Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

কলেজ ছাত্রীকে হত্যার হুমকী

দেড় বছরের সংসার তবুও মেলেনি স্ত্রীর স্বীকৃতি নারী ও শিশুকুমিল্লা

দেড় বছরের সংসার তবুও মেলেনি স্ত্রীর স্বীকৃতি

কুমিল্লায় স্ত্রীর স্বীকৃতি চাওয়ায় সুমাইয়া খন্দকার বিথী নামে এক কলেজছাত্রীকে প্রাণনাশের হুমকী দেয়া হয়েছে। বিগত দেড় বছর আগে নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকার একটি বাসায় ডা. সাইফুল ইসলাম মজুমদার ওই ছাত্রীর সাথে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ওই বাসা থেকে সাইফুল উধাও হয়ে যায়। সম্প্রতি বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করায় স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে আদালতে মামলা দায়েরের পর থেকে ডা. সাইফুল ও তার লোকজনের হুমকীর মুখে ওই ছাত্রীসহ তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর টমছমব্রীজ এলাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকার জামাল খন্দকারের মেয়ে সুমাইয়া খন্দকার বিথী এসব অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বায়োকেমিষ্ট্রি বিভাগের প্রভাষক ডা. সাইফুল ইসলাম মজুমদারের সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে সুমাইয়া খন্দকার বিথীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে সুমাইয়াকে নিয়ে বাগেরহাটে যায় সাইফুল এবং সেখানে সাইফুলের বন্ধুদের পরিচিত এক কাজীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়। সেখানে স্থানীয় একটি আবাসিক হোটেলে তারা ৪ দিন অবস্থান শেষে কুমিল্লায় ফিরে আসে। পরে নগরীর হাউজিং এস্টেটের ৩নং সেকশনের ‘ফাইজা হাউজ’ নামের একটি বাড়িতে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে আসছিল। গত দেড় বছরে সুমাইয়াকে নিয়ে সাইফুল কুমিল্লা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে আনন্দ ভ্রমণে ঘুরে বেড়িয়েছে। পরবর্তীতে সুমাইয়া স্বামীর বাড়িতে যেতে চাইলে সাইফুল বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে। একপর্যায়ে সাইফুল ওই বাসায় সুমাইয়াকে রেখে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কৌশলে উধাও হয়ে যায়। বিষয়টি সুরাহার জন্য সুমাইয়া ও তার পরিবার সাইফুলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পায়নি। এতে নিরুপায় হয়ে গত ৭ জুন কুমিল্লায় সুমাইয়া নারী ও শিশু অপরাধ দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে ওই মামলা দায়েরের পর সাইফুল ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে গত ৯ জুলাই কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। সুমাইয়া বলেন, গত ৩১ জুলাই আমার বাবাকে তালতলা চৌমুহনী নিয়ে ৫ লাখ টাকায় পুরো বিষয়টি সমাধানসহ মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাদের ভয়ে আমি এখন ঘর থেকে বের হওয়ার সাহস পাচ্ছি না। আমি টাকা-পয়সা চাই না, আমি সাইফুলের স্ত্রী হিসেবে জীবনের বাকী সময়টা কাটাতে চাই। আমি কোনভাবেই তাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না। 

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সুমাইয়ার কলেজের সহপাঠী শাহিনুর রহমান, জোবায়েরুল হক নেপু, আবদুল আসাদ, শাহিন আক্তার মুন্নীসহ তার স্বজনরা। 

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. সাইফুল ইসলাম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, নগরীর হাউজিং এস্টেটে বাসা ভাড়া করে সুমাইয়া থাকতো। আমি মাঝে মাঝে সেখানে যেতাম, কিন্তু তাকে বিয়ে করিনি। বাগেরহাটের বিনোদন স্পটে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের অনেকগুলো ছবি এবং সেখানে আবাসিক হোটেলে অবস্থানের রিসিট রয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে তাঁকে (সাইফুল) ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।