Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

সদরউদ্দিন ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ মানিকগঞ্জ

সদরউদ্দিন ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ

শিবালয় সদরউদ্দিন ডিগ্রী কলেজ গভর্নিংবডি (এডহক কমিটির)  শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এতে কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সময়মত ভোটার ও প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ না করে নির্বাচনের পায়তারা করছেন নির্বাচন কমিশনার। এমতাবস্থায় সুষ্ঠু এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন প্রার্থীরা।  

অভিযোগে প্রকাশ, শিবালয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খবির উদ্দিন,  ওই নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। গর্ভনিংবডির সদস্য হিসাবে  শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের লক্ষ্যে  ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী ১০ আগস্ট ভোটার তলিকা প্রস্তুত, ১২ ও ১৩  আগস্ট মনোনয়নপত্র বিক্রি, জমা, বাছাই ও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং ২১ আগস্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। অথচ তফসিল ঘোষণা পত্রে ১৭ আগস্ট স্বাক্ষর করে তা সরবরাহ করেন প্রিজাইডিং অফিসার। এরকম হঠকারি কর্মকান্ডে ওই কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি প্রার্থী ও সাধারণ শিক্ষকরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। কলেজের বরখাস্তকৃত, অনিমিয়ত, অন্যত্র চাকুরিরত ও খন্ডকালিন শিক্ষকদেরকেও এই ভোটার তালিকায় অন্তভ’ক্ত করে ইতিপূর্বে তা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ক্ষুদ্ধ শিক্ষকরা ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। এব্যাপারে প্রিজাইডিং অফিসার কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি এমনকি প্রার্থীদের নাম তালিকাও প্রকাশ করেনি। কিভাবে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তার সদুত্তোর  দিতে পারেননি নির্বাচন কমিশনার। অথচ ২১ আগস্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষনা করেন নির্বাচন কমিশনার। ২০ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২ টায়ও প্রার্থী ও ভোটার তালিকা কলেজ নোটিশ বোর্ড বা কোন প্রার্থীর নিকট পৌছায়নি বলে জানা গেছে। 

অপরদিকে কলেজের উঠান, অফিস কক্ষসহ ক্লাসরুমে বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এভাবে তফশিল ঘোষনা করায় শিক্ষকদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। তিনি নির্বাচন বিধি অনুসরণ না করে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের পুরাতন তালিকা ব্যবহার করে তফশিল ঘোষণা করেছেন। প্রতিষ্ঠান প্রধান সকল শ্রেণীর সদস্য পদের জন্য পৃথক, পৃথক খসড়া  ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে বিদ্যমান গর্ভণিং বডি’র অনুমোদনের জন্য সভায় উপস্থাপন করবেন বলে নিয়ম রয়েছে। কিন্তু শিবালয় সদরউদ্দিন ডিগ্রী কলেজের ক্ষেত্রে তা হয়নি। প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খবির উদ্দিন  নিজেই ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শিবালয় সদরউদ্দিন ডিগ্রী কলেজে’র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ.ন.ম বজলুর রশিদ জানান, প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বে নিয়োজিত, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তার নিজ অফিসে তাকে ডেকে নেন। অত্র কলেজের সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ বাসুদেব কুমার দে শিকদারের দেওয়া শিক্ষক/কর্মচারীদের নামের তালিকায় তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করান। যে তালিকায় বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ বাসুদেব কুমার দে শিকদার এর নাম রয়েছে। এ তালিকায় অনেক শিক্ষকের নাম আছে, যারা কোন দিন কলেজে আসেন না এবং অন্য কলেজে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া অনেকেই আছেন কলেজে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনুমোদন নাই এবং সে বিষয়ে পাঠদান করারও সুযোগ নেই।  বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ বাসুদেব কুমার দে শিকদার তার ইচ্ছা মাফিক নিয়োগপত্র/যোগদানপত্র তৈরি করে তাদেরকেও শিক্ষক হিসেবে ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করেছেন। যারা কলেজে অনুপস্থিত, কলেজ থেকে বেতন গ্রহণ করেন না, যাদের নির্ধারিত বিষয়সমুহ পাঠদানের অনুমতি নাই এবং অন্যত্র চাকুরি করেন। তাদের বাদ দিয়ে নির্ভুল হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রনয়ণের অনুরোধ করেন তিনি।  

শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারীরা জানান, প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খবির উদ্দিনের ইতিপূর্বে দেয়া ভোটার তালিকায় কলেজ সভাপতির কোন প্রতিস্বাক্ষর বা অনুমোদন নেই। এ তালিকায় অনেক ভোটারের নাম অর্ন্তভুক্ত আছে, যাদের পরিচয় পাওয়া মুশকিল। যারা দীর্ঘদিন ধরে কলেজে অনুপস্থিত, অন্যত্র চাকুরিরত, কলেজ হতে সাময়িক বরখাস্তকৃত তার নামও এ ভোটার তালিকায় স্থান পেয়েছে। বাস্তবে এটা কোন ভোটার তালিকা নয়, এটা হচ্ছে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের পুরাতন তালিকা। এই তালিকা বাতিল করে হালনাগাদ ভোটার তালিকা তৈরি করে পুণ:তফশিল ঘোষনা করে সুষ্ঠ নির্বাচনের অনুরোধ করেন শিক্ষকরা। 

এব্যপারে প্রিজাইর্ডি অফিসার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খবির উদ্দিনের সাথে  যোগাযোগ করলে তিনি  প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।  
  
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামাল মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, বিধি আনুযায়ীই নির্বাচন হবে। এখানে কারও কোন কথা শুনা হবে না বলে তিনি জানান।