সনৎ বসুর রবীন্দ্রনাথকে নিবেদিত ছড়া ‘গোপন চিঠি’ শিল্প ও সাহিত্য / 
শুনছো দাদু, আমি এখন নিজে
নিজে নিজেই পড়ি
তোমার দিকে তাকাই যখন একাই হেসে মরি
অমন কি কেউ দাড়ি বানায়,
অমন ঢোলা জামা!
কবিদাদু, তোমার ছিলো
গল্পবলা মামা?
পিঁপড়ে-ভেজা দুধ খেয়েছো,
শিল-বাটা থানকুনি?
ও দাদুভাই, সত্যি কথা
বলো না এক্ষুনি ৷
মা বলেছে, তুমি নাকি মস্ত বড়ো কবি
জগৎ জোড়া নামটি তোমার, ভারত জোড়া ছবি
অনেক নাকি গান লিখেছো, গল্প নাটক ছড়া
কবিতাতেও তোমার খ্যাতি যায় না নাকি ধরা!
আমি এখন বড্ড ছোটো, ওসব কি আর বুঝি
বইয়ের পাতা উল্টে শুধু তোমার মুখই খুঁজি ৷
দাদু , তোমার সময় হবে, একটা ছড়া শুনবে?
এক্কেবারে নিজের লেখা, দু-এক মিনিট গুনবে,
ভালো হলে বলবে "সাবাস", খারাপ হলে "বাজে",
পারলে একটু শুধরে দিও, লাগবে কখন কাজে ৷
ফটোর ভেতর দিব্বি আছো, হাসছো মিটিমিটি
আজ দুপুরে তোমার কাছে পাঠাই গোপন চিঠি
সেই চিঠিতে জানবে তুমি আমার কত দুঃখ
একলা ঘরে জীবন কাটাই, টিভি দেখাই মুখ্য ৷
মা আর বাবা চাকরি করে, সারাটি দিন ব্যস্ত
কাজের মাসির হাতেই আমার দায়িত্বভার ন্যস্ত ৷
বাবা মায়ের ঝগড়া দেখে ভয়েতে বুক কাঁপে
তারই ভেতর পড়তে বসি, দিদিমণির চাপে ৷
তুমিই বলো, এইভাবে কি কারও জীবন চলে!
খাঁচায় পোষা পাখির মতো ভাসি চোখের জলে ৷
দাদু, আমায় বাঁচাও এসে, মা-বাবাকে বকো,
ছেলের কথা ভেবে তাদের লজ্জাও হয় নাকো!
জন্মদিনে তোমায় ডেকে ঘুচাই মনের জ্বালা
ও দাদুভাই, আসবেতো ঠিক, তোমায় দেবো মালা ৷ ৷