Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

নেতাকর্মীদের অসহিষ্ণু আচরণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং ভোট কমছে : আইজিপি জাতীয়

নেতাকর্মীদের অসহিষ্ণু আচরণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং ভোট কমছে : আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন নেতাকর্মীদের অসহিষ্ণু আচরণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং ভোট কমছে । এসময় তিনি আরো বলেন জেল না খাটলে তো বড় নেতা হওয়া যায় না ।

রোববার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে নগর ও চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশ আয়োজিত সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

সম্প্রতি চট্টগ্রামের পটিয়ায় সরকারি দলের এক নেতার মামলায় অন্য নেতার অনুসারীকে গ্রেফতারের পর ব্যারিকেড দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অচল করে দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে শহীদুল হক বলেন, এতে শত শত যাত্রী দুর্ভোগের শিকার হন। তিনি বলেন, “গ্রেফতারের পর সড়ক অবরোধ করে এই যে হাজার হাজার মানুষকে কষ্ট দেওয়া হলো তাতে কি রুলিং পার্টির (ক্ষমতাসীন দল) ভোট বেড়েছে, নাকি কমেছে? আমি তো বলব ভোট কমেছে? রুলিং পাটির ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।” সরকারি দলের নেতাদের আইনের পক্ষে থাকারও আহ্বান জানান তিনি।

ওই দিন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অচল করে দেওয়ার পরও ত্বরিত ব্যবস্থা না নেওয়ায় চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনারকে তিরস্কার করেন আইজিপি। তিনি বলেন, “আপনি তো ঘুষ খান না। তাহলে চেয়ার ধরে থাকেন কেন?” পটিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি বলেন, “গ্রেফতার করে তাকে থানায় নেওয়ার পর যদি ছেড়ে দিতে হয় তাহলে আইনের শাসন কোথায় থাকে?” সরকারি দলের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা বলতে পারতেন, গ্রেফতার করেছেন ঠিক আছে। আমরা আদালতে জামিনের আবেদন করব। আপনারা জামিনের বিরোধিতা করবেন না। স্ট্রংলি বিরোধিতা করতাম না। রিলাক্স থাকতাম। কোর্ট জামিন দিলে দিত, না হলে ১০-১৫ দিন জেল খাটলে কী এমন অসুবিধা হতো? জেল না খাটলে তো বড় নেতা হওয়া যায় না।”

উল্লেখ্য, গত ১৩ মে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত কর্ণফুলী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মামলা করেন পটিয়ার সাংসদ শামসুল হক চৌধুরীর ভাই মজিবুল হক চৌধুরী। গ্রেফতারের পর ওই দিন প্রায় আট ঘণ্টা পটিয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের মইজ্জারটেক এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
অনুষ্ঠানে শহীদুল হক বলেন, স্লোগানে নয়, কাজের মাধ্যমে পুলিশকে জনগণের সতিক্যারের বন্ধু হতে হবে। পুলিশ ও জনগণের সর্ম্পক উন্নয়ন দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সুধী সমাবেশে নগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল জলিল মণ্ডলের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহসভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ।

এর আগে শনিবার সকালে নগরের নন্দন কানন এলাকায় আর এফ পুলিশ প্লাজার উদ্বোধন করেন আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক। এ সময় তিনি বলেন, “দেশকে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হতে দেব না। যেকোনো ধরনের জঙ্গি তৎপরতা কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে। পেট্রলবোমা মেরে, বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারা আন্দোলন নয়। আপনারা আন্দোলন করেন সমস্যা নেই। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করতে হবে।”