সৈয়দপুরে ভরা বর্ষাতেও পানির অভাবে চাই বিক্রি কম, জমিতে সেচ দিয়ে চাষাবাদ নীলফামারী / 
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভরা বর্ষাতেও কাংখিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নদী-নালা ও জমিতে প্রয়োজনীয় পানি নেই। কৃষকরা মৌসুমের আমন আবাদ সেচ দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছেন। আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবন তবুও আকাশের মুষধারে বৃষ্টি হচ্ছে না। ভরা বর্ষাতেও সামান্য বৃষ্টি আর রোদের লুকোচুরি খেলা চলছে। এতে করে এবছর চাই বিক্রি নেই বললেই চলে।
আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এরকমটি হচ্ছে বলে স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। শহরের অদূরে ঢেলাপীর, তারাগঞ্জ, রানীরবন্দর হাট ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমে মাছ ধরার চাই যা স্থানীয় ভাষায় ডাইরকি নিয়ে বসে আছেন বাঁশের তৈরির কারিগররা। নিপুণ হাতের তৈরি এসব চাই বিক্রি হচ্ছে খুবই কম। কারিগররা জানান, চাই তৈরির বাঁশ ক্রয় করে এ কাজে বাড়ির গৃহিণী থেকে শুরু করে ছেলে- মেয়েরাও সহযোগিতা করে। বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে এসব তৈরি করে থাকেন তারা। এসব তৈরিতে প্রকারভেদে খরচ পড়ে ৫০ থেকে ৩শ’ টাকা। আর তা বিক্রি হয় ১শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়। কিন্ত এবছর বর্ষা বিলম্বিত হওয়ার কারণে বিক্রি নেই বললেই চলে।
কারিগররা আরও জানান, এসব তৈরিতে আগের চেয়ে তৈরির খরচও বেড়েছে। ফলে আগের মতো আর লাভ হয়না। এমনিতে নদী- নালা ও জমিতে পর্যাপ্ত পানি নেই। এছাড়া দেশি মাছ মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। ফলে চাই আর আগের মতো বিক্রি হচ্ছে না।
উপজেলার কামারপুকুর, বোতলাগাড়ি, খাতামধুপুর, কাশিরাম বেলপুকুর, বাঙালিপুর ইউনিয়নের জমিতে প্রয়োজনীয় পানি না থাকায় কৃষকরা শ্যালো মেশিন বসিয়ে জমিতে সেচ দিয়ে আমনের চারা লাগাচ্ছেন। সময়মতো আমন চারা রোপন করতে না পারলে ফলন ভালো হবে না এরকম আশংকায় সেচ দিয়ে আমন আবাদ জোরেশোরে চলছে। এবছর সৈয়দপুরে মোট ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।
অপরদিকে বর্ষাতেও পর্যাপ্ত পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না কৃষকারা। পাট কেটে পাটের আঁটি যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে। কেউবা সামান্য পানিতে পাট জাগ দিয়ে চরম বিড়ম্বণায় পড়েছেন। ভরা বর্ষাতেও প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নদী- নালা, খাল-বিলে পাট জাগের প্রয়োজনীয় পানি নেই। পাটের দামের কৃষকের স্বচ্ছলতা নির্ভর করলেও এখানকার কৃষকরা প্রতিবছর পাট জাগ দেয়া নিয়ে পানির সমস্যা আর দাম না পাওয়ায় সোনালী আঁশ নিয়ে সোনালী স্বপ্ন দেখছেন না।
এদিকে মৌসুমের শুরু থেকেই সৈয়দপুরের পল্লীতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু হয়েছে। বিদ্যুতের অভাবে সেচ যন্ত্র চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে কৃষকরা ফসলের জমিতে পরিমিত সেচ দিতে পারছেন না। ঘন ঘন বিদ্যুতের আসা- যাওয়া ও লোডশেডিংয়ের কারণে কেৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বর্ষাতেও গ্রাম এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে সেচযন্ত্রে ঠিকমতো চালাতে পারছেন না কৃষকরা। বিদ্যুতের ভেলকিবাজির কারণে শিক্ষার্থীদেরও লেখাপড়া মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে।