Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

ভোলায় নিজের বিয়ে ঠেকিয়ে দিল সাহসী স্বপ্না ভোলা

ভোলায় নিজের বিয়ে ঠেকিয়ে দিল সাহসী স্বপ্না

পড়ালেখায় বেশ মনযোগী, জীবনের লক্ষ্য চিকিৎসক হওয়া। সে স্বপ্ন পূরন করতেই নানা প্রতিকূলতাকে জয় করে পড়ালেখা চালিয়ে যান। অষ্টম শ্রেনীতে উঠেই বাধা পড়ে স্বপ্নপূরনে। দারিদ্রতায় কারনে বাল্য বিয়ে দিতে চায় তার পরিবার। 

বিয়ের সব আয়োজনও সম্পন্ন। কিন্তু কিছুতেই রাজী হয়না সে বিয়েতে, এক পর্যায়ে নিজেই নিজের বিয়ে বন্ধ করে নতুন জীবনের নব সূচনা করে।
এক সাহসী তরুনী স্বপ্না আক্তারের। যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে নিজের বিয়ে বন্ধ করে বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। বাল্য বিয়েকে বলেছেন না। শুধু তাই নয়, সহপাঠীদের সাথে আবার নতুন করে পড়ালেখা শুরু করেন তিনি। ভোলা সদরের ভেলুমিয়া ইউনিয়নের প্রত্যান্ত চন্দ্রপ্রসাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই গ্রামের দিন মজুর সেলিমের বড় মেয়ে স্বপ্না স্থানীয় খালেদা খানম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। 

শিক্ষকদের সহযোগীতায় ৩দিন আগে নিজের বিয়ে বন্ধ করে পুরো গ্রামে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। নিজের বিয়ে বন্ধ করায় তাকে সংবর্ধনা প্রদান করে বাল্যবিয়ে ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, ভোলা নেতৃবৃন্দ। শুধু তাই নয়, তার পড়ালেখার যাবতীয় খরচ বহনের দায়িত্ব নেন ওই কমিটি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৩দিন পূর্বে একই এলাকার জাহাঙ্গীরে ছেলে বিদেশ ফেরৎ আলামিনের সাথে বিয়ের আয়োজন করে ৮ শ্রেনীতে পড়–য়া স্বপ্নার। 
বিয়ে কথা শুনে কিছুতেই রাজী হয়নি স্বপ্না আক্তার, কিন্তু তারপরেও জোর করে বিয়ে দেয়া চেষ্টা করে স্বপ্নার। এক পর্যায়ে নিজের বিয়ে বন্ধ করতে প্রধান শিক্ষকের স্বরনাপন্ন হন এবং নিজের বিয়ে বন্ধ করে দেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহে আলম হিরন বলেন, স্বপ্না অনেক মেধাবী, সে পড়তে চায়, বিয়ের বিষয়টি আমাকে জানানোর পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিদের্শে বিয়ে বন্ধ করে হেফাজতে রাখা হয়েছে, সে এখন পরীক্ষা দিচ্ছে।
স্কুল ছাত্রী স্বপ্না আক্তার বলেন, আমি পড়ালেখা করতে চাই, আমি ডাক্তার হতে চাই। কিন্তু আমার বাবা-মা জোর করে বিয়ে দিতে চায়, বাধ্য হয়েই নিজের বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি। 
এক মাস আগেও একবার বিয়ে দিতে চেয়েছিলো, আমি কিছুতেই রাজি হইনি, পড়ালেখা করতে চাই। মানুষের মত মানুষ হতে চাই। ডাক্তার হয়ে জনগনের সেবা করতে চাই।
এব্যাপারে ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: কামাল হোসেন বলেন, স্কুল ছাত্রী স্বপ্নাকে তার নানার জিম্মায় রাখা হয়েছে। তার বাবা-মাকেও সতর্ক করা হয়েছে। মেয়েটি এখন নিরাপদ।

এদিকে নিজের বিয়ে বন্ধ করে একদিকে যেমনি নতুন করে নিজের শিক্ষা জীবন ফিরে পেয়েছেন, অন্যদিকে অন্যদের কাছেও বেশ অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থী স্বপ্না। এলাকায় তার প্রশংসা মুখে মুখে।