Opu Hasnat

আজ ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৪,

জবিয়ান অস্তিত্ব আর শেকড়ের সাথে অগ্রগামী হতে চায় শিক্ষামতামত

জবিয়ান অস্তিত্ব আর শেকড়ের সাথে অগ্রগামী হতে চায়

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের সাথে জড়িত যেমন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মান পাশাপাশি গবেষণা, নিত্য নতুন চিন্তা, উদ্ভাবন পদ্ধতি প্রভৃতি। এ সমস্ত বিষয়ের সাথে অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত মানসম্মত শিক্ষক, আধুনিক পঠনপদ্ধতি, পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষকতা।

বিশ্ববিদ্যালয় যেমন জ্ঞান বিতরনের স্থান ঠিক তেমনি আহরণের স্থানও বটে। এই বিতরণ এবং আহরণের সাথে আকর্ষন অবশ্য স্থান, কাল ও অর্থের। এই সমস্ত বিষয় নির্ভর করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ইচ্ছার উপর যার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অর্জন করে সুনিশ্চিত অথচ গ্রহণযোগ্য মান। দেশবিভাগের পূর্বে এই বঙ্গের মেধাবি সন্তানরা যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রাধিকার তালিকায় উপেক্ষিত করে কলকাতার কলেজগুলোকে স্থান দিতো তখনই তা ভৌগোলিক বৈষম্যের স্বীকারে পরিণত হতো তা বলার অপেক্ষা রাখেনা!

পরবর্তীতে অবশ্য আমরা ভিন্ন চিত্র দেখতে পাই তাও ভৌগোলিক গুরত্বের কারণে। এই ভৌগোলিক গুরত্বের কারণেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে ভর্তি তালিকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে গুরুত্ব দেয়, চাকুরীক্ষেত্রে এই অভিপ্রায় শিক্ষকদের মধ্যেও পরীলক্ষিত হচ্ছে। তাছাড়া সুবিশাল আয়তনের উপর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সমস্ত মানদন্ড কখনও নির্ভর করে না। যদি করত তাহলে অন্তত বাংলাদেশের চারটি বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানদন্ডে সেরা দশের তালিকায় অবস্থান করতো।

চার্লস নদীর এপার-ওপার মিলে বেশ বড় পরিসরের ক্যাম্পাস রয়েছে হার্ভার্ডের। বুড়িগঙ্গা নদীর একপাড়ে তো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস রয়েছে অন্যপাড়ে নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন করলে কেন একপাড় থেকে ওঠে যাওয়া লাগবে?

মুক্তচিন্তা, পড়াশুনা, গবেষণার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে প্রয়োজন শ্রেণিকক্ষ, সেমিনার, গ্রন্থাগার। এই সংকট বাংলাদেশের বিশাল আয়তনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও রয়েছে তবে ১০ একরের ছোট্ট ক্যাম্পাসটিতে থাকবে না তা ভাবা নিতান্তই ভুল এবং অমূলক।
তবে এই সমস্যা সমাধানের জন্য বর্তমানের প্রায় ১০ একর জায়গাই যথেষ্ট। অর্থের অপচয় বাঁচবে পাশাপাশি সম্পদেরও। প্রয়োজন শুধু সুষ্ঠ পরিকল্পনা এবং সদিচ্ছা।

তাছাড়া ১০-১৫ কিলোমিটার দূরে হল স্থাপন করলে সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন সরে যেতে হবে তাও স্পষ্ট নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য হল; হলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নয়। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান খাটো করে দেখার মত নয়।

পাঠশালা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, ১৮৫৮ থেকে ২০১৭ সুদীর্ঘ ১৫৯ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী বর্তমান ক্যাম্পাস। মিশে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করার অবদানে, ৫২, ৬২, ৬৬, ৬৯, ৭১, ৯০ সহ বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে। মিশে আছে আমাদের আশার প্রদীপ দেশরত্ন শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে।
আমরা আমাদের অস্তিত্ব, শেকড় উপড়ে ফেলতে চাইনা, আমরা যদি তা করতে চাই, ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না...

লিখেছেন - মোঃ ফজলে রাব্বি, ১০ম ব্যাচ, ইংরেজি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।