Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

মহাকাশে আলো ছড়াবে বাংলাদেশি রোবট তথ্য ও প্রযুক্তি

মহাকাশে আলো ছড়াবে বাংলাদেশি রোবট

বিজ্ঞান-প্রযুক্তিবিষয়ক রোবট প্রতিযোগিতায় বিশ্বের কয়েকশ বিজ্ঞানযোদ্ধাকে হার মানিয়ে বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। এর ধারাবাহিকতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ৪র্থ লুনাবোটিক্স মাইনিং প্রতিযোগিতায় রোবট বানিয়ে প্রযুক্তিবিষয়ক সর্বো”চ বিদ্যাপিঠ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছেন।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মহাকাশকেন্দ্র ‘কেনেডি স্পেস সেন্টারে’ ২০১৩ সালের ২০ থেকে ২৪ মে চতুর্থ বার্ষিক লুনাবোটিকস মাইনিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন দেশের সেরা সব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চাঁদে গিয়ে মাটি বা ধুলা সংগ্রহ করতে পারবে- এমন সব রোবটযান নিয়েই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। কাজ ও সামর্থ্যরে দিক থেকে যে রোবটটি বেশি সক্রিয় বা কার্যকর, সেটিই থাকে আয়োজক কর্তৃপক্ষের নজরে। আর এসব রোবট থেকেই যাচাই-বাছাই করে বেছে নেওয়া হয় সেরাটিকে। প্রতিযোগিতার জন্য অর্থাৎ রোবটের কাজের সামর্থ্য যাচাইয়ের জন্য তৈরি করা হয় কৃত্রিম চন্দ্রপৃষ্ঠ। সেখানে রাখা ধুলা তুলে এনে নির্ধারিত জায়গায় ফেলার সামর্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এর সঙ্গে কাজের গতি, কত ওজনের ধুলাবালি নিতে পারে- তাও ছিল বিচারকদের বিবেচনায়।
প্রতিযোগিতার প্রথম পর্বে ১০.৪ কেজি ধুলা সংগ্রহ করে বুয়েট শিক্ষার্থীদের তৈরি মেকাট্রন রোবট টপ টেনে নিজেদের অবস্থান করে নেয়। পরবর্তীতে যান্ত্রিক ক্রটির কারণে প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়নি। কারণ হিসেবে দলনেতা এম এম শায়ক ইবনে ফারুকি বলেন, টেকসাসে স্থানান্তরে খরচ বাবদ বাজেট অতিক্রম করায় আমাদের রোবটিকে আট ভাগে ভেঙ্গে নেয়া হয়। পরবর্তীতে সেখানে গিয়ে আবার জোর লাগালেও তাতে কিছুটা ক্রটি থেকে যায়। এ কারণে প্রতিযোগিতার ৪ মিনিটের সময় চেইন ছিঁড়ে যায়। এ প্রতিযোগিতা থেকে নতুন অভিজ্ঞতা হওয়ায় তারা এবার চেনবিহীন রোবট তৈরি করে রোভার প্রতিযোগিতা অংশ নেওয়ার প্র¯‘তি নিচ্ছেন।
‘ইউরোপিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ’ (ইআরসি) নামে পোল্যান্ডের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। বিজ্ঞানের এই মিলনমেলা আয়োজক ইউরোপের বৃহত্তর মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘রোবোটিক্স ইভেন্ট ইআরসি’।
দুদিনের এ ইভেন্টের মধ্যে আছে ‘আন্তর্জাতিক মঙ্গল রোভার প্রতিযোগিতা’ এবং ‘বিজ্ঞান-প্রযুক্তি প্রদর্শনী’। এতে ইউরোপিয়ান স্পেস ফাউন্ডেশনসহ বড় বড় সব টেকগুরু ইভেন্ট আয়োজন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেদারল্যান্ডস, কানাডা, স্পেন, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, বাংলাদেশ, কলম্বিয়া, ভারত ও মিসর থেকে মোট ৩৪টি দল আন্তর্জাতিক মার্স রোভার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ নেবে। আগামী ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ডে এই প্রতিযোগিতা মাঠে গড়াবে।
বুয়েট থেকে অংশগ্রহণকারী দলের নাম ‘ইন্টারপ্ল্যানেটার্স’। অনুষদের সতের জনের একটি দল এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। তাদের রোভার বালিসংগ্রহ, পাথরসংগ্রহ এবং মাটির গভীরে ছিদ্র করে নমুনা সংগ্রহ করে তথ্য পাঠানোর কাজ করে। বুয়েটের মেকানিক্যাল ও ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২৭ সদস্য মিলে এটি তৈরি করেছে।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর দলের শায়খ, খালেদ, শানু, সিফাত, তুর্য, আরাবি খালেদের পোল্যান্ডের উদ্যেশ্যে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।
দলনেতা বুয়েটের ইলেট্রিক বিভাগের ৪র্থ বর্ষের এসএম শায়খ ইবনে ফারুকি বলেন, ‘আমাদের রোভার মঙ্গলপৃষ্ঠের উপর রণকৌশল নির্ধারণে সক্ষম এবং সব প্রতিক‚ল অবস্থায় সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ইতিমধ্যে আমরা প্রতিযোগিতার দুই ধাপ অতিক্রম করেছি। এখন চ‚ড়ান্ত প্রতিযোগিতার অপেক্ষায়। আমাদের রোভারের ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। বুয়েট বন্ধ থাকায় আমাদের সব কাজ বাইরে মেশিন শপ থেকে করতে হয়েছে। এতে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়ে গেছে। আমরা কিছুটা আর্থিক সংকটে পড়েছি। আমাদের এই বৈজ্ঞানিক বৈপ্লবিক কাজের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি সহযোগিতার আহŸান জানাচ্ছি। এস এম শায়ক ইবনে ফারুকি, বুয়েট মেকানিক্যাল বিভাগ। ০১৭৫১৯৮৯৮৯৮,