Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

হোগলারচক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষা অফিসার অবরুদ্ধ খুলনা

হোগলারচক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষা অফিসার অবরুদ্ধ

পাইকগাছায় অফিস কক্ষে জোরপূর্বক হোগলারচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী হীরক মন্ডলকে অব্যহতি পত্রে স্বাক্ষর করে নেওয়ার ঘটনায় এলাকা অশান্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিবাদে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলচ্ছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা সহকারী শিক্ষা অফিসার, প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়লে পুলিশী প্রহরায় মুক্ত হয়েছেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এমপি এ্যাডঃ শেখ মোঃ নুরুল হকের হস্তক্ষেপে রোববারে ইউএন’র দপ্তরে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে গত বছরের ১৬ আগস্ট গড়ইখালী ইউপির ৭১ নং হোগলারচক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় হিরক জ্যোতি মন্ডল দপ্তরী-কাম-নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগ পান। হিরক এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাকলীন প্রধান শিক্ষক শেখর চন্দ্র মন্ডলের ছেলে। 

জানা গেছে, ১২ আবেদনকারী মধ্যে ৪ নিয়োগ প্রত্যাশী পরীক্ষায় অংশ নিলে সংশ্লিষ্ট নিয়োগ বোর্ড হীরক জ্যোতিকে প্রথম করে নিয়োগ দেন এবং ৬ মাস ধরে হীরক এ স্কুলে চাকুরী করলেও আজও পর্যন্ত সে বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, একই বাড়ীর স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ফাল্গুনী মন্ডল ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহ্নবী দেবীর পছন্দের প্রার্থী নিয়োগ না পাওয়ায় তারা প্রথম থেকে হীরককে মেনে নিতে পারেনি। অভিযোগ উঠেছে, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দাবীকৃত অর্থ পূরণ না করায় তারা পরিকল্পিতভাবে হীরকের বেতন-ভাতা সম্পর্কে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। সুত্র মতে, হীরকের চাকুরিচ্যুত করার জন্য সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক সুকৌশলে সহকারী ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্কুলে রাত্রিকালে অনুপস্থিতি ও বাই সাইকেল চালাতে না পারার অভিযোগে হীরকে শোকজ করা হয়। সর্বশেষ গত ১৩ ফ্রেরুয়ারী বিদ্যালয় অফিস কক্ষে হীরকের গলাধরে মারধর করে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক জোর করে অব্যাহতি পত্রে স্বাক্ষর করে নিলে এ ঘটনা জানাজানির পর এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ বিক্ষুব্দ হয়ে পড়ে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখেন এবং তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাওয়া-আসা বন্ধ করে দিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সজাগ হয়ে উঠে। 

এদিকে এ পরিস্থিতিতে শনিবার সকালে সহকারী শিক্ষা অফিসার ঝংকার ঢালী বিদ্যালয়ে আসার খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ অভিভাবক ও এলাকাবাসী শ্রেনী কক্ষ বন্ধ করে হাজারো জনতা জড়ো হয়ে হীরকের অব্যাহতি পত্র প্রত্যাহারের দাবী জানাতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের ষড়যন্ত্রে সহকারী শিক্ষা অফিসারের মিথ্যা প্রতিবেদনের অভিযোগে এনে অফিস কক্ষে সকলকে অবরুদ্ধ করে ফেলে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। খবর পেয়ে দুপুর নাগাদ বাইনবাড়ীয়া ক্যাম্প পুলিশের টুআইসি ইয়াকুব ও স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য হান্নান গাজী ঘটনাস্থল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রের চেষ্টা করে। বিক্ষুব্ধদের উদ্দেশে সহকারী শিক্ষা অফিসার ঝংকার ঢালী, হীরকের চাকুরী ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বস্ত করলে পুলিশ সকলকে মুক্ত করে গন্তব্যে পৌছিয়ে দেন। 

এ বিষয়ে প্রতিবাদকারী কালিপদ মন্ডল, শেফালী মন্ডল, স্বপন মৃধা, প্রভাশী মন্ডল জানান, একই বাড়ীর সভাপতি-প্রধান শিক্ষক দেবর-বৌদি’র ক্ষমতা বলে প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে এতিম হীরকের পেটে লাথি মেরে পথে বসানোর চেষ্টা করছেন। 

হীরকের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহ্নবী দেবী উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ ও কমিটির বিষয় উলে­খ করে বলেন এখানে তার কোন হাত নেই। তবে ক্লাশে তালা ঝুলানো কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিভাবকরা ছাত্র-ছাত্রী না পাঠানোয় ক্লাশ হচ্ছে না বলে স্বীকার করেন। রোববার এ বিষয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফকরুল হাসান এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।