জহিরুল হোসাইন খানের কবিতা ‘ওরা আজ পথের মেয়ে’ শিল্প ও সাহিত্য / 
ওরা আজ পথের মেয়ে
ওরা আজ পথের মেয়ে, সেই পরিচয়ে উঠছে বেড়ে
শহরের ফুটপাতে কিংবা কোন উদ্যানে,
ওরা নানান রঙে নিজেকে রাঙে
ছুটে এখানে ওখানে পুরুষের মনোরঞ্জনে।
ওদের প্রতিটি দিন কাঁটে দু:স্বপ্নের ঘোরে
নিশিতে ওরা সহচর হয়, বিত্তবানের বাহুডোরে,
অনাহূত কিছু অর্থ, খাটায় প্রভুত্ব
বিবেকের কষাঘাতে যদিও অন্তর, হয় ভষ্ম পুড়ে পুড়ে।
ওদের ও শ্রেনী আছে , কিছু বিলাস ভূষণে
উচ্চাশায় রূপ, যৌবন নারীত্ব হারায়,
আবার কেহবা বখাটে সন্ত্রাসীর লালসার শিকার হয়ে
সমাজের অবিচার ও ব্যভিচারে ,ওরা আজ পথে পথেই ঘুরে বেড়ায়।
ক্রমে ক্রমে জন্ম নেয় নিষ্পাপ কত শত আত্মা
নেই কোন পরিচর্যা,অনাদরে উঠছে বেড়ে,
কলি প্রস্ফুটিত না হতেই, ওরা কাতরায় বিষের ছোবলে
অথচ একদিন বিষকেই ওরা করে গ্রাস, দু’বেলা খেতে পেট পুড়ে।
ওরা সমাজের কীট , বলে বিশারদবিদ
ওদের পরশে কত শত যুবক কলিতেই ঝরে,
অথচ সবাই বলে, ওদের আশ্রয় দাও নিরাপদ ছায়াতলে
দু’একজন ব্যাতীত, সবাই পরাভূত, তবুও না সমাজের টনক নড়ে।
ওদের নিয়ে সেমিনার করে,পথে পথে ঘুরে
ভাষনের পর ভাষন, যেন দরদী আপনজন,
অথচ ওদের পেটে ক্ষুদার জ্বালা,ক্ষুদা নিবারণে নেই আয়োজন
পরিবেশ রক্ষা করো বলে, সুশীল সমাজ করে মানব বন্ধন।
ওরা ঘৃণিত, আজ, সমাজ বঞ্চিত
ওদেরও কারো ছিল বাবা, মা, ভাই,বোন বা কোন আশ্রয় ঘর,
যেখানে উঠেছিল বেড়ে,স্নেহ, আদরে, শাসনে
স্মৃতির ভেলায় চড়ে, আজও কাঁদে অনেকরই অন্তর।
ওদের এ পরিণতির জন্য দায়ী কে ?
বাবা,মা, না দুষ্ট চক্রের জালে আবদ্ধ সমাজ ?
যাদের প্রশ্রয়ে সন্ত্রাস বাড়ে, শাসক হয়েও শোষন করে
যারা সমাজের তাজ, প্রভুত্ব খাঁটাতে প্রচন্ড যাদের ঝাঁঝ ?
কে গড়বে, পথের মেয়ে ও শিশুদের একটি সহানুভূতি’র ঘর ?
যার আশ্রয়ে নির্লোভ হবে, সুন্দরী সেই সব মনোহরী,
পেট পুড়ে খাবে, যারা ভাগ্য দোষে আছে বিষের গ্রাসে
নির্লোভ অসহায়, সম্বলহীন, হবে কবে এ সকল অমূল্য নূরী ?