Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

সুনামগঞ্জে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী অপহরণ, জাল জন্ম সনদে বিয়ে করার অভিযোগ সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী অপহরণ, জাল জন্ম সনদে বিয়ে করার অভিযোগ

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠইর ইউনিয়নের জগজীবনপুর গ্রামের মো গউছ উদ্দীনের মেয়ে জয়কলস উজানীগাঁও রশিদীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী পাপিয়া বেগম (১৫) কে অপহরণ করে তিন দিন ধরে বসত ঘরে আটকে রেখে জাল জন্ম সনদ দিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ। 

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, শনিবার রাত ১০ টায় পাপিয়া বেগম বসতঘর হতে বাহির হয়ে টয়লেটে যাওয়ার পথে শ্যামল মিয়া পাপিয়া বেগমের মুখে জোর পূর্বক গামছা চেপে তার ঘরে নিয়ে আটক করে রাখে। প্রায় আধঘন্টা পর পাপিয়া বেগমের মা সাফিয়া বেগম ঘরের বাহিরে টয়লেটে গিয়ে দেখেন পাপিয়া বেগম টয়লেটে নেই। তখন পাপিয়া বেগমের মা সঙ্গে সঙ্গে তার বাবাকে বিষয়টি বলার পর অনেক খোঁজা-খুঁজি করে তারা নিশ্চিত হন তাদের মেয়েকে শ্যামল মিয়ার ঘরে আটক করে রাখা হয়েছে। ঘটনার রাতেই পাপিয়া বেগমের বাবা ও বৃদ্ধ দাদী তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরকে ঘরে ঢুকতে দেননি জমির উদ্দীন লাটিয়াল বাহিনীরা। তাই মান সম্মানের ভয়ে নিরুপায় হয়ে সমাজের কাছে ন্যায় বিচার চান বাবা। এ বিষয়ে সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা প্রভাবশালী জমির উদ্দীনের কাছে বার বার যাওয়ার পরও পাপিয়াকে উদ্ধার করতে পারেননি তারা। পাপিয়া বেগম অপহরণের ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় খুন খারাপির ঘটনা ঘটতে পারে। 

এদিকে ওয়ার্ড মেম্বার জমির উদ্দীন কিশোর শ্যামল মিয়ার বাবার কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা খেয়ে তাকে ১৬ বছরের স্থলে  ২১ বছরের হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন সনদ দেন। এখন আবার কিশোরী পাপিয়া বেগমের ১৮ বছরের জন্ম নিবন্ধন সনদ ইউনিয়ন পরিষদ কার্য্যালয় থেকে লওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশের এস আই সাইদুর রহমান মঙ্গলবার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মেয়ের বাবা গউছ মিয়া জানান,আমার মেয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। শ্যামল মিয়া তাকে জোর পূর্বক অপহরণ করেছে। আমি তার বিচার চাই।

এ ব্যাপারে অপহরণকারী শ্যামলের বাবা জমির উদ্দীন জানান, আমার ছেলে শ্যামল মিয়াকে ভালবেসে পাপিয়া বেগম তার বাবার ঘর ছেড়ে আমার বাসায় পালিয়ে এসেছে। আজ তিন দিন ধরে মেয়েটি আমার হেফাজতে আছে। 

এ ব্যাপারে কাঠইর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফতি সামছুল ইসলাম জানান, পাপিয়া বেগমের ১৮ বছরের জন্ম সনদের জন্য ছেলের বাবা জমির উদ্দীন আমার কাছে এসেছিল কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়ার কারণে আমি সনদ দেইনি। 

এ ব্যাপারে সদর থানার অফিসার ইনর্চাজ শহীদুল্লাহ খাঁন জানান, এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রদীপ সিংহা জানান,সদর উপজেলার জগজীবনপুর গ্রামে বাল্য বিবাহের খবর পেয়েছি। আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে ফোন দিয়ে বলেছি পূর্ণ বয়স না হলে জন্ম নিবন্ধন সনদ না দেওয়ার জন্য। 

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার বরকত উল্লা খাঁন প্রতিবেদককে জানান, ছেলে-মেয়ের পূর্ণ বয়স না হলে বিবাহ করা বা দেওয়া যাবে না। আমি এখনই বিষয়টি দেখছি।

এই বিভাগের অন্যান্য খবর