Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

বাংলাদেশকে ৬শ’ কোটি ডলার সহযোগিতার আশ্বাস প্রবাস

বাংলাদেশকে ৬শ’ কোটি ডলার সহযোগিতার আশ্বাস

জাপান বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুত ৬শ’ কোটি ডলারের আর্থিক সহায়তার প্রদানের অংশ হিসেবে এ বছর দেড়শ’ কোটি ডলার প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেছে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, ‘আমাদের সরকার বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুত ৬শ’ কোটি ডলার সহযোগিতা প্রদানের অংশ হিসেবে এ বছর দেড়শ’ কোটি ডলার প্রদান করবে।’

জাপানের নাগোয়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী এই সহযোগিতা প্রদানের কথা উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন তিনদিনের সরকারি সফরে জাপানে অবস্থান করছেন। তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র আমন্ত্রণে শিল্পোন্নত দেশসমূহের জি-৭ সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য জাপান আসেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, ইআরডি’র সিনিয়র সচিব মেজবাহউদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

বিফিংয়ে বলা হয়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে পদ্মার পাড়ের চর জানাযাত-এ একটি অত্যাধুনিক বিমানবন্দর তৈরীর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের বিষয়েও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেন। বাসস

এছাড়া, জাপান ২০১৯ সালের মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করে দেয়ার বিষয়েও ত্বড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণেও নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে বলেও ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।

ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয়, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়াবলী বৈঠকে আলোচিত হয়।

বৈঠকে, দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর ২০১৪ সালের জাপান সফরের পর সেই সম্পর্ক একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে।

২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আকাক্সক্ষার সঙ্গে জাপান অতীতের মতই সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলেও এসময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে রুলস অব অরিজিন ভবিষ্যতে আরো শিথিল করার বিষয়েও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন।

শিনজো আবে বাংলাদেশে উন্নত অবকাঠামো বিণির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, মহেশখালীর মাতারবাড়ির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প এবং ঢাকায় চলমান মেট্রোরেল প্রকল্প সেক্ষেত্রে দুটি বৃহৎ পদক্ষেপ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে উন্নত অবকাঠামো নির্মাণের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু সেতুর সঙ্গে রেলসেতু স্থাপন এবং আন্ত:দেশীয় সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ ছাড়াও আরো কয়েকটি বড়ো বড়ো প্রকল্প বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে গতকাল শেষ হওয়া জি-৭ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, আপনার অংশগ্রহণ এবং ভূমিকা জি-৭ নেতৃবৃন্দের পর্যালোচনার মাধ্যমে এই বৈঠকের মূল বিষয়বস্তুু বের করে আনার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিক পালন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি বিনির্মাণে ন্যানো প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ব্লু ইকোনমির জন্য জাপানের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে নীটওয়্যার রপ্তানীর কিছু ক্ষেত্রে রুলস অব অরিজিন শিথিল করায় জাপানে বাংলাদেশের নীটওয়্যাার রপ্তানীর পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে ধন্যবাদ জানান।

পররারাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যেকার এই বৈঠকটি অত্যন্ত উষ্ণ এবং আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ফলপ্রসূ হয়েছে। বৈঠকের ফলাফল আশাতীত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

শহীদুল হক বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে বাস্তবায়নাধীন বিগ-বি প্রকল্পের অগ্রগতি এবং জাপানের এই মেগা প্রকল্পে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।
বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ‘বাইব্যাক অ্যারেঞ্জমেন্টে’র মাধ্যমে জাপানের ব্যবসা ও বিনিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি প্রস্তাবকে পর্যালোচনা করে দেখার জন্যও জাইকা কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে ন্যানো প্রযুক্তি, স্কিল ডেভেলপমেন্ট এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি কিছু নতুন বিষয়েও সহযোগিতার প্রস্তাব করেন।

বৈঠকে গৃহিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক এখন থেকে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীরা জাপানে এ্যারাইভ্যাল ভিসা পাবেন। দুই নেতার বৈঠকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীতে একযোগে কাজ করার বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবার পাশাপাশি জাতিসংঘের প্রয়োজনীয় সংস্কার বিষয়েও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।