রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে অবৈধ ভাবে মাটি খননের অভিযোগ রাজবাড়ী / 
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ভুমিহীন কৃষকদের মাঝে বন্দোবস্ত দেয়া ফসলী জমিতে অবৈধ ভাবে জোরপূর্বক মাটি খননের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্থরা এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ কাউয়ালজানি মৌজার অন্তর্ভুক্ত পদ্মা নদীর শাখা নদীর মাঝে বিশাল এলাকা জুড়ে চর রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ভুমিহীনদের মাঝে খাস জমি বন্টন প্রকল্পের আওতায় চাষাবাদ করার জন্য স্থানীয় দরিদ্র কৃষক আব্দুল শেখ, হাতেম শেখ, আজাদ শেখ, আ. হালিম শেখ, নিজাম শেখ, আইয়ুব বিশ্বাস, বক্কু সরদার, হাসমত সরদার ও মোসলেম সরদারকে ১৯৯৫ সাল থেকে প্রায় ২১ বিঘা জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে শুষ্ক মৌসুমে ওই চর এলাকায় বিভিন্ন ফসলের আবাদ হয়ে থাকে। বন্দোবস্ত পাওয়ার পর থেকে সেখানে এই ভুমিহীন কৃষকরা সোনার ফসল ফলিয়ে আসছেন। অভিযোগকারীরা জানান, ওই বন্দোবস্তকৃত জমিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রভাবশালী শুকুর মোল্লা ও কাদের ফকির একাধিক ড্রেজার বসিয়ে বিরামহীন ভাবে খনন করে মাটি বিক্রি করে আসছে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থরা গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও এই অবৈধ খনন কাজ বন্ধ করেননি তারা। বরং ড্রেজারের সংখ্যা আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, ইতিমধ্যে খননকৃত এলাকা জুড়ে বিশাল গভীর জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। তিনটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে সেখানে অবিরাম মাটি খনন করা হচ্ছে। এসময় স্থানীয় স্কুল শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, মজিবর রহমান মিনু, ইবাদত শেখসহ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের অনেকেই জানান, বন্দোবস্থকৃত জমিতে চাষাবাদ করে তাদের ভালোই চলছিল। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান ক্ষমতা খাটিয়ে এবং মাটি কাটায় মন্ত্রনালয়ের আদেশ থাকার কথা বলে এক মাসের অধিক সময় ধরে খননযন্ত্র বসিয়ে খনন করে আসছেন। এতে ইতিমধ্যে সেখানে সৃষ্টি হয়েছে গভীর গর্তের। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা গত বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আতর আলী সরদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দাবি করেন, খননকৃত জায়গাটি তার নিজস্ব জমি। সেখানকার মাটি একটি সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। বন্দোবস্থ পাওয়া ব্যাক্তিদের জায়গায় মাটি খনন করা হচ্ছে না।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু নাসার উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, এরআগে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি তোলার কারনে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করা হয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি কেউ যদি নতুন করে মাটি কাটা শুরু করে আমরা তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।