Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

তাহিরপুরে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় এক সংখ্যালঘু গুরুতর আহত সুনামগঞ্জ

তাহিরপুরে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় এক সংখ্যালঘু গুরুতর আহত

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার খলাগাঁও বাজারে পাওনা টাকা নিয়ে দুই দর্জি টেইলারের মধ্যে কথা কাটাকাটির ঘটনায় সংখ্যালঘু এক দর্জি (টেইলার)কে লোহার রড় দিয়ে পিঠিতে গুরুতর আহত করেছে প্রতিপক্ষ দর্জি (টেইলারের) লোকজন। আহত টেইলারের নাম তপন সূত্রধর(৩২)। সে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের খলাগাঁও গ্রামের মানিক সূত্রধরের ছেলে। সে খলাগাঁও বাজারে টেইলারিংয়ের দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন। সে বর্তমানে আশংঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় আহত তপন সূত্রধরের শ্বশুর বিনোদ সূত্রধর বাদি হয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর খলাগাঁও বাজারে প্রতিপক্ষ হামলাকারী টেইলারিং ব্যবসায়ী কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার নাহিরাজ গ্রামের মোঃ ফজলুর রহমানের ছেলে মানিক মিয়া টেইলার, তার সহোদর আজিজুর রহমান, তার শ্যালক মাজহারুল ইসলাম ও খলাগাঁও গ্রামের আবু বক্করের ছেলে নাজিম উদ্দিনকে আসামী করে তাহিরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের পর থানার এস আই মোঃ মোস্তফা মিয়া সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে আসলেও ঘটনার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ মামলাটি আমলে নেয়নি। 

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার মাস পূর্বে হামলাকারী খলাগাঁও বাজারের টেইলার মোঃ মানিক মিয়ার সাথে অপর টেইলারিং ব্যবসায়ী সংখ্যালঘু তপন সূত্রধরের ব্যবসার লেনদেন এ কিছু পাওনা টাকা চাইতে যান। এতে প্রতিপক্ষ মানিক মিয়া গংদের সাথে তার কথা কাটাকাটি হলে এক পর্যায়ে মানিক মিয়া গংরা তাকে মারতে এগিয়ে আসলে খলাগাঁও বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোরশেদ আলম সাদ্দামসহ আশপাশ দোকানের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে উভয়পক্ষকে নিভৃত করে পরে স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিস্পত্তি করে দেয়া হয়।

কিন্তু গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় তপন সূত্রধর প্রতিদিনের ন্যায় টেইলারিং দোকানের কাজ সেরে খলাগাঁও নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে বাজারের পাশে রাস্তা তাকে একা পেয়ে ওৎপেতে থাকা প্রতিপক্ষ আসামী মানিক মিয়া, তার সহোদর আজিজুর রহমান, তার শ্যালক মাজহারুল ইসলাম ও নাজিম উদ্দিন গংরা তার গতিরোধ করে লোহার রড় দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে উপর্যূপুরি আঘাত করলে সে রক্তাক্ত অবস্থায় গুরুতর জখম হয়। তার চিৎকার শুনে বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোরশেদ আলম সাদ্দাম সহ বাজারের লোকজন ঘটনাস্থলে আসলে হামলকারীরা পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক রক্তাক্ত তপন সূত্রধরকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় রাতেই স্থানীয় তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে ভর্তি করা হয় এবং ওখানে চিকিৎসা চলাকালে তার অবস্থার আরো অবনিত হলে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সে বর্তমানে চিকিৎসাধীন থাকলেও তার অবস্থা গুরুতর বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এদিকে বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে হামলাকারীরা বিভিন্নভাবে তৎপরতা চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তার স্বজনরা।

এ ব্যাপারে খলাগাঁও বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন জানান, তপন সূত্রধরের উপর হামলার ঘটনা শুনে তিনিসহ বাজারের অনেক ব্যবসায়ী  ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে টাকা পয়সা দিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে পাঠিয়ে চিকিৎসার সমস্ত ভরণপোষন বহন করে যাচ্ছেন। ঘটনার আরো ৪ মাস আগে সামান্য কিছু পাওয়া টাকা চাইতে গিয়ে তপনকে মারধোরের প্রস্তুতি ও নিয়েছিল প্রতিপক্ষ মানিক মিয়া গংরা। কিন্তু তিনি নিজে উদ্যোগী হয়ে বাজার কমিটির সদস্যদের নিয়ে থকনকার বিষয়টি সালিশ বৈঠকে নিস্পত্তি  করা হয়। কিন্তু নিস্পত্তির ঘটনাটিকে পূণরায় মানিক মিয়া গংরা একটি নিরীহ সংখ্যালঘু মানুষকে এভাবে পিঠিয়ে রক্তাক্ত করার নজির নেই। তিনি বিষয়টি সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।  

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাহিরপুর থানার এস আই গোলাম মোস্তফা মারামারির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি নিস্পত্তিতে বাদিপক্ষের লোকজন সক্রিয় আছেন। তবে কতটুকু আঘাত করা হয়েছে তা মেডিকেল রিপোর্ট ছাড়া এই মুহুূর্তে তিনি আর কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ নন্দন কান্তি ধর জানান, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের অন্যান্য খবর