টাঙ্গাইলে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে জন দূর্ভোগ চরমে টাঙ্গাইল / 
ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে চরম গরমে দিশেহারা পৌর এলাকার মানুষ। পৌর এলাকার ৩৮ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) । ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জন জীবন বিপর্যস্ত আর ব্যবসা বাণিজ্যে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। অভিযোগ রয়েছে, নানা অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা । দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যুত বিভাগের একশ্রেনীর অসাধূ কর্মকর্তা কর্মচারি এই জেলায় কর্মরত থাকায় তারা কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দাপটের সাথে নিজেদের ইচ্ছেমতো ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে জন দুর্ভোগ অসহনিয় করে তুলেছে। তবে তাদের জবাবদিহিতা না থাকায় তারা নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শহরবাসী । সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ এই সকল কর্মকর্তার যোগসাজশে মৌসুমী সেচের নাম ভাঙ্গিয়ে টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একই জোটের আর্শীবাদ পুষ্ট কর্মকর্তারা বিভিন্ন কৌশলে ও নানা অজুহাতে চালিয়ে যাচ্ছে সময় জ্ঞানহীন লোডশেডিং। এ ছাড়াও বিদ্যুৎ বিভাগের বেশকিছু অসাধু কর্মকর্তা, মিটার রিডার ও সুইচ অপারেটর শহরের বেশকিছু বিলাশ বহুল মার্কেটে প্রচুর পরিমান বিদ্যুৎ বিতরণ করেও অল্প টাকার বিল দিয়ে মার্কেট মালিকদের কাছ থেকে উতকোচ গ্রহনের অভিযোগ করেন তারা। উতকোচের টাকা আর বিদ্যুত বিতরণের বিলের সমন্বয় রাখতে এই সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর দৌড়াত্মে আর ভৌতিক বিলই বাড়িয়ে তুলছে মানুষের দূর্ভোগ। ব্যবসা বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিদ্যুত নির্ভর সকল কিছুতেই নেমে এনেছে অচলাবস্থা। এসকল কর্মকর্তারা একদিগে যেমন লোডশেডিং বাড়িয়ে দিচ্ছে অপরদিগে বিভিন্ন গ্রাহকদের নিকট হতে ঘুষ নিয়ে অবৈধ ভাবে ডাবল ফিডার বিদ্যুতের সংযোগ দিচ্ছে গ্রাহককে ফলে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের মাত্রা ভোগ করতে হচ্ছে সাধারন গ্রাহকদের। বিদ্যুতের যে কোন সমস্য নিয়ে তাদের সাহায্য চাইলে তাদের অজুহাতের শেষ থাকেনা। বিদ্যুতের লাইন চলে গেলে অথবা লাইনে সমস্যা দেখা দিলে এদের সমস্যা সমাধানে দ্রুত কোন পদক্ষেপ দেখা যায় না। বার বার যোগাযোগ আর ফোন করে সমস্যার সমাধান নিতে হয়। নতুন সংযোগ নেওয়া থেকে শুরু করে বাড়ীর কাছ ঘেষে বিদ্যুতের লাইন ও খুটি সরানোর ক্ষেত্রে অফিসে দরখাস্ত করার পরও এই বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার সহ বেশকিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে টাকা না দিয়ে কাজ করানো যায়না বলেও জানান তারা। এই সকল অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজসেই চলছে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরির মত জঘন্য ঘটনাও। দেশের প্রতিটি জেলায় বিদ্যুতের দিন-রাত মিলিয়ে দুই ঘন্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং চালানোর কথা থাকলেও তা উপেক্ষা করে চালিয়ে যাচ্ছে এই নিয়ম নীতিহীন লোডশেডিং। শহর ও শহরের আশেপাশে দশটি ফিডারের মাধ্যমে ৩৮ হাজার গ্রাহককে দিন ও রাতে টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যুৎ বিতরণ করছে মাত্র ৬ থেকে ৮ ঘন্টা। অসহনিয় গরমে বিদ্যুতের এমন বেপরোয়া লোডশেডিংয়ে আতংকিত ও অসহায় সাধারণ মানুষ। একশ্রেনীর অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা এসব অনিয়ম করার সুযোগ পেয়েছে টাঙ্গাইলে দীর্ঘদিন যাবত কর্মরত থাকার কারনে। তাদের কেউ কেউ এই জেলায় ১০/১২ বছর যাবত চাকুরী করছেন। তারা যতই অনিয়ম করুক কোন এক অদৃশ্য কারনেতাদের অন্যত্র বদলী হয়না। তাদের খুটির জোর কোথায় এ নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের ঘাটতির অজুহাতে যখন তখন লোডশেডিং দেয়ার ফলে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দূর্ভোগ।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহাগীর হোসেন বলেন, ন্যাশনাল গ্রীডে সমস্যা দেখার কারনে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। তবে এটা সাময়িক সমস্যা বলে তিনি জানান। এ ছাড়া টাঙ্গাইল শহর ও আশপাশের এলাকার ৪৩ হাজার ৭শ’৮৭ জন গ্রাহককের মাঝে ৬ টি ফিডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ করা হয়। এই ছয়টি ফিডারে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে প্রায় ১৮ মেগওয়াট আর তার সরবরাহ পাচ্ছে ১২ থেকে ১৩ মেগাওয়াট। এই ঘাড়তি কমিয়ে আনতে ও বিতরণ স্বাভাবিক রাখতে দিন ও রাত মিলিয়ে প্রতিটি ফিডারে ৩ থেকে ৬ বার লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। জাতীয় ভাবে বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি না পাওয়ায় এই সমস্যা জাতীয় ভাবে প্রকট আকার ধারণ করেছে। দেশের প্রায় প্রতিটি স্থানেই এই ভাবে লোডশেডিং চলানো হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।