Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

অর্নাসের শিক্ষক নিয়োগের পাঁয়তারা

আ. রউফ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গোপনে কমিটি গঠনের অভিযোগ ঝিনাইদহ

আ. রউফ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গোপনে কমিটি গঠনের অভিযোগ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারের আঃ রউফ ডিগ্রি কলেজে আগামী ১৬-১৭শিক্ষা বর্ষ থেকে অনার্স কোর্স চালুর লক্ষ্যে শিক্ষক নিয়োগের সার্কুলার দেওয়া হয়েছে। বাংলা, সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্র বিজ্ঞান এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স কোর্স খোলার জন্য প্রতিটি বিষয়ে ৫ জন করে শিক্ষক নেওয়া হবে। এই নিয়োগে প্রতিটি শিক্ষকের কাছ থেকে কমপক্ষে ৫লাখ টাকা করে প্রায় কোটি টাকার লেনদেনের জন্য দেন দরবার চলছে। আর এই লেনদেন নির্বিঘ্ন করতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ  পুরাতন কমিটির কয়েকজনের যোগ সাজসে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই কাউকে কিছু না জানিয়ে সম্পূর্ন গোপনে কলেজ গভর্নিং কমিটি গঠন করেছে বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে পুরাতন কমিটির সদস্য এবং শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। 

বিধি মোতাবেক কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩মাস আগেই কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়। তার মধ্যে অভিভাবকদের অবহিত করনের জন্য কলেজের নোটিশ বোর্ডে ও স্থানীয় পত্রিকায় অভিভাবক ও  শিক্ষকদের নির্বাচনী তফশিল ঘোষনা করে প্রচার করা, এবং তা স্থানীয় ভাবে মাইকে প্রচার করা। অভিভাবকদের খসড়া ও  চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রনয়ন। প্রিজাইডিং অফিসার নির্ধারন, প্রার্থীতা চুড়ান্তকরন এবং ভোটের মাধ্যমে অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন করা। কিন্তু এসবের কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে পুরাতন কমিটির দু-এক জন সদস্যকে নিয়ে সভাপতিকে ভুল বুঝিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধের সামিল। 

এ বিষয়ে এলাকার সচেতন মহলের মধ্যে সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে কলেজের অধ্যক্ষ আইয়ুব আলীকে বর্তমানে সাময়িক বহিস্কারে রাখা হয়েছে ।  উপাধ্যক্ষকে  ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব না দিয়ে উদ্দেশ্যমূলক এবং সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত ভাবে সিনিয়ারিটি লংঘন করে জিন্নাত জেসমিন কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর এরপর থেকেই নিয়োগ বানিজ্য, শিক্ষককে লাঞ্চিতসহ বিভিন্ন অপকর্মের জন্ম দিয়েছে এই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। 

২০১৫ সালে দর্শন, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন, গ্রন্থাগারিক ও ডেমনেস্ট্যেটর নিয়োগে ২৬ লাখ টাকা উৎকোচ নেওয়া হয়েছে যার ১১ লাখ টাকা কলেজের প্রাচীর নির্মানে ব্যয় হয়েছে বলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জানিয়েছেন।  বাকি টাকা কোথায় আছে তা তিনি জানেন না। নতুন কমিটি গঠনের ব্যাপারে  সদ্য বিলুপ্ত কমিটির অভিভাবক সদস্য ও ৩নং সাগান্না ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের  সভাপতি আলী হোসেন ভূইয়া জানান, নতুন কমিটির ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। কবে অভিভাবকদের মিটিং হয়েছে, আর কবে কমিটি হয়েছে তা আমি কেন; কোন অভিভাবকই বলতে পারবে না। ২০১৫সালে কলেজে  ৪জন শিক্ষক নিয়োগ কে কেন্দ্র করে আমরা কমিটির চার সদস্য ওই কলেজ কমিটির কার্যক্রম থেকে দীর্ঘদিন বিরত আছি, কারন ওই নিয়োগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দিয়ে সভাপতি ও তার অনুগত ২/৩ জন সদস্য প্রায় ৩০ লাখ টাকার নিয়োগ বানিজ্য করেছে। মেধার যোগ্যতায় শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তৎকালিন সময়ে আমরা  ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রতিবদি জানিয়ে বিরোধিতা করেছিলাম। এই কারনে আমাদের কে এখন বাদ দিয়ে বিএনপি ও জামায়াত থেকে অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন করে সম্পূর্ণ গোপনে নতুন কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে শুনেছি।  আগামীতে অনার্সের শিক্ষক নিয়োগে অর্থ বাণিজ্যে যাতে কোন বিপত্তি না ঘটে সে কারনে এসব করা হচ্ছে। এও শুনেছি এক সময়ের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরের ক্যাডার মানোয়ার হোসেন কে শিক্ষক প্রতিনিধি বানানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জিন্নাত জেসমিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কমিটি গঠনের ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, নিয়ম মেনেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

প্রতিষ্ঠানটি রক্ষা করতে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে গোপনে তৈরী করা এই কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে বিধি মোতাবেক কমিটি গঠনের জোর দাবি  জানান এলাকাবসি।