Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়নের জন্য তামাক-কর

তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান জাতীয়

তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

আসন্ন বাজেটে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চহারে করারোপের দাবিতে ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিড্স (সিটিএফকে), ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, এসিডি, ইপসা, নাটাব, প্রত্যাশা, টিসিআরসি, তাবিনাজ, বিসিসিপি, এইড ফাউন্ডেশন, প্রজ্ঞাসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠন সম্মিলিতভাবে রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করে। কর্মসূচিতে বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠন ব্যানার, ফেস্টুন, মিউজিক্যাল ট্রাক, কঙ্কাল প্রতিমূর্তিসহ অংশগ্রহণ করে। মানববন্ধন শেষে তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের প্রতিনিধি দল মাননীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রেরণের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর চেয়ারম্যান মহোদয়ের নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা জানান, তামাক জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর একটি পণ্য। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং এসডিজি এর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি ‘এফসিটিসি’র বাস্তবায়নকে অন্যতম কৌশল হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী ২০৪০ সালের পূর্বেই বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ নির্মূল করার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে সস্তা তামাকপণ্য তরুণ ও স্বল্প আয়ের মানুষকে ক্রমশ তামাক ব্যবহারে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করছে। কার্যকর তামাক-কর তামাকপণ্যের সহজলভ্যতা হ্রাস করে, যা সরকার এবং জনগণ উভয়ের জন্যই লাভজনক।

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়নের জন্য তামাকের ব্যবহার হ্রাস করতে, মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে আসন্ন ২০১৮-১৯ বাজেটে সকল তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপে নিম্নোক্ত দাবিসমূহ তুলে ধরা হয় :

১। বিদ্যমান জটিল করকাঠামো সংস্কার করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী একটি সহজ ও কার্যকর তামাক করনীতি প্রণয়ন করা;

২। সিগারেটের মূল্যস্তর সংখ্যা চারটি থেকে দুইটিতে (নিম্ন এবং উচ্চ) নামিয়ে আনা: নিম্নস্তরের সিগারেটে করারোপের ক্ষেত্রে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভাজন তুলে দেওয়া এবং উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরকে একত্রিত করে একটি মূল্যস্তরে (উচ্চস্তর) নিয়ে আসা; নিম্নস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের সর্বনিম্ন মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা এবং উচ্চস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের সর্বনিম্ন মূল্য ১০০ টাকা নির্ধারণ করে ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা; এবং সকল ক্ষেত্রে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটে ৫ টাকা সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করা;

৩। ফিল্টার এবং নন-ফিল্টার বিভাজন বাতিল করে প্রতি ২৫ শলাকা বিড়ির সর্বনিম্ন মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ: বিড়ির ক্ষেত্রে ফিল্টার এবং নন-ফিল্টার বিভাজন বিলুপ্ত করা; প্রতি ২৫ শলাকা বিড়ির সর্বনিম্ন মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫% সম্পূরক শুল্ক এবং ৬ টাকা সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করা; 

৪। ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের (জর্দা ও গুল) এক্স-ফ্যাক্টরি প্রাইস প্রথা বিলুপ্তকরণ: এক্স-ফ্যাক্টরি প্রাইস প্রথা বিলুপ্ত করে সিগারেট ও বিড়ির ন্যায় খুচরা মূল্যের ভিত্তিতে করারোপ করা; প্রতি ২০ গ্রাম ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের সর্বনিম্ন মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫% সম্পূরক শুল্ক এবং ১০ টাকা সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করা;

৫। সকল তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বহাল রাখা।

উপর্যুক্ত প্রস্তাবনাসমূহ বাস্তবায়ন করা হলে তামাকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যহারে কমার পাশাপাশি সরকার অতিরিক্তি ৭,৫০০ থেকে ১০,০০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করবে।