গত ১৫ এপ্রিল, ২০১৮ খ্রি. অনলাইন ভিত্তিক পত্রিকা নিউজ বাংলা এবং ১৬ এপ্রিল দৈনিক আমাদেও সময় পত্রিকায় একটা চমকপ্রদ খবর বেড়িয়েছে..। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ কে নয় লাখ টাকা ঘুষ দিতে গিয়ে এক চাকরিপ্রার্থী আটক হয়েছেন। খবরটা দেখে একটু আশ্চর্য না হয়ে পারলাম না। বাংলাদেশে আজকের বাজারে এমন ভালো মানুষও আছে! তাও আবার নগদ নারায়ন নয় লাখ টাকার উৎকোচ না গিলে উপরোন্তু চাকরিপ্রার্থীকে পুলিশে সোপর্দ করে একেবারে রীতিমতো চারিদিকে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন। এমন একজন মানুষকে তো সততায় নোবেল পুরস্কার দেয়া উচিত।
কিন্তু আমার চিন্তা হলো অন্য জায়গায়। বলা নেই, কওয়া নেই দিনে-দুপুরে হুট করে একজন চাকরিপ্রার্থী নয় লাখ টাকার একটা ব্যাগ নিয়ে তাও আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের দোতলায় একেবারে সোজা গিয়ে তাঁর কক্ষে ব্যাগটা টেবিলে রেখে বললো, স্যার আ... আ... আমাকে একটা চাকরি দিন। বিষয়টা অবাক করার মতো তো বটেই; সেই সঙ্গে গভীর চিন্তারও! নাকি...শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে গিয়ে এমনটা করা হয়েছে? তা না হয় আপনাদের ভাবনার ওপর খানিকটা ছেড়ে দিলাম।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান হলো সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে। উপাচার্য মহোদয় মাঝে মধ্যে অফিস করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের দো-তলায় অথবা বাকি সময়টা ধানমন্ডির লিয়াজোঁ অফিসে। অথচ নিয়োগ লাভের পর গত দশ মাসে তিনি কতবার নিজ ক্যাম্পাসে গিয়ে অফিস করেছেন? যেখানে শাহজাদপুর মহিলা কলেজের একটা পুরো ভবন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
কিছুদিন আগে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁর পছন্দের প্রার্থীদের নিতে গিয়ে কতোই না সততা তিনি দেখিয়েছেন! তানিয়েও অনেকের মধ্যে শত প্রশ্ন হাবুডুবু খাচ্ছে তার খবর নেই। আবার কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকরির সার্কুলার হয়ে যাওয়ার পর সেই পদের বিপরীতে অস্থায়ীভাবে একজনকে নিয়োগ দিয়ে তিনি নিয়মের বারোটা বাজিয়ে তা দিয়ে আবার ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, ঘোমটার নিচে খ্যামটা নাচন নাচ্ছেন এবং অন্যদেরকেও সমান তালে নাচাচ্ছেন! এই হলো গিয়ে উপাচার্য মহোদয়ের সততা! যেন ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির!
লেখক : মো : শাহিন আকতার
শিক্ষক ও গবেষক