ভুয়া ডিগ্রি নিয়ে আম আদমি এবং বিজেপি নেতাদের বিরোধ চরমে আন্তর্জাতিক / 
আম আদমি পার্টির বা আপ নেতা-মন্ত্রীদের পাশাপাশি এবার বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধেও দিল্লিতে ভুয়া ডিগ্রি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এদিকে, শনিবার দিল্লির সাবেক আইনমন্ত্রী জিতেন্দ্র তোমরকে আদালতে পেশ করা হলে তাকে পুনরায় দু’ দিনের জন্য পুলিশ রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ১১ দিনের জন্য রিমান্ড দাবি করা হলেও আদালত দু’দিনের জন্য তা মঞ্জুর করে।
গত ৯ জুন তোমরকে ভুয়া ডিগ্রি মামলায় দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে চার দিনের রিমান্ড দেয়া হয়। তদন্তের জন্য পুলিশ তোমরকে নিয়ে উত্তর প্রদেশের ফৈজাবাদ এবং বিহারের মুঙ্গের ও ভাগলপুরে নিয়ে যায়।
শনিবার আদালতে পুলিশ জানায় আগেকার রিমান্ড পর্যাপ্ত নয়, কারণ তিন হাজার কিলোমিটারের বেশি পাড়ি দিতে তাদের ৪৫ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। এ জন্য ১১ দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।
পুলিশের দাবির বিরোধিতা করে তোমরের আইনজীবী রাজীব খোসলা জানান, ‘পুলিশ আগেই সব জায়গা থেকে নথিপত্র সংগ্রহ করেছে। তোমরের স্বাস্থ্য ঠিক নেই। রিমান্ড বাড়ানোর একমাত্র উদ্দেশ্য তাকে হেনস্থা করা। পুলিশ সম্পূর্ণ পক্ষপাত করছে এবং অন্য কারো ইশারায় কাজ করছে।’
এদিকে, তোমরকে নিয়ে বিবাদ শুরু হওয়ায় আম আদমি পার্টির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির ডিগ্রির অসামঞ্জস্যতা নিয়ে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আপ নেতা সঞ্জয় সিং জানিয়েছেন, ‘আমরা দিল্লি পুলিশের তদন্তাধীন স্মৃতি ইরানি এবং রাম শঙ্কর কাঠোরিয়ার ভুয়া ডিগ্রির মামলাটির ওপর নজর রাখছি। বিচারের দু’টি মাপকাঠি হতে পারে না। ডিগ্রি নিয়ে ওদের বিরুদ্ধে ওঠা অসামঞ্জস্যতার বিষয়টিও আমরা তুলে ধরব।’
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে স্মৃতি ইরানি দিল্লির চাঁদনিচক এবং ২০১৪ সালে আমেথি লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হওয়ার সময় নির্বাচন কমিশনে শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন হলফনামা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশে বলা হয়েছে, হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে প্রার্থীপদ বাতিল হয়ে যেতে পারে।
এদিকে, জিতেন্দ্র তোমরের বিরুদ্ধে ভুয়া ডিগ্রি মামলায় যখন আপ চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে, তখন তাদের আর এক নেতা ও বিধায়ক বিশেষ রবির ডিগ্রি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তিনি ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে দু’রকম হলফনামা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। আসলে কোনটি ঠিক, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে পরস্পরবিরোধী যোগ্যতা দাবি করা নিয়ে অভিযোগ উঠলেও আপ প্রধান কেজরিওয়াল কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে দাবি করেছেন, আপের সাবেক বিধায়ক রাজেশ গর্গ।
বিশেষ রবির আগে আপ বিধায়ক সুরেন্দ্র সিংয়ের বিরুদ্ধেও ভুয়া ডিগ্রির অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি নেতা করণ সিং তম্বরের দাবি, সুরেন্দ্র সিং সিকিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি এ পাস করেননি।বিধায়ক সুরেন্দ্র সিং অবশ্য বিজেপি নেতার দাবিকে মিথ্যা বলে মন্তব্য করেছেন। এ নিয়ে আদালতে থাকা মামলার শুনানি হবে আগামী ১৩ জুলাই। এ সব মিলিয়ে আপ এবং বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের মধ্যে ডিগ্রি বিবাদ নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠেছে।