Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

রাজাপুরের ছাগল চোর থেকে জ্বীনের বাদশা ও ইউপি চেয়ারম্যান কানা আলম ঝালকাঠিবিশেষ সংবাদ

রাজাপুরের ছাগল চোর থেকে জ্বীনের বাদশা ও ইউপি চেয়ারম্যান কানা আলম

ঢাকাসহ বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে থাকা ছোট ছোট আঞ্চলিক দল বা গোষ্ঠির মধ্যে আঞ্চলিক পর্যায় থেকে সারাদেশে নীরবে জাল বিস্তৃত করেছে শাহ আলম ও তার বাহিনী। জ্বিন হাজিরের নামে বিভিন্ন স্থানে চালিয়েছে প্রতারণা। যিনি এলাকায় “কানা আলম”, “আলম চেয়ারম্যান”, “জ্বীনের বাদশা শাহআলম” নামে পরিচিত। তার প্রতারণার ধরণ এতই বিচিত্র এবং অভিনব যে, সবরকম রোগের চিকিৎসা দেবার ক্ষমতা রাখেন তিনি। এর কবল থেকে এমবিবিএস ডাক্তার, অধ্যাপক, সাধারণ মানুষ কেউই বাদ পড়ে নি।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, খুলনার আলোচিত চরিত্র এরশাদ সিকদারের সাথে যোযোগ ছিল শাহ আলমের। সেই সূত্রেই বাহিনী গঠন, পরিচালনা, দখল, নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক ধারণার তালিম (শিক্ষা) নেন তার কাছ থেকে। ২০০৪ সালে কারাগারে এরশাদ সিকদারের ফাসি কার্যকর হয়ে যাবার পর শাহআলম নিজের মত করে দল গোছাতে শুরু করেন। তার অনেক আগ থেকেই নিজের অবস্থান নীরবে তৈরী করতে থাকে শাহ আলম। ১৯৯৯ সালে রাজাপুরের শুক্তাগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হয়ে যায় সে। মানুষ যখন বড় হতে চায়, বাড়াতে চায় স¤্রাজ্য, ক্ষমতা। তখন তার পেশী শক্তির প্রয়োজন হয়। শাহ আলমও তার অর্থ বিত্ত প্রতারণার ফাদে নিজের পরিধি, ব্যাপ্তি ঠিক রাখতে গ্রামে, জেলা শহরে এমনকি ঢাকাতেও অনুরূপ একটি বাহিনী গড়ে তোলে। যারা তার বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে কাজ করে প্রতিনিয়ত। যেমন বলা যেতে পারে সহযোগী আঃ রব হাওলাদার, সবুজ, কবির, ফারুক, আক্কাস, আলমগীর, দুলাল কৃষ্ণ ওরফে খলিল, সরোয়ারের কথা। শাহ আলম রয়েছে ধরা ছোয়ার একদম বাইরে। তার কাজকর্ম, গতিবিধি, তৎপরতা সবকিছুই পরিকল্পিত। নিজেকে আড়াল করতে তৈরী করেছে এক অতিমানবীয় স্পর্শকাতর কৌশল। অবাক করার দিকটি হচ্ছে শাহআলম নিজেকে অন্ধ হিসেবে সবখানে পরিচয় দেয়। আর এটি প্রতিষ্ঠিত করতে সংগ্রহ করেছে “আই প্যাভিলিয়ন”, “এপোলো হাসপাতাল”, সহ বেশ কয়েকটি ডাক্তারি সার্টিফিকেট। যেটির জন্য সে ঢাকার নামকরা হাসপাতালের চিকিৎসক/পরিচালককে পর্যন্ত ব্যবহার করেছে। “আই প্যাভিলিয়ন” হাসপাতালের নামে ব্যবহার করেছে মন্ত্রীর বাড়ির ঠিকানা। সার্টিফিকেটের ঠিকানা অনুযায়ী ধানমন্ডির ২৫১/এম, রোড-১৩/এ বাড়িটি রয়েছে বর্তমান বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর। কিন্তু এখানে কখনোই আই প্যাভিলিয়ন নামের কোন হাসপাতালের অস্তিত্বই ছিলনা। পাশের একটি ভবনে আই হেল্থ কেয়ার সার্ভিস নামের চক্ষু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অন্ধত্বের আরেক সনদে কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের ঠিকানা উল্লেখ করা আছে। এর বাইরে শাহআলম ভারতের চেন্মাইয়ের “অ্যাপোলো হাসপাতাল” এবং ব্যাংককের “বামরুনগ্রাড ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল” থেকেও সংগ্রহ করেছে সার্টিফিকেট। ই-মেইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে অফিসিয়াললি জানানো হয়, যে ফরমে শাহআলম সার্টিফিকেট ব্যবহার করেছেন তা হাসপাতালের কোন ফরমই না। একজন দৃষ্টিহীন মানুষের এত সনদের প্রয়োজন হয় কেন? আদালতের সহানুভূতি পাবার জন্যই সনদ সংগ্রহের অভিযানে নামে শাহ আলম। 

