Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

প্লাস্টিককে না বলুন ও পলিথিন নিষিদ্ধ আইনের কঠোর বাস্তবায়ন দাবি

চট্টগ্রামে বিশ্ব ধরিত্রি দিবস উপলক্ষে প্লাস্টিককে না বলুন শীর্ষক মানববন্ধন চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বিশ্ব ধরিত্রি দিবস উপলক্ষে প্লাস্টিককে না বলুন শীর্ষক মানববন্ধন

পৃথিবী বাঁচলে মানুষ বাঁচবে, কিন্তু পলিথিন, প্লাস্টিক ও পলিমারজাতীয় অন্যান্য বস্তু সামগ্রী পচনশীল নয়। প্লাস্টিক জাতীয় বস্তু ব্যবহার আমাদের জীবনে অনিবার্য হয়ে গেছে, যেখানে জীবন রক্ষাকারী পানি, খাবার, শিশু খাদ্য, কোমল পানীয় এমনকি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের বোতল তৈরী হচ্ছে প্লাস্টিক দিয়ে। আর এ প্লাস্টিক পচনশীল না হবার কারনে পৃথিবী ধ্বংসের অন্যতম কারন। প্লাস্টিকের অতি ব্যবহারের কারনে মানুষ ক্যান্সারসহ নানা প্রাণঘাতি রোগে যে রকম আক্রান্ত হচ্ছে তেমনি নদী, নালা ভরাট হয়ে জলাবদ্ধতাসহ পরিবেশ দূষনের অন্যতম কারন হয়ে সভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার পলিথিন নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ন করেছেন কিন্তু আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত না করে জনসচেতনতাকে দায়ী করছেন। ফলে যত্রতত্র পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানা যেরকম বাড়ছে তেমনি এর ব্যবহারও সহজলভ্য হচ্ছে। 

অন্যদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনী অঙ্গীকার দিয়ে ক্লিন ও গ্রীন সিটি রূপান্তরের ঘোষনা দিলেও যত্রতত্র চিপস, পিট বোতলসহ নানা অপচনশীল ময়লা, আবর্জনা ফেলা, নালা নর্দমা ভরাট করে পুরো নগরী যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিনত হলেও সিটিকর্পোরেশন এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে নগরবাসী জলাবদ্ধতায় আতংকিত এবং চট্টগ্রাম নগরী জলমগ্ন ও তলিয়ে যাবার আশংকা। তাই পলিথিন নিষিদ্ধ আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করে নগরীকে বসবাসযোগ্য করা, সত্যিকারের ক্লিন ও গ্রীন সিটিতে রূপান্তরের জন্য সরকার ও সিটি কর্পোরেশন’র প্রতি দাবি জানান। 

চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ), আমেরিকান কর্ণার চট্টগ্রাম ও কনজুমারস অ্যাসোশিয়েন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), চট্টগ্রামে কর্মরত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী তরুন সংগঠনের যৌথ অংশগ্রহনে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বিশ্ব ধরিত্রি দিবস উদযাপন উপলক্ষে “প্লাস্টিককে না বলুন” শীর্ষক মানব বন্ধন এ বিভিন্ন বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

কনজুমারস অ্যাসোশিয়েন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন আমেরিকান কর্ণার চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক রুমা দাশ, চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ)’র ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার আনজুমান বানু লিমা, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, সংসপ্তকের সভাপতি আফরোজা নাহার চৌধুরী, সংসপ্তকের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক সৌরভ বড়ুয়া, বিবিএফ’র প্রধান নির্বাহী উৎফল বড়–য়া, নারী নেত্রী সালমা জাহান মিলি, ক্যাব চট্টগ্রাম নগর যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ, নোমান উল্লাহ বাহার, ক্যাব নেতা শাহীন চৌধুরী, সেলিম জাহাঙ্গীর, জেলা স্কাউটস এর সাবেক সম্পাদক অধ্যাপক শাহনেওয়াজ আলী মির্জা, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টি সোমিয়া সালাম, নার্গিস চৌধুরী, সংস্কৃতি কর্মী তুষার, দেশ টিভির প্রতিনিধি আলমগীর সবুজসহ বিভিন্ন যুব প্রতিনিধিরা।

ক্যাব বিভাগীয় সংগঠক জহুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানব বন্ধন কর্মসুচিতে ক্যাব, ক্যাব ইয়্যুথ গ্রুপ, সংশপ্তক, ইপসা, বিবিএফ, উপলা, হেপা, ভিবিডি, সিআইইউ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, সিআইইউ রোবোটিকস ক্লাব, হোয়াই বোর্ড সায়েন্স ক্লাব, বেল্টা চট্টগ্রাম (দক্ষিণ), নারী যোগাযোগ কেন্দ্র, সিনে তারুণ্যও  ড্রিম ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহন করেন। 

বক্তাগন বিশ্ব ধরিত্রি দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হল পলিথিন বা প্লাস্টিক। যত্রতত্র ও যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে এ উপকরণগুলো ব্যাপক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। তাছাড়া বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজের অজান্তে প্রতি মুহুর্তেই আমরা গ্রহণ করে চলেছি বিষটোপ। বিশেষ করে প্লাস্টিকের তৈরী যেসব পিট বোতল, বক্স, কাপ, পিরিচ, প্লেট, চামচ সময় ও শ্রম সাশ্রয়ী বলে খাবার পরিবেশনে ও খাবার প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহার করছি, এর বিন্দু বিন্দু বিষক্রিয় আমাদের শরীরে জমা হচ্ছে। এসব তৈজসপত্র মুলক গরম খাবার পরিবেশন উপযোগী নয়, অথচ আমরা নিশ্চিন্তে ও নির্বিঘ্নে এসব ব্যবহার করছি। প্লাস্টিকের অবাধ ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট শারিরীক ও পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে সকলকে সচেতন হবার পাশাপাশি স্ব স্ব অবস্থানে এর ব্যবহার হ্রাসে প্রচারণা চালানোর আহবান জানানো হয়। 

বক্তারা আরো বলেন, এখনই সময় এসেছে পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে এনে ভবিষ্যত প্রজন্ম ও পরিবেশকে বাঁচাতে সকলকে “প্লাস্টিককে না বলা”। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য “প্লাস্টিককে না” বলুন সামাজিক জনসচেতনতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্টেহোল্ডারদের সাথে নিয়ে আমেরিকান কর্ণার চট্টগ্রাম ও কনজুমারস অ্যাসোশিয়েন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ও যুব সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।