Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

চট্টগ্রামে পাহাড় ধস সচেতনতা বিষয়ক কর্মশালা

পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের দ্রুত সরিয়ে নেয়া হবে : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী চট্টগ্রাম

পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের দ্রুত সরিয়ে নেয়া হবে : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এমপি বলেছেন, পাহাড় ধ্বস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে চট্টগ্রাম বিভাগে ইতোপূর্বে ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীরা সব সময় ঝুঁকিতে থাকে। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে তাদেরকে দ্রুত নিরাপদস্থানে সরিয়ে নেয়া হবে এবং প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহ করা হবে। আমাদের কাছে খাবারের কোন অভাব নেই। অনেক খাবার আমরা ইতোমধ্যে মওজুদ করে রেখেছি। দুর্যোগকালীন সময়ে আমরা কখনও মৃত্যু কামনা করি না। দুর্যোগের আগাম সংকেত আসলে ১০৯০ হট লাইন নম্বরে বিনামূল্যে ফোন করে আবহাওয়া সম্পর্কে জানবেন ও ঘর থেকে বের হওয়ার সময় প্রস্তুতি নেবেন। ঘূর্ণিঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতসহ যেকোন দুর্যোগে নিজে সচেতন থাকবেন, অন্যকেও সচেতন করবেন। মানুষকে সজাগ করা আমাদের মূল কাজ। মানুষ যাতে জানমালের ক্ষতি না হয় সে বিষয়টি বিবেচনায় এনে দুর্যোগের ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। তবে পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসের জন্য যারা সুযোগ করে দিয়েছেন তারা যত বড় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতাই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। 

রোববার বেলা ১২টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত ‘পাহাড় ধস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও আগাম সতর্কতামূলক কার্যক্রম সম্পর্কিত’ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত কর্মশালাটির সহযোগিতায় ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল বলেন, আগামী ১৫ মে’র মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে হবে। পাহাড়ের পাদদেশে যত বড় প্রভাবশালী থাকুক না কেন, তাদের সরিয়ে নিতে হবে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে থাকা যাবে না। 

রোববার দুপুরে নগরের সার্কিট হাউজে পাহাড়ধস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ও আগাম সতর্কতামূলক কার্যক্রম সম্পর্কিত কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

পাহাড়ধসে আমরা আর একটিও মৃত্যু দেখতে চাই না উল্লেখ করে ত্রাণ সচিব মো. শাহ কামাল বলেন, নগরসহ চট্টগ্রামে যে সব ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় রয়েছে, সেখানে থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বসতি উচ্ছেদ করতে হবে। সরতে না চাইলে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে। সেখানে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস লাইন কেটে দিতে হবে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, বিদ্যুৎ বিভাগ, ওয়াসা, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। পাহাড়ে বসবাসরতদের মধ্যে কেউ যদি গৃহহীন হয়, তাহলে তাদের পুনর্বাসন করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে ও  সহকারী কমিশনার (ভ‚মি-বাকলিয়া) সাবরিনা মুস্তফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোহসীন, সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাসুদুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হাবিবুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা, সিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার এস.এম মোস্তাইন হোসেন, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল প্রমুখ। 

কর্মশালার পূর্বে বেলুন উড়িয়ে পাহাড় ধস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও আগাম সতর্কতামূলক কার্যক্রমের উদ্বোধন ও বর্ণাঢ্য র‌্যালিতে নেতৃত্ব দেন মন্ত্রী মায়া।