তার দাবি ১৯৯৯ সালে স্ট্রোক করার পর থেকেই সে আর চোখেই দেখতে পায় না। অন্ধ হবার পরেও তার নামে ৬টি স্পর্শকাতর মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ৩ টি হত্যা মামলা এবং বাকি গুলো প্রতারণার। কিন্তু ইতিমধ্যে শাহআলম কয়েকটি মামলা থেকে পেয়ে গেছে অব্যাহতি। মামলার একেকটির পিছনে রয়েছে একেকটি কাহিনী, একেক রকম যোগসূত্র। রাজাপুরের চরকাঠি পাড়ার মিঠুর পিতা স্কুল শিক্ষক এস্কেন্দার আলী বলেন, ছেলে মিঠুকে বিদেশ পাঠানোর জন্য শাহ আলমের হাতে তুলে দেয় আড়াই লাখ টাকা। মাস যায়, বছর যায় কিন্তু ছেলের আর বিদেশ যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এভাবে অনেকদিন পার হয়ে যাবার পর এক সময় শাহ আলম মিঠুকে ঢাকায় ডেকে নেয়। তারপর থেকে মিঠুর আর কোন খোঁজই পাওয়া যায়নি। শিক্ষক এস্কেন্দার আলী কান্না জড়ি কণ্ঠে বলেন, বনশ্রীতে গিয়ে শাহআলম ও পান্না মোল্লাকে পাই। পাবার পরেই খুব খুশি হয়েছি যে মিঠু এখানে আছে। ছেলের জামা-কাপড়, পাসপোর্ট, ব্রিফকেস সবই শাহআলমের ব্যাগের ভিতরে। এরআগে আমাকে বলেছে ৭ লাখ টাকা দিমু (দিব), আমার সাথে চিটাগাং (চট্টগ্রাম) গেলে তোমার ছেলেরে দিয়ে দিমু। এরকম বহু করেছে। ও এত লোক মারছে যে ওর লগে কেউ পারে না। ভাঙ্গা ঘরে কোন রকমের সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে সাইদুলের মা। একটু সুখের আশায় বিদেশ যাবার জন্য শাহআলমের হাতে ১০ কাঠা জমি বিক্রি করে টাকা তুলে দিয়েছিলেন তিনি। শাহআলম সাইদুলকে আর বিদেশ পাঠায়নি। একসময় তার মা টাকা ফেরত চান শাহ আলমের কাছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাইদুলকেই খুন করে ফেলে সে। সাইদুলের মা এসব কথা অকপটে বলে কান্না জড়ি কণ্ঠে আরো জানান, কানে গুলি দিয়ে মরগে ফেলে রাখে। মরগে গিয়ে টান দিয়ে দেখি সাইদুল। আলমের ডরের চোডে (ভয়ে) মামলা করিনি। শুক্তাগড় থেকে আধা কিলোমিটার দূরের পথ সাতুরিয়া। সে গ্রামের তরুণ বাদলের ইচ্ছে ছিল বিদেশ যাবার। সে জন্য শাহআলমের হাতে ৩৫ হাজার টাকাও তুলে দিয়েছিলেন তার বৃদ্ধ বাবা। কিন্তু শাহআলম বাদলকে বিদেশেও পাঠায় না আর টাকাও ফেরত দেয় না। একসময় বাদলকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে খুন করে ফেলে শাহ আলম। বাদলের বাবার করুণ আর্তনাদে ফুটে উঠেছে ঘটনার ইতিবৃত্ত। ১০ বছর আগের ঘটনা থেকে আজ পর্যন্ত ঠিকমত ঘুমিয়ে দেখিনি বলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন বাদলের বৃদ্ধ বাবা। তিনি আরো বলেন, আমার একটা লোকও নেই যে আমার পিছনে দাড়াবে, এজন্য আমি আর আগাতে পারিনি। উত্তর তারাবুনিয়া গ্রামের উঠতি বয়সের তরুণ, টগবগে যুবক বাবু মোল্লার প্রতি নজর পড়ে শাহ আলমের। বাবু মোল্লা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। তার মত টগবগে তরুণকে নিজের দলে টানার চেষ্টা করে শাহ আলম। কিন্তু ভাবেই রাজি করা না পেরে তাকে ঢাকার মিরপুরে হত্যা করে ড্রামের ভিতর ফেলে রাখে শাহ আলম। গ্রামের গৃহবধুর সম্ভ্রম হানির মত ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। উল্টো নির্যাতিত গৃহবধুর স্বামীকে চুরির মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছে। শাহআলম ও তার বাহিনীর তথ্য এলাকার মানুষের মুখে মুখে। এ যেন ওপেন-সিক্রেট। কিন্তু কেউ তার ভয়ে মুখ খোলেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, শাহআলম ও তার বাহিনী অনেক অপকর্ম করেছে। ওদের নেটওয়ার্ক অনেক শক্ত। আপনাদের সাথে কথা বলেছি, এটাও ওরা জেনে যাবে। এমন আছে রাতে আমাদের মেরেও ফেলতে পারে। তার এ অন্ধত্বের বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন তার হাতে খুন হওয়া বাবু মোল্লার স্ত্রী রুমা বেগম। তিনি বলেন, ও চোখে দেখে সব, পেপার পড়ে, কোরআন শরীফ পড়ে। জেলার সাহেবকে দেখায় যে আমি ভাল মানুষ কোরআন পড়ছি।  শাহআলম এমন এক বাহিনীর প্রধান, যিনি তার নিজের ইচ্ছেমত বুদ্ধি-কৌশল দিয়ে একদিকে একসঙ্গে অনেক মানুষকে জব্দ করে অন্যদিকে গড়ে তুলেছে অর্থ-সম্পদ। ঠান্ডা মাথায় একের পর এক খুনের ঘটনায় ধরা পড়েছে অনেকবার আবার বেরও হয়ে গেছে বীরের মত করে।

