Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

রামগড় ও লক্ষ্মীছড়িতে ফের পাহাড় ধসে নিহত ৩ খাগড়াছড়ি

রামগড় ও লক্ষ্মীছড়িতে ফের পাহাড় ধসে নিহত ৩

রাঙ্গামাটিতে ভয়াবহ পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনার শোক কাটতে না কাটতেই খাগড়াছড়ির রামগড়ে পাহাড় ধসে দুই শিশু নিহত হয়েছে। রোববার ভোর ৫টার দিকে রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের বুদুংছড়া গ্র্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মামুন মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, বুদংছড়ার বাসিন্দা মো: মোস্তফা মিয়ার দুই ছেলে মো: নুর হোসেন(১৪) ও মো: নুর নবী(১০) নিহত হয়েছে। এ ছাড়া পাহাড় ধসের ঘটনায় দুই জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক মো: সাইফুল ইসলাম।

রামগড় উপজেলা যুব রেড ক্রিসেন্টের যুব প্রধান মো: করিম শাহ জানান, খবর পেয়ে তাদের টিম জনগনের সহযোগিতায় ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে দুই সহোদরের মূতদেহ উদ্ধার করে।

অপর দিকে প্রবল বর্ষণের ফলে রামগড় পাতাছড়া এলাকায় পাহাড় ধসে খাগড়াছড়ি-ফেনী-ঢাকা সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জালিয়াপাড়ায় খাগড়াছড়ি চট্টগ্রাম মূল সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। রামগড় উপজেলা যুব রেডক্রিসেন্ট ইউনিট সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক করতে কাজ করছে।

এদিকে ল⊃2;ীছড়িতে উঁন চাকমা নামে ৭ বছরের শিশু নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জেলার ল⊃2;ীছড়ি উপজেলায় টানা ভারি বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলে শতাধীক ঘর-বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পাহাড় ধসে যতিন্দ্র কার্বারী পাড়া এলাকায় দেব ব্রত চাকমা(হেঙত্যা চাকমা) ৭বছরের শিশু ইটন চাকমা নিহত হয় বলে জানা গেছে। আহত হয়ছেন দেবব্রত চাকমার স্ত্রী রুপসী চাকমা(৪৫)।

উক্ত গ্রামে অসিম চাকমা জানান, রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঘরের পেছনের পাহাড় ধসে পড়ে। পরিবারের বাকি সদস্যরা নিরাপদে সড়তে পারলেও শিশু ইটন চাকমা রক্ষা পায় নি। এলাকার নিচু জায়গায় প্রায় ঘরগুলো তলিয়ে গেছে। প্রর্বল বর্ষনের কারণে ছড়া ও খালের পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি গ্রাম বিচ্ছিন্ন রয়েছে। রোববার সাপ্তাহিক হাঁটের দিন হলেও বাজারগ্রামী লোকজন আটকা পড়ে। ল⊃2;ীছড়ি জোন এলাকায় ব্রিজ বানরকাটা ব্রিজ তলিয়ে গেলে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। উপজেলা সদর বেলতলী পাড়া, হাইস্কুলের পেছনে ধুরুং পাড়, গুচ্ছ গ্রামের কিছু এলাকা, উপজেলা পরিষদের মাঠের পূর্ব পাশের ৩টিসহ প্রায় ১০টি ঘর তলিয়ে যায়। উপজেলা সদর জামে মসজিদের ভিতর ৫ফুট পর্যন্ত পানি ওঠে। ওই এলাকার ২ফুট থেকে শুরু করে ৪/৫ফুট পর্যন্ত ঘরের মধ্যে পানি ওঠে বলে স্থানীয়রা জানান। ধুরুং এর পানি মুহুর্তের মধ্যে ঘর বাড়িসহ প্রধান রাস্তা তলিয়ে যায়। এসময় ঘর অনেক প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র পানির তোড়ে ভেসে যায়।

ল⊃2;ীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জাহিদ ইকবাল জানান, এলাকার ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করা হচ্ছে। একজন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেন তিনি। এদিকে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টি কমে আসলে পানি কমতে শুরু করেছে বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়। 

অপরদিকে খাগড়াছড়িতে পাহাড়ের পাদদেশ ও ঝুঁকিপূর্ণস্থানে বসবাসকারীদের সরানো শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। পাহাড় ধসের শঙ্কায় শুক্রবার সকাল থেকে জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা অভিযান চালিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসে।

খাগড়াছড়ি সদরের শালবন এলাকায় অভিযান চালানোর সময় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) এলিশ শরমিন জানান, টানা বৃষ্টি ও প্রতি বছর বর্ষায় পাহাড় ধস হওয়ার শঙ্কা থাকায় বর্ষার শুরু থেকে খাগড়াছড়িতে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে আনতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় জেলা সদরের কলাবাগান, ন্যান্সিবাজার, শালবন, হরিনাথ পাড়া, আঠার পরিবার এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের সরিয়ে শালবন এলাকার জেলা প্রশাসনের আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) তারেক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান জানান, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অন্তত ৩০টি পরিবারকে শালবন এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে।