Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

গোপালগঞ্জে বিসিক প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ ১ বছর ধরে বন্ধ গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জে বিসিক প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ ১ বছর ধরে বন্ধ

 বিসিক প্রকল্প সংলগ্ন এলাকার পাশ দিয়ে গোপালগঞ্জ-ভাটিয়াপাড়া-টুঙ্গিপাড়া রেল লাইনের নির্মাণ কাজ চলছে। এ রেল লাইনের উচ্চতা মহাসড়ক থেকে খুব বেশি হয়েছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক থেকে বিসিক নির্মিত এ্যাপ্রোচ রোড হয়ে রেল লাইনের উপর দিয়ে খাড়া শিল্পনগরীতে যানবাহন চলাচল ঝুকিপূর্ণ। এ বিবেচনায় বিসিকের এ্যাপ্রোচ রোডে ২ লেনের একটি আন্ডারপাস নির্মাণে রেল প্রকল্পকে অনুরোধ করে বিসিক।
এ ব্যাপারে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে আন্ডারপাস নির্মাণের সুপারিশ করে। সে সুপারিশের প্রতি রেল প্রকল্প কোন গুরুত্ব দেয়নি। ১ মাস আগে শিল্পমন্ত্রী আমির হোমেন আমু রেলমন্ত্রী মুজিবুল হককে আন্ডারপাস নির্মাণের জন্য ডিও লেটার দিয়েছেন। যা এখন পর্যন্ত কোন কাজে আসেনি।

গোপালগঞ্জ সম্প্রসারিত বিসিক প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পের আওতায় গোপালগঞ্জ শহরতলীর হরিদাসপুরে মধুমতি নদীর তীরে ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ঘেসে ৫০ একর জমির উপর ৯৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যায়ে ২০১০ সালে গোপালগঞ্জ সম্প্রসারিত বিসিক প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। ইতিমধ্যে বিসিকের সংযোগ সড়কের মাটি ভরাট, ভূমি উন্নয়ন, রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, সীমানা প্রাচীরসহ এ প্রকল্পের ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ শিল্পনগরীতে ৩৬০টি শিল্প প্লটে ২৫০টি শিল্প ইউনিট গড়ে উঠবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে আড়াই হাজার মানুষের। চলতি বছর এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু রেলের আন্ডারপাস নির্মাণ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার কারনে গত ১ বছর ধরে বিসিকের উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে।

২০১২-১৩ অর্থ বছরে গোপালগঞ্জ-ভাটিয়াপাড়া-টুঙ্গিপাড়া রেল লাইনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আন্ত:মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিসিক প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত ৫০ একর জমি থেকে ঢাকা খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন ১৬.১০ একর জমি রেল প্রকল্পের কাছে শর্ত সাপেক্ষে হস্তান্তর করা হয়। ফলে বিসিক প্রকল্পটি মহাসড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঢাকা খুলনা মহাসড়ক থেকে বিসিকে প্রবেশের জন্য সংযোগ সড়ক, আর্ডারপাস, ওভারপাস, ফুট ওভারব্রিজ, রেলষ্টেশন নির্মাণ করে দেবে বলে রেলওয়ে বিসিকের জমি গ্রহণ শর্তে উল্লেখ করে।

গোপালগঞ্জ সম্প্রসারিত বিসিক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী এ এম জসীম উদ্দিন বলেন, পদ্মা সেতুর নির্মিণ কাজ শেষ হলে এ অঞ্চলে বড় বড় শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠবে। এ শিল্প নগরীতে শিল্প স্থাপনের জন্য দেশের খ্যাতনামা উদ্যোক্তারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আন্ডারপাস না হলে বিসিক শিল্পনগরীতে মহাসড়ক থেকে যানবাহন চলাচল করতে পারবেনা। এতে উদ্যোক্তারা এ শিল্পনগরী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন।
তিনি আরো বলেন, আন্ত:মন্ত্রনালয়ের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে রেলওয়েকে আন্ডারপাস নির্মাণের সুপারিশ করেছে। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি।

সর্বশেষ ১ মাস আগে শিল্পমন্ত্রী রেলমন্ত্রীকে আন্ডারপাস নির্মাণের জন্য ডিও লেটার দিয়েছেন। তাতেও কোন কাজ হয়নি। এ্যাপ্রোচ সড়কে আর্ডারপাস নির্মাণে রেল কর্তৃপক্ষ গরিমশি করছে। তারা হরিদাসপুরের নিমতলা সড়ক বিসিকের জন্য ব্যবহার করতে বলছে। এ সড়ক ২/৩ ফুট উচু করলে নিমতলা আন্ডারপাসের সাথে যানবাহনের ছাদ ঠেকে যাবে। স্বাচ্ছন্দে যানবাহন চলাচল করতে পারবেনা। এছাড়া এ সড়ককে বিসিকের সাথে সংযুক্ত করতে নতুন করে জমি অধিগ্রহনের প্রয়োজন হবে। নির্মাণ করতে হবে নতুন রাস্তা। রেল প্রকল্পের অর্থায়নে এ্যাপ্রোস সড়কে আর্ডারপাস করে দেয়ার শর্ত থাকলেও রেল কর্তৃপক্ষ তাতে বার বার অনিহা দেখাচ্ছে। এ কারণে শিল্পনগীর ১০ ভাগ কাজ ঝুলে আছে ১ বছর ধরে। তাই যথা সময়ে শিল্পনগরীর কাজ সম্পন্ন করা নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে।এ প্রসঙ্গে রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী রমজান আলীর মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

এই বিভাগের অন্যান্য খবর