Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

ভাতার লড়ায়ে অসহায় মুক্তিযোদ্ধা আলীমুজ্জামান মুক্তিবার্তাফরিদপুর

ভাতার লড়ায়ে অসহায় মুক্তিযোদ্ধা আলীমুজ্জামান

ভাতার লড়ায়ে নেমেছেন অসহায় মুক্তিযোদ্ধা আলীমুজ্জামান মোল্যা। ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা আলীমুজ্জামান মোল্যার ভাতার কার্ডটি এখনও হয়নি। অথচ আমাদের সমাজের অনেকেই আছেন দিব্যি মুক্তিযোদ্ধার সব সুবিধা ভোগ করে চলছেন আর এই সব মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে সাধারন মানুষের মনে। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যদি ঘুষ দিয়ে তার ভাতার কার্ডটি করতে হয় তাহলে এর থেকে দুঃখজনক ঘটনা আর কি হতে পারে আমাদের সমাজের জন্য। মুক্তিযোদ্ধা আলীমুজ্জামান সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের যদুনন্দী গ্রামের মৃত বানু মোল্যার ছেলে। 

জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১৯৭১ এর ১৫ই ডিসেম্বার তিনি যুব শিবির নিয়ন্ত্রন পরিষদে ও ২১শে ডিসেম্বার বাংলাদেশ এ্যাম্বুলেন্স ক্রোপস মুজিবনগর ট্রেনিংয়ে আলীমুজ্জামান যোগদান করেন। তখন তার বয়স ছিলো ২১ বছর। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি ৮নং সেক্টরের নগরকান্দা ব্র্যাকের খন্দকার সামচুল হক যুদ্ধকালীন কমান্ডারের নেতৃত্বে বিভিন্ন যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করে ছিলেন। যুদ্ধকালীন পরবর্তী সময়ে যুব শিবির নিয়ন্ত্রন পরিষদ তাকে পরিচয়পত্র প্রদান করেন। তৎকালীন সময়ে যুব শিবির নিয়ন্ত্রন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মাদ ইউসুফ আলী ও শিবির অধ্যক্ষ ডাঃ এস জামায়েত-উল্ল¬াহ স্বাক্ষরিত একটি পরিচয়পত্র রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ এ্যাম্বুলেন্স ক্রোপস মুজিবনর ট্রেনিং থেকে সনদপত্র প্রদান করা হয়। তৎকালীন এম্বুলেন্স ক্রোপসের চেয়ারম্যান ডাঃ আফতাব উদ্দীন মোল্যার স্বাক্ষরিত একটি প্রমানপত্র ও যুদ্ধকালীন কমান্ডার খন্দকার সামচুল হক স্বাক্ষরিত  একটি সনদপত্র রয়েছে তার কাছে। 

উল্লেখ্য, ১৯৭১ ইং সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী ঢাকা বিভাগের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকায় ২৪৭ নাম্বারে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আলীমুজ্জামান মোল্যার নাম রয়েেেছ। যা বাংলা ১৩৯৩ সালের ১০ই ফাল্গুন দৈনিক জনতা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো। মুক্তিযোদ্ধা আলীমুজ্জমান এ প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে বলেন, সরকার যখন মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার জন্য সকল মুিক্তযোদ্ধাদের কাগজপত্র জমা দেওয়ার ঘোষনা দিলো, তখন আমার কাছে ভাতা করার জন্য কিছু লোক ঘুষ চেয়ে ছিলো, কিন্তু আমি ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় এখনও পর্যন্ত আমার ভাতা হয়নি। আমরা এ দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, ঘুষ দেওয়ার জন্য নয়! এখন আমি মৃত্যুর পথ যাত্রী, আমার শেষ ইচ্ছা মুক্তিযোদ্ধা ভাতার একটি বই। তাহলেই স্বীকৃতি পাব বলে মনে হবে আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মহান মুক্তিযুদ্ধের এই অগ্রগামী সৈনিকের এই চাওয়া টুকু কি বড্ড বেশী বড় আমাদের জন্য পাঠক একটি বার ভেবে দেখলে বড় বেশী ভালো লাগবে। আর যাদের ভেবে দেখা দরকার তারা কি ব্যবস্থা নিবেন এবার সেটাই দেখার পালা সে বেচেঁ থাকতে থাকতে।