Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

শিশুদের কল্যাণে বর্তমানকে উৎসর্গ করার আহবান প্রধানমন্ত্রীর জাতীয়

শিশুদের কল্যাণে বর্তমানকে উৎসর্গ করার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব শিশুদের কল্যাণে আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করার মধ্যদিয়ে সবাই মিলে জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আসুন, দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব শিশুদের কল্যাণে আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করি। সবাই মিলে জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি। আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’

বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি এ আহবান জানান। বাণীতে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং দেশের সকল শিশুসহ দেশবাসীর প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রিয় মাতৃভূমিকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। শিশুদের কল্যাণের লক্ষ্যে একটি যুগোপযোগী ‘জাতীয় শিশুনীতি’ প্রণয়ন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বছরের শুরুতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা হচ্ছে। প্রায় শতভাগ শিশু স্কুলে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা শিশুদের জন্য জাতির পিতার জীবন ও কর্মভিত্তিক বই প্রকাশ এবং পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সংযোজন করেছি। শিশুদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত করে তাদের ব্যক্তিত্ব গঠন, সৃজনশীলতার বিকাশ এবং আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে দলমতনির্বিশেষে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। তাদের বাংলাদেশ ও জাতির পিতার সংগ্রামী জীবনের প্রকৃত ইতিহাস জানাতে হবে।’

শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর মমতা ছিল অপরিসীম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাই তাঁর জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি মহান আল্লাহর কাছে জাতির পিতার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং আগামীদিনের কর্ণধার শিশুকিশোরদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও রায় কার্যকর করার মধ্যদিয়ে বাঙালি জাতি আজ দায়মুক্ত হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী-যুদ্ধপরাধীদের বিচারের রায়ও কার্যকর করা হচ্ছে। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

তিনি বলেন, জাতির পিতার ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্ব এবং সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব সমগ্র জাতিকে একসূত্রে গ্রথিত করেছিল। যার ফলে আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। বিকাশ ঘটেছে বাঙালি জাতিসত্তার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুধু বাঙালি জাতিরই নয়, তিনি ছিলেন বিশ্বের সকল নিপীড়িত-শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায় ও মুক্তির অগ্রনায়ক।

‘তিনি যখন স্বাধীন বাংলাদেশের পুনর্গঠন কাজে আত্মনিয়োগ করেন, তখনই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁকে সপরিবারে হত্যা করে’ জানিয়ে শেখ হাসিনা আরো বলেন, এর মধ্যদিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নকে স্তব্ধ করে দেয়া হয়। অবৈধ সামরিক সরকারগুলো বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে। স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে পুনর্বাসন করা হয়। জনগণ ভাত ও ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয় ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এই বিশ্বনেতার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করা। জাতির পিতা বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন। ১৯৪৮ সালে তাঁর প্রস্তাবে ছাত্রলীগ, তমদ্দুন মজলিশ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ।

১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে সাধারণ ধর্মঘট পালনকালে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত তিনি বারবার কারারুদ্ধ হন। কখনও জেলে থেকে কখনও বা জেলের বাইরে থেকে তিনি ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির বিয়োগান্তক ঘটনার সময় কারান্তরীণ অবস্থায় থেকে দিক-নিদের্শনা প্রদান করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ’৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮’র আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬২’র শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬’র ছয় দফা, ’৬৮’র আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ’৭০’র নির্বাচন এবং ’৭১’র মুক্তিযুদ্ধ জাতির পিতার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে পরিচালিত হয় বলেন তিনি। বাসস