Opu Hasnat

আজ ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার ২০২৪,

কৃষকরা এ সার ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এ সারের চাহিদা

নড়াইলে বানিজ্যিকভাবে তৈরি হচ্ছে জৈব সার কৃষি সংবাদনড়াইল

নড়াইলে বানিজ্যিকভাবে তৈরি হচ্ছে জৈব সার

নড়াইলে বানিজ্যিকভাবে জৈব সার তৈরি হচ্ছে। নড়াইল পৌর সভার উজিরপুর এলাকায় উজিরপুর অর্গানিক বহুমুখি সমবায় সমিতি নামে একটি কৃষক সংগঠন এ সার তৈরী করছে। তাদের তৈরী ‘চিত্রা জৈব সার’ ইতোমধ্যে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।  কৃষকরা বিভিন্ন ফসলে এ সার ব্যব্যহার করায় মাটির গুনাগুনও বাড়ছে। ভালো ফলনও পাচ্ছেন। পানের বরজ, সবজি, ধানসহ বিভিন্ন ফসলে কৃষকরা এ জৈব সার ব্যবহার করছেন। 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চারটি উপাদানে তৈরী হচ্ছে এ জৈব সার। উপাদানগুলি হলো এজোলা (এক প্রকার শ্যাওলা, যাতে প্রোটিন, ইউরিয়া, এমওপি ও ফসফরাসসহ বিভিন্ন মৌল ও গৌণ উপাদান রয়েছে), অ্যাজোফস (এক প্রকার জিবাণু), ভার্মি কম্পোষ্ট(কেঁচো সার) ও ট্রাইকো ডারমা মিশ্রিত কম্পোস্ট(এর মধ্যে রয়েছে গোবর, কচুরিপানা, কাঠের গুড়া, চা পাতি বর্জ্য, ধানের চিটা, মুরগির বিষ্টা, সরিষার খৈল, হাড়ের গুড়া, গবাদি পশুর সিং-এর গুড়া ও শামুক-ঝিনুকের গুড়া)। এই জৈব সার প্রস্তুত ও  প্যাকেট জাত করতে সময় প্রয়োজন ৪০দিন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, যে কোনো জাতের ধান উৎপাদনের জন্য প্রতি শতকে মাত্র হাফ কেজি, রবি শষ্যের জন্য ১ কেজি ও সবজির জন্য শতকে ২কেজি জৈব সার প্রয়োজন হলেও একই জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয় কয়েকগুন বেশী। প্রথম অবস্থায় এসব জমিতে জৈব সারের পাশাপাশি রাসায়নিক সার সামান্য প্রয়োজন হলেও ৪ থেকে ৫ বছর পরে রাসায়নিক সারের আর প্রয়োজন পড়বে না। তখন জমিতে এই জৈব সার সামান্য ব্যবহার করলেই চলবে। কৃষকের এতে খরচও কমবে এবং জমির উর্বরা শক্তিও বাড়বে। 
সদরের উজিরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, এ বছর ৫০শতক জমিতে রাসায়নিক সার  এবং ৪০ শতক জমিতে জৈব সার ব্যবহার করে পটল উৎপাদন করা হয়। সেখানে জৈব সার ব্যবহার করা জমির ফসল অনেক ভালো এবং খরচও অর্ধেক কম হয়েছে। 
একই গ্রামের কৃষক রজিবুল ইসলাম জানান, তিনি ১ একর জমিতে রাসায়নিক সারের পাশাপাশি এ জৈব সার ব্যবহার করে ভালো ফলাফল পেয়েছেন।
সদরের ভদ্রবিলা গ্রামের শিশির বিশ্বাস জানান, ৪০ শতক জমিতে তার পানের বরজ রয়েছে। এই সার ব্যবহার করে অন্য যে কোনো বছরের তুলনায় ভালো ফলন হয়েছে।
উজিরপুর অর্গানিক বহুমুখি সমবায় সমিতির সাধারন সম্পাদক সাহেদ আলী শান্ত জানান, বর্তমান  প্রতি মাসে ২৫ টন সার তৈরী করা হচ্ছে। কক্সবাজার জেলার চকোরিয়ার এ্যাডভান্স মাল্টি র্ফার্মা লিঃ নামে একটি বেসরকারী সংস্থা প্রতি বছরে ৪শ মেট্রিক টন সার ক্রয় করছে। এছাড়া স্থানীয় কৃষকরা সাড়ে ৩শ একর জমিতে তাদের জমিতে এই সার ব্যবহার করছেন এবং ভালো ফল পাচ্ছেন।      
নড়াইল কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শেখ আমিনুল হক জানান, অতিরিক্ত  রাসায়নিক সার প্রয়োগের ফলে জমিতে জৈব পদার্থ কমে যাচ্ছে। জমিতে ৫ভাগ জৈব পদার্থ থাকার নিয়ম থাকলেও বর্তমানে আছে এক ভাগেরও কম। সেখানে চিত্রা জৈব সার উৎপাদনের উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। স¤প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগ এ সার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একটি ইতিবাচক প্রতিবেদন দেয়ায় কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর উজিরপুর অর্গানিক সমিতিকে বানিজ্যিকভাবে চিত্রা জৈব সার উৎপাদনের জন্য নিবন্ধন দিয়েছেন। ###