Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

কুমিল্লায় বিষ্ফোরণ : রহস্য খুঁজে পাচ্ছেনা পুলিশ কুমিল্লা

কুমিল্লায় বিষ্ফোরণ : রহস্য খুঁজে পাচ্ছেনা পুলিশ

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে একটি আবাসিক ভবনে বিস্ফোরণে রিয়াজুল ইসলাম নামের এক কলেজছাত্র আহত হওয়ার ২ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ ও গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলছেন না আহত ব্যক্তি। এতে রহস্য কাটছে না ঘটনাটির।

গত ২ দিন ধরে ওই ভবন ঘিরে অনুসন্ধান চালায় র‌্যাব, পুলিশ, পিবিআই ও গোয়েন্দারা। স্থানীয় হাজার হাজার উৎসুক জনতা ভিড় করে ঘটনাস্থলে।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ড.এস.এম মনির-উজ-জামান বিপিএম-পিপিএম। এ ঘটনায় জেলার বুড়িচং থানার দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শাহাদৎ হোসেন বাদী হয়ে আহত রিয়াজুলকে আসামি করে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে সন্ধ্যায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ এ পর্যন্ত আহত রিয়াজুলসহ তার ৫ নিকটাত্বীয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। রিয়াজুল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি চাপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার উলুকনগর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।

এর আগে গত বুধবার মধ্য রাতে জেলার বুড়িচং উপজেলার নাজিরা বাজার সংলগ্ন ঘোষনগর এলাকায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ৪ তলা বাসার নিচ তলার একটি রুমে থাকত কুমিল্লা সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের ছাত্র রিয়াজুল (১৭) ও তার খালাতো ভাই সোহাগ (১৪)।

বাড়ির মালিক তাদের নানা হাজী আবদুল জলিল পরিবার নিয়ে থাকত পাশের একটি ইউনিটে। মধ্যরাতে রিয়াজুলের রুমে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর রুমের থাই গøাসের জানালা ও স্টিলের দরজা ভেঙে যায়। এসময় পুরো ভবন কেঁপে উঠে। বিস্ফোরণে রিয়াজুলের রুমে থাকা কাপড়ে আগুন লেগে যায়। এসময় বাড়ির অন্যান্য ভাড়াটিয়া ও স্থানীয়রা এগিয়ে আসে এবং আগুন নিভিয়ে রুমে থাকা রিয়াজুল ও সোহাগকে উদ্ধার করে। বিস্ফোরণে রিয়াজুলের দুই হাত ও মুখের বেশ কিছু অংশ ঝলসে যায়।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিয়াজুলকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও বিস্ফোরণের বিষয়ে সে একেক সময় একেক তথ্য দিচ্ছে। সে বিস্ফোরণের বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানালে বিস্ফোরণের বিষয়ে এখনও পুলিশ ও গোয়েন্দারা অনেকটা অন্ধকারে রয়েছে। এরই মধ্যে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিয়াজুল ছাড়াও তার ৪ নিকটাত্বীয়কে আটক করা হয়েছে। অপর আটকরা হলো, তার তার নানা হাজী আবদুল জলিল, মামা আলমগীর, ফুফাতো ভাই রায়হান ও খালাতো ভাই সোহাগ।

ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ড. এস.এম মনির-উজ-জামান বিপিএম-পিপিএম। এসময় উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন, আবদুল্লাহ-আল মামুন, ডিবির ওসি একেএম মনজুর আলম, বুড়িচং থানা পুলিশের ওসি মনোজ কুমার পাল ও কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া।

কুমিল্লা পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের জানান, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং প্রাথমিক তদন্তে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বিস্ফোরণের বিষয়ে আহত রিয়াজুল নিশ্চিত কোনো তথ্য না দিলেও তার (রিয়াজুল) সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি সামনে রেখে তদন্ত চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, বোমা বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরণের আলামতগুলো সংগ্রহ করে শুক্রবার দুপুরে ঢাকায় নিয়ে গেছে। এঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় বুড়িচং থানা পুলিশের এসআই শাহাদাৎ হোসেন বাদী হয়ে রিয়াজুলকে এজাহার নামীয় আসামি করে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে বুড়িচং থানায় মামলা হয়েছে।

সন্ধ্যায় পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ড. এস.এম মনির-উজ-জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, আমরা ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। বিস্ফোরণের আলামত পরীক্ষা ও তদন্ত শেষে ঘটনার বিষয়টি বিস্তারিত জানা যাবে।