শাহ আলমের শুক্তাগড় গ্রামের আলিশান বাড়িতে ড্রয়িং রুমের দেয়ালে সাটানো রয়েছে বড় এলসিটি মনিটর, বিছানার সাথে লাগানো রয়েছে ল্যান্ড ফোন (টেলিফোন) এমনকি টেলিভিশনও। প্রশ্নজাগে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধির প্রয়োজন হয় কানে শোনবার। কিন্তু ২ টি টিভি লাগানোর প্রয়োজন কি? কানা আলমের ঘণিষ্ট ও বিশ্বস্থ অবস্থানে ছিল সবুজ। সবুজের নামে মামলা ছিল ১৫ টি। যিনি শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর রাতে পিরোজপুর উপজেলার কাউখালী কলেজ মাঠে র‌্যাবের সাথে বন্ধুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। 

অনুসন্ধানে আরো জানাগেছে, ডাক্তার এম এ কাসেম ঢাকার একটি নামকরা হাসপাতালের পরিচালক। দিন-রাত সেখানে জটিল স্পর্শকাতর এবং কঠিন সব রোগের চিকিৎসা হয়। ডাক্তার এমএ কাসেমের ছেলেকে নিয়ে দুর্বল দিককে টার্গেট করে তারা। মানুষ যখন অসহায় হয়ে পড়ে তখন তার বিবেক, বুদ্ধি ও সাধারণ জ্ঞান লোপ পেয়ে যায়। ডাক্তার কাসেমেরও তাই হয়েছে। ডাক্তার এবং একটি নামকরা হাসপাতালের পরিচালক হয়েও তিনি বিশ্বাস করেছেন প্রতারককে।  কারণ তার একমাত্র ছেলেটি প্রতিবন্ধি। ডাক্তার এম কাশেমের সাথে মূলত দুলাল কৃষ্ণ পরিচয়ধারী খলিলই পরিচয়ে করিয়ে দেয় শাহ আলমের সাথে। অর্থ উপার্জনের সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করে দেয় খলিল। টার্গেট করেছিলেন ডাক্তার কাসেমকে। মিষ্টি কথা, মিষ্টি খাওয়ানো আর মিষ্টি প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় শাহ আলম। কেবল ডাক্তার কাসেমই একা নন তার মত অনেক উচ্চ শিক্ষিত, মেধাবী মানুষও পড়েছে তাদের প্রতারণার ফাঁদে। ধরা দিয়েছে তাঁদের সাজানো প্রতারণার জালে। যেমন বলা যেতে পারে ঢাকা সিটি কলেজের একজন শিক্ষকের কথা। র‌্যাবের কাছে দেয়া এক লিখিত আবেদনে তিনি বলেছেন শাহ আলম এবং দুলাল কৃষ্ণ ওরফে খলিল তার কাছ থেকে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চিকিৎসা এবং ধাতব মুদ্রার বিনিময়ে অনেক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে এ শিক্ষকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে যাওয়া হয়। একজন শিক্ষক কেমন করে এত টাকার মালিক হয়ে গেলেন? সম্পদের উৎসের ভয়, আবার কোন ঝামেলায় ঝড়িয়ে পড়েন এ দুই ঝামেলার ভয়ে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান। খলিলের মত তার পরিবারের সদস্যরা পাক্কা অভিনেতা। চোখে মুখে ধরা পড়ে অবাক করা গুঞ্জনের বিস্ময়। পরিবারের লোকজন জানায় কৃষ্ণ নাম তো হিন্দুদের তা কি মুসলমানের থাকে, তাও তো জানি না।

