Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

বাংলাদেশ রবিদাস জাতিগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর গেজেটে অন্তর্ভূক্তির দাবীতে

রবিদাস উন্নয়ন পরিষদের মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ঢাকা

রবিদাস উন্নয়ন পরিষদের মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

আমরা রবিদাসরা নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, প্রথা ও প্রাচীন সমাজব্যবস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত স্বতন্ত্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জাতিগোষ্ঠী যাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন ছিল। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ প্রায় ৮ লক্ষাধিক রবিদাস জনগোষ্ঠীকে মূলস্রোতে নিয়ে এসে দেশ ও জাতির কল্যানকর কাজে অংশীদার করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে আবেদন, স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন, সমাবেশ, আলোচনাসভাসহ সার্বিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছি। গত ৭ই সেপ্টেম্বর ২০১৬ আমরা বিআরডিসি-কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশহিসেবে সারাদেশে জেলায়-উপজেলায় “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন-২০১০” এর তালিকায় রবিদাস জাতিকে অন্তর্ভূক্তির জোর দাবীতে মানববন্ধন, সমাবেশ, মিছিলসহকারে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিপ্রদান করেছি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) সহ স্বীকৃত আদিবাসীর সকল সংজ্ঞানুসারে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী হিসাবে বিবেচনার যে সকল বৈশিষ্ঠ্য আবশ্যিক তার প্রত্যেকটিই রবিদাস জাতির মধ্য বিদ্যমান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তালিকা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যাতীত), আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাস কর্তৃক সুপারিশকৃত, সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের প্রেরিত ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর তালিকা, এশিয়াটিক সোসাইটির গবেষণা থেকে প্রাপ্ততথ্য, শিল্পকলা একাডেমীর ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সেল কর্তৃক প্রকাশিত গবেষণাপত্র, জেলা প্রশাসক কর্তৃক সরবরাহকৃত ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সনদ, বিভিন্ন ধরনের জাতীয় প্রকাশনাসমূহ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ সহ বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন কর্তৃক প্রদানকৃত ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সনদ ইত্যাদিতে রবিদাসদের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী হিসেবে গন্য করা হয়েছে। ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী হতে এমন কোন বৈশিষ্ঠ্য অনুপস্থিত নেই যা রবিদাস জাতির মাঝে কমতি আছে। তবুও রবিদাস জাতিকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসেবে গেজেটে অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে না।

২০১০ সালে চুড়ান্ত হওয়া “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন-২০১০” এর তালিকায় আমাদেরকে রাখা হয়নি। পরবর্তীতে বাদপড়া আদিবাসীদের গেজেটভূক্তির নায্যদাবীর প্রেক্ষিতে সরকার আইনটি সংশোধন করার উদ্যোগ গ্রহন করেছে। আমরা এমন প্রশংসনীয় উদ্যোগের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার পাশাপাশি রবিদাসদের এই সংশোধিত তালিকায় অন্তর্ভূক্তির জোর দাবী জানাচ্ছি প্রতিনিয়ত। সর্বশেষ আমরা খসড়া তালিকা থেকেও বাদ পড়েছি। চলমান সংশোধিত “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন-২০১০” এর তালিকায় রবিদাস জাতিকে অন্তর্ভূক্তির ক্ষেত্রে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার মহলের নিকট আমাদের প্রত্যাশা অনেক। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আমরা রবিদাস জাতিগোষ্ঠীর মানুষও সাধ্যমতো অংশীদার হতে চাই। আমরা প্রত্যাশা করি আগামীকাল (২৫.০৯.২০১৬) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য সভায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর চুড়ান্ত তালিকায় রবিদাস জাতিকে অবশ্যই অন্তর্ভূক্ত করা হবে।

অদ্যই শনিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব এর সম্মুখে বাংলাদেশ রবিদাস উন্নয়ন পরিষদ এর কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে বক্তাগন বক্তব্যে উপরোক্ত এসব কথা বলেন। 

কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রবিদাস উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি দিলিপ রবিদাস। সংগঠনের মহাসচিব ফুঁলচান রবিদাস রতনের পরিচালনায় এ সময় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ ও বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার। 

এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রবিদাস উন্নয়ন পরিষদের উপদেষ্টা আশপুরন রবিদাস, অধ্যাপক নরেশ রবিদাস, ড. বিমল রবিদাস, টিএল রবিদাস রবি, সহ সভাপতি উত্তম রবিদাস, যুগ্ম মহাসচিব সবুরলাল রবিদাস, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক শিপন রবিদাস প্রাণকৃষ্ণ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গৌতম রবিদাস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিলন রবিদাস, কার্যকরী সদস্য ইঞ্জিনিয়ার রবিন রবিদাস, রঘুনাথ রবিদাস, তিলক রবিদাস, রিপন রবিদাস, রতন রবিদাস, সুভাষ রবিদাস, বিমল রবিদাস, হেমেন্দ্র রবিদাস, বুলবুল রবিদাস, বাংলাদেশ রবিদাস ছাত্র পরিষদের সুজন রবিদাস, রমন রবিদাস, শুভ রবিদাস, সুমন রবিদাস, সিমন রবিদাস প্রমুখ। 

এই বিভাগের অন্যান্য খবর