Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

ভিন্ন ধারার ফ্যাশন ডিজাইনার আমির উদ্দিন আহমেদ! লাইফ স্টাইল

ভিন্ন ধারার ফ্যাশন ডিজাইনার আমির উদ্দিন আহমেদ!

অনেকেই যেখানে প্রথাগত  ধারা বা আটপৌরে শৈলীতে নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখে স্বীয় জগৎকে রচনা করে চলেছেন সেখানে বিশ্বায়নের যুগকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন নীরবে নিভৃতে একজন; যিনি মনে করেন সবাই যে পথে চলে, সে পথ মাড়ানো যায় অবলীলায় কিন্তু সে পথে কেন যেতে হবে- যেতে হবে সেই পথে যে পথ বন্ধুর, কন্টকময়,  যে পথের যাত্রী নেহায়েত কম। আর এমন পথে, অর্থাৎ উল্টো রথে চলার মজাই আলাদা।

বলছিলাম একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের কথা, যিনি বাংলার ফ্যাশন ডিজাইনকে নিয়ে যেতে চান বিশ্ব অঙ্গনে, দিতে চান বিশ্বমানের স্তর, তিনি হলেন, আমীর উদ্দিন আহমেদ খোকন। থাকেন প্রবাসে,  তাও প্রায় দেড় যুগ।

মাঝে মধ্যে দেশে আসেন শেকড়ের টানে, মাটির টানে। দেশে এলেই দেশীয় ফ্যাশন জগৎ নিয়ে দৌড় ঝাঁপ শুরু করেন, নিজস্ব কাজ ও  সৃস্টিকে ফ্যাশন প্রেমিদের গোচরে আনার প্রচেষ্টা চালান। কখনও ফ্যশন শো কখনও বা প্রদর্শনী ইত্যাদি। এরই মাঝে ফটোসেশন করেছেন বেশকিছু। 

রক্ষণশীল সৌদিদের বাহ্যিক রূপ যেমন  ঢাকাঢোকা আবার অন্দরমহলে ততোটাই খোলামেলা। পোশাকেও তার কার্পণ্য নেই। এ ক্ষেত্রে পাশ্চাত্যকেও কখনো হার মানায়। আর এমনটি হলে হবে কি সবই তাদের নিজ জাতি নিজ জ্ঞাতিদের জন্য। প্রবাসীদের জন্য আছে কঠিন এবং কঠোর বিধি-নিষেধ। 

http://timetouchnews.com/uploads/news/xtra/

জেদ্দাতে বসে আধুনিক মনস্ক এই ফ্যাশন ডিজাইনার আমীর উদ্দিন আহমেদ খোকন যতই বিশ্বমানের বা অতি নান্দনিক ড্রেসের প্যাটার্ন করুক না কেন তাকে ড্র্যাপিং,  ফটোসেশন কিংবা ফ্যাশন শো থেকে যায় কঠোর নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ।

সেজন্যই বোধকরি দেশের মাটিতে পা রাখতেই খুঁজে চলেন ঐ সকল স্থান, যেখানে শিল্প শুধুই শিল্পের জন্য। এমনিতেই চলার মাঝে প্রতিবন্ধকতার কমতি নেই-  স্বদেশে কিংবা বিদেশে, এবং তা মাথায় নিয়েই এগোতে হয়। বিদেশে আছে নিয়ম-নীতির বেড়াজাল আর দেশে প্রতারিত হওয়ার ভয় এবং অযোগ্য লোকের বেসাতি যত্রতত্র। তবুও স্বপ্ন দেখে চলেন এ উদ্যোমী শিল্পী। একদিন এর অবসান হবে, দেশীয় ফ্যাশন নিজস্ব শক্তিতে বিশ্বমানে রূপ নেবে। এখানে কেউ চুপিসারে কাউকে কপিকরে শুধুমাত্র ব্যবসা সফল হওয়াকে ক্যারিয়ার বলে বিশ্বাস করবে না।

আমীর উদ্দিন আহমেদ- যাঁর ডাক নাম খোকন, যিনি মোটিফ মেকিং,  স্কেচ,  প্যাটার্ন, ড্র্যাপিং, স্টিচিং, এবং ডিজাইন ডেভলপমেন্ট সবই করেন একা। অর্থাৎ যাকে বলে টপ টু বটম  সবই একা করতে পারেন। সে জন্যই বোধকরি যেকোন ডিজাইনারের থেকে তিনি একটু ভিন্ন এবং যে কারোর সমীহের পাত্র।

আক্ষেপ করে তিনি শুধু একটা কথাই বলেন, যেখান থেকে শুরু করি, বছর দু’বছর পর এসে আবারো সেখান থেকেই শুরু করতে হয়।  এমন  কাউকে পেলাম না যিনি আমার অবর্তমানে একাজটিকে এগিয়ে নিতে সহযাত্রী  হবেন। প্রয়োজনে তাঁকে প্রবাস থেকে সার্বিক সহায়তা দিতে আমি প্রস্তুত। 

আমরা জানি, প্রতিভার মূল্যায়ন না হলে প্রতিভার জন্মও হয় না। ফ্যাশন ডিজাইনার আমীর উদ্দিন আহমেদ খোকন তার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু পদকই পেতে পারেন। এরই মধ্যে তিনি জয়ীতা কর্তৃক বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট ও বাবিসাস অ্যাওয়ার্ডসহ কয়েকটি পদকে ভ‚ষিত হয়েছেন। 

এই গুণী মানুষের জন্ম নড়াইল জেলাস্থ লোহাগড়া থানার রামপুরা গ্রামে। তার বাবার নাম মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি ফ্যাশন ইনস্টিটিউট অফ ডিজাইন ঢাকা, বাংলাদেশ থেকে ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর ডিপ্লোমা করেছেন। ভারতের ব্যাঙ্গালোরের এ্যাপারেল অফ লেদার এন্ড টেকনোলজি থেকেও তিনি ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর ডিপ্লোমা করেছেন।

বর্তমানে তিনি সৌদি প্রবাসী। ১৯৯৮ সালে তিনি সৌদি আরব গমন করেন। সেখানে তিনি নিজের ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। নিজের দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার স্বাক্ষর হিসেবে অচিরেই তিনি বাংলাদেশে একটি ফ্যাশন হাউজ খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যা বাস্তবায়নাধীন। তার ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর একাধিক শো’র ব্যবস্থাও তিনি করতে যাচ্ছেন। 

এর আগে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডি দৃক গ্যালারী, শিল্পকলা একাডেমী মঞ্চ, গুলশান লেডিস ক্লাব, বেইলী রোড- মহিলা সমিতি মঞ্চ, সিদ্ধেশরী লেডিস ক্লাব ইত্যাদি মঞ্চে পোশাক প্রদর্শনী করেছেন। 

জেদ্দার বিখ্যাত মার্কেট সুক ওকাজ আদ্দৌলা ও ইমারা জারকাতে অত্যন্ত বিশ্বস্ততা ও পারঙ্গমতার সাথে বিশ্বমানের পোশাকের ডিজাইন ও স্টাইল নিয়ে তিনি কর্মরত আছেন।