শাহ আলমের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় গ্রামে। রাজাপুর জুড়েই রয়েছে জ্বীন বাবার নিজস্ব বাহিনী। গ্রামের মধ্যেই একটি সুন্দর গেট। কিছু দূর পরে রয়েছে আরো একটি গেট। বাড়িটি দেখলে মনে হবে এটি যেন কোন রাষ্ট্রীয় উর্ধ্বতন কর্মকর্তার বাড়ি। গ্রামের ভিতর এমন বাড়ি যে কারোরই নজর কাড়ে। বাইরে দেখে দ্বোতলা মনে হলেও ভিতরে পুরো বাড়িটি তিনতলা। দ্বোতলা থেকে নীচ তলায় নামার এক ধাপে রয়েছে একটি গোপন সিড়ি। এটি এমনই এক সিড়ি, যে সিড়ি দিয়ে অনায়াসে যে কেউ নেমে যেতে পারবে না। তাই প্রশ্ন জাগে গ্রামের ভিতর এমন চাপা সরু সিড়ির দরকার কি? এ বাড়ি নিয়েও আছে লম্বা ইতিহাস। গ্রামের ভিতর মাথা উঁচু করে যে ভবনটি দাড়িয়ে আছে সেটির নীচে রয়েছে অনেক নিরীহ মানুষের দীর্ঘশ্বাস। এ বাগান বাড়ির আশে পাশে বড় অংশ সেই শাহআলম জোর করে দখল করে নিয়েছে। যাদের কাছ থেকে নিয়েছেন তারা তারই প্রতিবেশী, সংখ্যালঘু। তাই গলায় তাঁদের জোর নেই, সাহসও নেই। অনেকটা আচমকাই একজনের সাথে দেখা হলো ওই সমস্ত ভুক্তভোগিদের একজন। অনেক চেষ্টার পর একটু খানি মুললেও তারপরেই বলেছেন জীবনহানির আশঙ্কার কথা। “কথা বললেও থাকা যাবেনা, আমারে বাড়ি বেড় দিয়েছিল একবার ৪০/৫০ জন লোক নিয়া, এলাকাবাসী উদ্ধার করেছে। সে অন্ধ না চোখে দেখে”। 

কেবল প্রতারণা এবং অন্যের জমি দখলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না শাহ আলম। গড়ে তুলেছে একটি নিজস্ব বাহিনী। গড়ে তুলেছে অঢেল সম্পদ, কিন্তু বিপুল অর্থ সম্পদের প্রকাশ্য কোনো উৎস্য খুজে পায়নি সাংবাদিক কিংবা প্রশাসন। আঞ্চলিক বাহিনীর প্রধান শাহ আলম তার বাহিনীর তৈরীর কাজ করে চলেছিল নিরন্তর। প্রদর্শিত কোন অর্জনের সুত্র না থাকার পরও কেমন করে একজন মানুষ ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে বিপুল সম্পদ গড়ে তোলেন? সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে লেবুবুনিয়া বাজারের সততা মোটরস নামের দোকানটি তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। সততা মটরস নামের এ দোকানটি শাহ আলমের। এটি দেখাশুনা করেন তার বাহিনীর দুই সদস্য কবির এবং আলমগীর। কর্মচারী জানান, পরিচালক আলমগীর বরিশালে গেছেন। শাহআলমের রয়েছে একটি ইটের ভাটাও। বর্ষার কারণে ভাটার ইটগুলোর স্তুপ করে রাখা হয়েছে। সেখানে থাকা এক কিশোর জানায়, ইট ভাটার মালিক শাহ আলম চেয়ারম্যান। যিনি ওই স্থানের ¯øুইজ গেট ভবন দখল করে ইটভাটার অফিস এবং গোডাউন তৈরী ব্যবসা করছিল। জানাযায় রাজাপুরের শাহ আলম ভিওআইপি ব্যবসার লাইসেন্সের জন্য বিটিআরসিতে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকাও জমা দিয়েছেন। ঢাকার বনশ্রীতে গড়েছেন ৬ তলা বাড়ি। শাহ আলমের অস্বাভাবিক মুত্যর খবর শুনে ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে স্বস্তি ফিরে  এসেছে।