Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

রিমন তার মাকে দেয়া কথা রাখলেন তবে লাশ হয়ে! ফরিদপুর

রিমন তার মাকে দেয়া কথা রাখলেন তবে লাশ হয়ে!

রিমনের শেষ বাড়ীতে আসা এই বছরের জানুয়ারী মাসের ১৩ তারিখে। সে সময় বাড়ী থেকে যাওয়ার সময় মাকে বলে গিয়েছিলেন খুব দ্রুত আবার মাকে দেখতে আসবেন। রিমন তার দেয়া সেই কথাটি রাখলেন তবে নিথর দেহ নিয়ে কালের সাক্ষী লাশ হয়ে বাড়ীতে এসে। প্লেন দূর্ঘটনায় তার এই বাড়ী আসার সব স্বপ্ন কেড়ে নিয়ে গেছে। সংসারের এমন উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে আজ যেন বড্ড বোবা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন সে সহ পুরো পরিবার। নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত সোমবার (১২ মার্চ) ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় নিহত এস এম মাহমুদুর রহমান রিমন এর লাশ লস্করদিয়া গ্রামের দানেশমান বাগদাদী মাজার শরীফ পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তার বাড়ির আঙ্গিনায় ৪র্থ জানাজার নামাজ শেষে দানেশমান বাগদাদী মাজার শরীফ পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়।
 
এর আগে ঢাকা থেকে ভোর সোয়া ৪টায় লাশবাহি গাড়ীতে করে রিমনের লাশ তার নিজ বাড়িতে পৌঁছায়। রিমনের লাশ বাড়িতে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয় বিদায়ক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। স্বজনদের আহাজারীতে পুরো এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। ছেলের লাশ দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে রিমনের পিতা-মাতা। নিহত রিমনের লাশ দেখতে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীরা ছুটে আসে।

রিমন ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া গ্রামের শাহ মো. মশিউর রহমান নিরু মিয়ার বড় ছেলে। রিমন লস্করদিয়া আতিকুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি এবং ফরিদপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে প্রায় ৭ বছর আগে ঢাকায় চলে যায়। পরে সে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড কোম্পানীতে চাকরি নেন। রানার অটো মোবাইলস কোম্পানীর ঢাকা অফিসের সিনিয়র ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। প্রতিষ্ঠানের কাজে রিমন নেপাল যাচ্ছিল বলে জানান তাঁর পরিবার। দুই ভাইয়ের মধ্যে রিমন ছিল সবার বড়। ছয় বছর আগে সে বিয়ে করেন। সে তার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার  খিলক্ষেত এলাকার নিকুঞ্জে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। এদিকে তার বাড়ীতে গিয়ে দেখা গেল তার মা লিলি বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। একমাত্র ভাই রুপম বাকরুদ্ধ হয়ে পেেড়ছেন। আর কোন কথাই বলতে পারছেন না তারা বাবা মশিউর রহমান। গ্রামের এমন যোগ্যতা সম্পন্ন ছেলে হারিয়ে গ্রামের মানুষও শোকে মূর্হমান হয়ে পড়েছেন। 

উল্লেখ্য, ৬৭ যাত্রীসহ ৭১ জন আরোহী নিয়ে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় সোমবার(১২ মার্চ) দুপুরে বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলার ড্যাশ উড়োজাহাজটি। এতে বাংলাদেশের ২৬ জন যাত্রী নিহত হয়। এদের মধ্যে ২৩ বাংলাদেশীর লাশ সনাক্ত হয়েছে যা নেপাল থেকে ঢাকায় পাঠানো হয় সোমবার।