Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

লুঙ্গি পরে অফিস করেন গোপালগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার, রয়েছে নানামুর্খি দূর্নীতি! গোপালগঞ্জ

লুঙ্গি পরে অফিস করেন গোপালগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার, রয়েছে নানামুর্খি দূর্নীতি!

গোপালগঞ্জের জেলা রেজিস্ট্রারের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসগুলোর কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জমি-জমা রেজিস্ট্রিশন সংক্রান্ত বিষয়ে অধঃস্তন কর্মকর্তাদের উপর চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে অনৈতিক কাজ করিয়ে টাকা আদায়ে বাধ্য করা হচ্ছে। ধার্য করে দেওয়া হয়েছে মাসোহারা। দলিল প্রতি পারসেনটেজ নেওয়া হচ্ছে। অফিস ভিজিটের নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। যেসব কর্মকর্তা জেলা রেজিস্ট্রারের অন্যায় দাবী মানছেন না তাদেরকে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে কর্ম পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তারা রুটিন মাফিক কাজ চালাতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। কর্মস্পৃহা ও উদ্যোম হারিয়ে ফেলছেন। জনগনের হয়রানি বেড়ে গেছে। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারন মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে রেজিস্ট্রি অফিস গুলোতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হতে পারে বলে আশংকা করছেন ভুক্তভোগিসহ সাধারন মানুষ।

জেলা রেজিষ্ট্রি অফিসের বিশ্বাসযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, গত জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা রেজিষ্ট্রার হিসাবে গাজী আবু হানিফ গোপালগঞ্জে যোগদান করেন। এরপর থেকেই তার দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা প্রকাশ্যে রুপ নেয়। জেলা পাঁচটি উপজেলার পাঁচটি সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে প্রতিমাসে তিনি প্রায় এক লক্ষ টাকা মাসোহারা নেন। এছাড়া দলিল প্রতি এক’শ টাকা করে কমিশন গ্রহন করেন। প্রতিমাসে জেলায় গড়ে প্রায় ৫-৭ হাজার দলিল সম্পাদন হয়। দলিল থেকে কমিশন বাবদ প্রতি মাসে তিনি প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা আদায় করেন। অফিস পরিদর্শনের নামে উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে গেলে তাকে সম্মানী হিসাবে ন্যুনতম এক লক্ষ না দিলে তিনি ক্ষুদ্ধ হন এবং ফাঁক ফোকড় সৃষ্টি করে ওই কর্মকর্তাকে শায়েস্তা করতে নানা ভাবে হয়রানি করে থাকেন।

নাম না প্রকাশের শর্তে একজন সাব-রেজিষ্ট্রার অভিযোগ করে বলেন, জেলা রেজিষ্ট্রার সাহেব অফিসের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে ফেলেছেন। উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস পরিদর্শনের সময় তিনি বহিরাগত লোকজন নিয়ে অফিসে আসেন। ওই সব বহিরাগতদের দিয়ে তিনি সাব-রেজিষ্ট্রাদের সাথে ঘুষের দেন দরবার করান। জেলা রেজিস্ট্রার পদটি একটি জেলার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ন  দায়িত্বশীল পদ হলেও তিনি সব সময় লুঙ্গি পরে অফিস করেন। সাব রেজিস্ট্রারদের নিয়ে মাসিক সমন্বয় সভা করার কথা থাকলেও তিনি তা না করে অফিসার ও কর্মচারীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করেন। ফলে অফিসে এখন আর কাজের পরিবেশ নেই।

ভুক্তভোগী জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের মোহন বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, গত মাসে তিনি সাব-রেজিস্ট্রি একটি দানপত্র রেজিস্ট্রেশনের জন্য যান। কিন্তু তিনি দানপত্র দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে না পেরে ফিরে আসেন।

এ ব্যাপারে ওই অফিসের সাব-রেজিষ্ট্রার শাহ আব্দুল আরিফের সাথে কথা বললে তিনি জানান, জেলা রেজিস্ট্রারের নির্দেশে আমরা দান পত্র দলিল রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করে দিয়েছি। দানপত্র দলিল বৈধ হলেও সঙ্গত কারনে আপাতত আমরা তা করতে পারছি না।

এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জের জেলা রেজিস্ট্রার গাজী আবু হানিফের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি অল্প কয়েক দিন হলো জেলা রেজিস্ট্রার হিসাবে যোগদান করেছি। সব কিছু সত্য নয়। তিনি বার বার রিপোর্টি প্রকাশ না করতে প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন।

এই বিভাগের অন্যান্য খবর