Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

কে এই বহুরূপী ফজলুল হক? ঝিনাইদহ

কে এই  বহুরূপী ফজলুল হক?

চুল ছোট ছোট। গোঁফ মোটা। ফিটফাট পোষাক। কখনো পুলিশ, কখনো আনসার, আবার কখনো বীরমুক্তিযোদ্ধা । পুলিশের বড় অফিসার হিসেবে অবসরে গেছেন এমন ভাব তার। পুলিশের উচ্চ পর্যায়ে তার নিকট আত্মীয়রা চাকরি করে বলেও প্রচার করে থাকে সে। শুধু তাই নয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে এ ব্যক্তি। 

আরো গুন রয়েছে তার, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো, বেনামা দরখাস্ত করা, পুলিশ ও র‌্যাবের ভয় দেখানো সহ নানা ভাবে নিরিহ মানুষকে ব্লাক মেইল করাই তার পেশা। বিআরটিএ অফিসে দালালি করার পাশাপাশি ভ্রাম্যমান মাদক বিক্রি করে আসছে ওই ব্যক্তি। বিআরটিএ অফিসে দালালি ও প্রতারনা করার দায়ে কয়েক দফায় কারাভোগ করতে হয়েছে তাকে। সুত্র বিআরটিএ অফিস। তবুও  থামেনি সে। আসলে সে কে? কি তার পরিচয়?

জানাগেছে, নাম তার ফজলুল হক। প্রকৃত বাড়ি কোথায়? তা কারো জানা নেই। জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়,  ঝিনাইদহ পৌরসভার লক্ষীকোল (বর্ষা ফিলিং স্টেশনের আশপাশে) এলাকার মৃত হাজের আলীর ছেলে সে। অন্য একটি সুত্র জানায় এ পরিচয় সঠিক নয়। শোনা যায় বাড়ি যশোরের কোন একটি উপজেলাতে। তবে দীর্ঘদিন ঝিনাইদহ জেলা শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করে আসছে সে। সুত্র মতে ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর ভ্রাম্যমান আদালতের নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেট জাফর সাদিক চৌধুরী তাকে ৭ দিনের কারাদন্ড প্রদান করেন। ওই দিন শৈলকুপা উপজেলার দুধসর গ্রামের ওমর আলীর ছেলে শহিদুল ইসলামকে অর্থদন্ড দেন ভ্রাম্যমান আদালত। স্থানীয় বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালিয়ে হাতে নাতে আটক করা হয় তাদের।

ঝিনাইদহ বিআরটিএ দপ্তরের সহকারী পরিচালক বিলাশ সরকার জানান,  ফজলুল  হক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দিয়ে থাকে। তিনি আরো জানান এ পর্যন্ত  ৪/৫ দফায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাকে। নানা পরিচয়ে সে বার বার বিআরটিএ অফিসে আসে বলেও জানান তিনি। গেলো কয়েক দিন আগে অফিসে একবার দেখেছেন বলেও জানান বিলাশ সরকার। তিনি আরো জানান অবৈধ কর্মকান্ড করবে না মর্মে জেলা প্রশাসকের কাছে মুচলেকা দিয়েছে সে। জেলা প্রশাসকের দপ্তরে বীরমুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়েছে, এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট সুত্র। বিআরটিএ অফিসের অন্য একটি সুত্র জানায় ভুয়া পুলিশ হিসেবে লোকজন চেনে তাকে।

অভিযোগ করা হয়েছে, ফজলু পারেনা এমন কোন কাজ নেই। তার অপকর্মে বাধা দিলে অপপ্রচার চালিয়ে নাজেহাল করতে ছাড়েনা সে। এমনকি মিথ্যা মামলা করার হুমকিও দিয়ে থাকে ফজলু। অসামাজিক ব্যবসার সাথে জড়িত ফজলু অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে নানা কৌশলে অর্থ আদায় করেছে এমন অভিযোগ করেছেন একাধিক ব্যক্তি। উচ্চস্বরে ডাক চিৎকার করে নাটক সৃষ্টিতে পারদর্শী ফজলু ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন তারা । প্রাপ্ত তথ্য মতে জেলা শহরের সিএন্ডবি পুকুর পাড়ের একটি ভাড়াবাড়িতে অসামাজিক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েক বছর আগে মারপিট করে তাকে তাড়িয়ে দেয় মহল্লাবাসি। সেই থেকে অন্যত্র থাকছে সে। তদন্ত করে তার আসল পরিচয় নিশ্চিত করাসহ গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসি।