Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

মোরেলগঞ্জে স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল ৪ জয়িতা নারী ও শিশুবাগেরহাট

মোরেলগঞ্জে স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল ৪ জয়িতা

শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য, সফল জননী নারী, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান, অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ৪ জয়িতা আজ নিজ নিজ মহিমায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখতে সক্ষম হয়েছেন।

মনোয়ারা বেগম সফল নারী হিসেবে, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানে রোকেয়া বেগম, শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে  সাফল্য অর্জনকারী নাহিদা আক্তার ও অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন নাজমা আকতার। এই চার জন নারী “জয়িতা অন্বেষনে বাংলাদেশ” এর আওতায় জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন।  

মনোয়রা বেগম সফল জননী নারী হিসেবে জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন। মোরেলগঞ্জ পৌরসভার উত্তর সরালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। মাত্র ২ বছর বয়সে মাকে হারিয়ে সৎ মায়ের সংসারে জ্বালা যন্ত্রনা ভোগ করে এসএসসি পাশ করেন। এসএসসি পাশের পর তার বিয়ে ও পিটিআইতে সফলতার সাথে কৃতকার্য হন ।

পরবর্তীতে সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা হিসেবে যোগদান। স্বামী মো. হাবিবুর রহমান আইন পেশায় নিয়োজিত। তার চার কন্যা। সবাই উচ্চতর ডিগ্রীধারী। ৩ মেয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, এক মেয়ে বেসরকারি সংস্থায় উচ্চপদে কর্মরত। 

রোকেয়া বেগম সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের একজন জয়িতা নারী। পৌরসভার ভাইজোড়া গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের সহধর্মীনি। ১০ শ্রেণীতে পড়াশুনাকালীন আর্থিক অচ্ছলতার কারনে বিয়ে হয়ে যায়। স্বামী সংসারের ঘাত প্রতিঘাত ও  নানা প্রতিকূলতার মাঝে সমাজের অসহায় মানুষ বিশেষ করে অসহায় নারীদের সহযোগীতায় ঝাপিয়ে পড়েন।

যৌতুক, নারী নির্যাতন, বাল্য বিয়ে রোধে তিনি সর্বাগ্রে এগিয়ে যেতেন। আর এভাবেই সমাজ সেবায় অবদান হিসেবে ইউপি সদস্যা, পৌর কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন। 

নাহিদা আক্তার শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারীদের একজন। উপজেলার বারইখালী ইউনিয়নের উত্তর সুতালড়ী গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। স্বামী বেকার । একমাত্র কন্যা তন্বী অসুস্থ।

টানা পোড়েনের সংসারে নিজের আদম্য ইচ্ছায় ২০১২ সারে বিএসএস পাশ করতে সক্ষম হয়। সংসার, বেকার স্বামী, ঘরে অসুস্থ মেয়ে যার প্রতিদিন ঔষধের জন্য ২৫০ টাকা খরচ হয় । এরই মধ্যে তিনি পড়াশনা ও চাকুরী করে সংসারকে কোন মতে সচল রেখে চলেছেন।

তিনি বেসকারি সংস্থা, প্রশিকা, কারিতাস, ওয়ার্ল্ড ভিশনের মাঠ কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে ব্র্যাকের একটি প্রজেক্টে ইউনিয়ন সমন্বয়কারীর দায়িত্বে আছেন।

নাজমা আকতার অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী একজন নারী। মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাদুরতলা গ্রামের বাসিন্দা নাজমা নুন আনতে পনতা ফুরায় পিতার সংসারে মানুষ। আশা ছিল লেখাপড়া শিখে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া। কিন্তু পারিবারিক অচ্ছলতার কারনে এগুতে পারেনি।

নিজের অদম্য ইচ্ছায় এসএসসি পাশ করতে সক্ষম হয়েছে। তাই জীবন জীবিকার প্রয়োজনে দর্জি প্রশিক্ষণ, নকশি কাঁথা সেলাই, এম্বোডারি প্রশিক্ষণ গ্রহন করে মাত্র ৫ শ’ টাকা পূঁিজ নিয়ে শুরু করে ব্যবসা। আর থেকেই সে আস্তে আস্তে সফতার মুখ দেখে এবং অর্থনৈতিকভাবে সফতার অর্জন করতে সক্ষম হয়।