Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

ঝিনাইদহে ছাগল বেচা-কেনায় প্রতারণার নতুন ফাঁদ ! ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহে ছাগল বেচা-কেনায় প্রতারণার নতুন ফাঁদ !

গম ও চাল ধানকলে ফেলে ময়লা আবর্জনা মুক্ত করতে বিশেষ ব্যবস্থায় হলার করার পদ্ধতিটি বহু পুরানো। কিন্তু ছাগল হলার করার কথাটি কেও শোনেনি। আশ্চার্য্য ও অবাক মনে হলেও ঝিনাইদহের হাটবাজারে হলার করা ছাগল বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ পদ্ধতিতে ছাগলের পেটে গুড় বা লবণ মিশ্রিত পানি মেশিনের সাহায্যে ঢুকিয়ে ফুলিয়ে হাটে তোলা হচ্ছে। গত দুই বছর ধরে ঝিনাইদহ ও পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার কতিপয় ছাগলের ব্যাপারী এই ব্যবস্থায় ছাগল বিক্রি করে চল্লেও তা আর মাংশ বিক্রেতাদের নজর এড়ায়নি। প্রতারণার এই নতুন ফাঁদ দেখে ঝিনাইদহ প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও হতবাক। অথচ এই ফাঁদে পড়ে মাংশ বিক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছে। মাংশ ব্যবসায়ী ছামছুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তিন গতহাটে দুইটি হৃষ্টপুষ্ট খাসি ছাগল কিনে বাড়িতে আনেন। ছাগল দুইটিতে ১২ কেজি করে ২৪ কেজি মাংশ আন্দাজ করে কেনা হয়। বাড়ি আনার পর সারা রাত ধরেই প্রসাব পায়খানা করে জীর্নশীর্ন হয়ে যায়। ঝিনাইদহের হাটে জবাই করে প্রতিটি ছাগলের মাংশ হয় ৮ কেজি করে। এতে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হন। 

ঝিনাইদহের মাংশ বিক্রেতা সমিতির সভাপতি জয়নালও খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। দুলাল নামে এক ছাগল ব্যবসায়ী জানান, তিনি দীর্ঘদিন এই ব্যবসার সাথে জড়িত। সম্প্রতি হাট বাজারে হলার করা ছাগল কিনে তিনিও প্রতারিত হচ্ছেন। সাধুহাটী এলাকার গৃহবধু লিলিমা বেগম জানান, তার মেজ দেবর দুইটি খাসি ছাগল কিনে আনেন কোরবানীর জন্য। পরদিন কথিত হৃষ্টপুষ্ট ফোলা সেই ছাগল রোগা আর জীর্ন মনে হলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি আরো জানান, হলার করা ছাগল নিয়ে ছাগল পালকরা খুবই বিপদে আছে। কারণ বাজার থেকে কিনে আনার পর কারো বুঝে উঠার ক্ষমতা নেই এটা হলার করা না গৃহস্থবাড়ির ছাগল। 

মাংশ বিক্রেতারা জানান, ঝিনাইদহের সবচে বড় হাট হচ্ছে কালীগঞ্জের বারোবাজার। এই হাট ছাড়াও সদর উপজেলার গান্না, বৈডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গার দশমাইল, বাজারগোপালপুর, ভাটই ও গোয়ালপাড়া হাটে অহরহ হলার করা ছাগল বিক্রি হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে ছাগল মোটাতাজা করার বিষয়টি কারো ধারণাই আসে না এমন কথা জানালেন ঝিনাইদহ প্রাণী সম্পাদ বিভাগের কর্মকর্তাগন। 

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রনী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি জানতে পেরে ঝিনাইদহের হাটে বাজারে নজরদারী বৃদ্ধি করেছেন। তিনি বলেন শুধু ছাগলই নয় গরুও হলার করা হচ্ছে। মুরগীকে পাথর খাইয়ে ওজন বাড়ানোর কুমতলব থেকে এই ধারণাটি ছাগলের ব্যাপারীরা রপ্ত করেছে বলে তিনি মনে করেন।