Opu Hasnat

আজ ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৪,

ঝালকাঠিতে কলেজ ছাত্রী হত্যা : শ্বশুরসহ ৪ জনের নামে মামলা, স্বামী গ্রেপ্তার নারী ও শিশুঝালকাঠি

ঝালকাঠিতে কলেজ ছাত্রী হত্যা : শ্বশুরসহ ৪ জনের নামে মামলা, স্বামী গ্রেপ্তার

ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন গর্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে তার স্বামী মাইনুল ইসলাম আকন হিমুকে সোমবার বিকেলে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার বিকালে শহরের কাঠপট্টি সড়কে একটি মুড়ির মিলের দোতলায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে। মাইনুল ইসলাম আকন হিমু প্রথমে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে স্ত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে একটি নাটক সাজানোর চেস্টা করে এবং নিজেও বিষপানের অভিনয় করে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসল ঘটনা প্রকাশ পায়। এ ঘটনায় নিহত সুরাইয়ার বাবা আসলাম ফরাজী বাদী হয়ে সোমবার দুপুরে ঝালকাঠি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলায় স্বামী মাইনুল ইসলাম আকন হিমু (২৫), শ্বশুর মিল্টন আকন(৫০), শ্বাশুরি আয়শা বেগম (৪২) ও মুড়ির মিলের ম্যানেজার মো. মাহফুজকে আসামী করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২ বছর আগে দুই পরিবারের সম্মতি ছাড়াই শহরের কাঠপট্টি সড়কের মিল্টন আকনের ছেলে মাইনুল ইসলাম আকন হিমু একই এলাকার আসলাম ফরাজীর মেয়ে সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিনকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে ছেলের পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি। এ নিয়ে প্রায়ই পারিবারিক কলহ লেগে থাকত। রবিবার বেলা ১১ টার দিকে হিমু আকনের বাবা মিল্টন আকনের মুড়ির মিলের দোতলার একটি কক্ষে দরজা বন্ধ করে ঝগড়া করে ওই দম্পতি। এক পর্যায় নিজ স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করে বিকালে হিমু নিজে মোবাইল ফোনে সুরাইয়ার মামা তরিকুল ইসলাম রাজুকে জানায় সুরাইয়া বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার ঘটনা প্রমাণ করার জন্য সুরাইয়ার মুখে তুঁতে ঢুকিয়ে দেয় এবং নিজেও সামান্য তুঁতে খেয়ে আত্মহত্যা চেস্টার অভিনয় করে। খবর পেয়ে সুরাইয়ার মামা লোকজন নিয়ে সুরাইয়াকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরাইয়াকে মৃত ঘোষণা করে এবং স্বামী হিমুকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে  প্রেরণ করে। সোমবার সকালে হিমুকে বরিশাল শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় থেকে রিলিজ করা হলে ঝালকাঠি থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করে। ঝালকাঠি থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে আটক হিমু তার স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তবে কি কারণে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে তা এখনও প্রকাশ করেনি।

সুরাইয়ার বাবা আসলাম ফরাজী থানায় দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে তিন লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুরি মিলে। এদিকে সোমবার ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে সুরাইয়ার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে ঝালকাঠি থানা পুলিশ। বাদ আছর ঝালকাঠি পৌর মুসলিম কবরস্থানে সুরাইয়ার লাশ দাফন করা হয়।