঢাকার অধীনে কাব্যতীর্থ ও স্মৃতিতীর্থ পাশ করা সুব্রতর পাঠশালায় ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমানে দুই শিফটে উক্ত পাঠশালায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮০ জন। শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন সুব্রত চক্রবর্তী। গীতা সাধনা সংঘ পাঠশালাটি পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে ১৩ জুলাই ২০১৮ খ্রি.। 

গীতা সাধনা সংঘ পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, আমাদের অঞ্চলে যেসব  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানে সংস্কৃত গীতা প্রশিক্ষণ, উপনিষদ্, পৌরানিক ও ভাগবতের উপর শিক্ষা দেয়া হয়না। যার ফলে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় এসব শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বাস্তব জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। তাই ছেলে-মেয়েদেরকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। তিনি আরো বলেন, প্রতি মাসের কোনো এক শুক্রবারে বয়স্কদের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে গোসাই এনে ধর্মীয় আলোচনার পাশাপাশি গীতা পাঠ শেখানো হয়। যদি সরকারি ও বেসরকারিভাবে পৃষ্টপোষকতা পাওয়া যায় তাহলে গীতা সাধনা সংঘটি আরো বহুদূর এগিয়ে যাবে বলে দাবি করেন।