Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

কুমিল্লায় ইয়াসমিন হত্যার রহস্য উন্মোচন কুমিল্লা

কুমিল্লায় ইয়াসমিন হত্যার রহস্য উন্মোচন

মাত্র ৭ দিনের মধ্যেই কুমিল্লা দেবিদ্বারের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী ইয়াসমিন হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে দেবিদ্বার থানা পুলিশ। 
পুলিশ সূত্র জানায়,খুনের ঘটনার বিষয়ে তদন্ত, ভিকটিম ও সন্দেহভাজনদের মোবাইল কল রেকর্ড এর ভিত্তিতে গত ৩ দিনের টানা শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে প্রথমে সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার পাহাড়িয়া এলাকার একটি বাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হত্যাকান্ডের প্রধান সন্দেহভাজন ভিকটিমের চাচাতো ভাই সম্পর্কিত প্রেমিক মো.আলী হামজা(২৬) জামিনা বেগম(৩০) কে।  তার স্বীকারোক্তিমূলক তথ্যের ভিত্তিতে পূর্ব ফতেহাবাদ গ্রামের ভিকটিমের বাড়ী থেকেই গ্রেপ্তরি করা হয় ভিকটিমের আপন ভাই লেবানন প্রবাসী মকবুলের স্ত্রী জামিনা বেগম কে। গ্রেপ্তারের পর আলী অকপটে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ভাবী জামিনা বেগম এবং প্রেমিকা ইয়াসমিনের সাথে তার অবৈধ শারিরীক সম্পর্ক, ভিকটিমের গর্ভবতী হয়ে পড়া এবং অতঃপর গর্ভধারনের বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়ার ভয়ে ভিকটিমের বিয়ের চাপ থেকে বাঁচার জন্য ভাবীর সহায়তায় ভিকটিমকে ভাবীর ঘরে ডেকে এনে গলায় ওড়ানা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়িত্ব স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেও হত্যাকান্ডে নিজের জড়িত থাকার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে আসছিল ভাবী জামিনা বেগম। কিন্তু তাতেও তার শেষ রক্ষা হয়নি। ব্যপক পুলিশী জেরা এবং আলী হামজার মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মুখ খুলতে বাধ্য হয় ভাবী। ভিকটিমকে নিজ ঘরে পা চেপে ধরে রেখে হত্যাকান্ডে এবং পরে লাশ গোপনের উদ্দেশ্যে ধরাধরি করে বাড়ীর পাশে বাঁশ ঝাড়ের কোনায় জলাভূমিতে লাশ ফেলে দিতে আলীকে সহায়তার পুরো ঘটনা খুলে বলে পুলিশকে। 

উল্লেখ্য গত ৩১ জুলাই দিবাগত রাতে খুন হয় মাদ্রাসা ছাত্রী ইয়াসমিন আক্তার। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল ও প্রাথমিক তদন্ত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুমেকে পাঠায়। এদিকে ভিকটিমের ভাই আল আমিন(২৫) বাদী হয়ে আলী হামজা(২৬) কে প্রধান সন্দিহান আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলা করে। 

ময়না তদন্তকালে ভিকটিমের পেটে আনুমানিক ৪/৫ মাস বয়সী ভ্রæনের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি করে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ ধারনা করে প্রেমিক কর্তৃক গর্ভবতী হয়ে পড়ায় এবং বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করায় কাল হয়েছিল ইয়াসমিনের জন্য। পরে পুলিশের ধারনাই সঠিক প্রমানিত হয়। 

থানায় অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলাটি তদন্তে এস.আই মোরশেদুল আলম ভূইয়া ও এস.আই নুরুল ইসলাম মজুমদারদের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করেন। ঘটনাস্থলে প্রকাশ্যে ও গোপন তদন্তে ভিকটিমের মা ও ভাইদের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্য এবং সন্দেহভাজন আলী হামজার মোবাইল কল রেকর্ড এর ভিত্তিতে টানা ৩ দিনের এক শ্বাসরুদ্ধ অভিযান শেষে সফলতার মুখ দেখে তারা।
পুলিশ আরো জানায়, গতকাল আলী হামজা ও জামিনাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।